Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Wednesday 4 December 2013

মহাসড়কে অরক্ষিত দুই হাজার কোটি টাকার পণ্য

সাইদুল ইসলাম
অবরোধের কারণে মহাসড়কে আটকা পড়েছে হাজারখানেক পণ্যবাহী যানবাহন। এসব যানবাহনে রয়েছে আমদানি-রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ বাজারের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার পণ্য। খোলা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান এবং লরিগুলো রয়েছে একেবারে অরক্ষিত অবস্থায়। কোন কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনে আগুন দেয়াসহ ভাংচুর করা হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন মালিকরা।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, গত বৃহস্পতিবার অবরোধ শেষ হবার পর শুক্রবার পণ্যবাহী যানবাহন বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দেয়। কিন্তু হঠাত্ করে শুক্রবার থেকে বিরোধী জোট আবারো অবরোধের ডাক দেয়ায় সেগুলো আটকা পড়ে পথে। এসব পণ্যবাহী যানবাহনে শিল্পের কাঁচামাল যেমন রয়েছে, আবার রপ্তানি পণ্যও রয়েছে। মূলত: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়েকের বিভিন্ন এলাকার বাজারে এবং পেট্রোল পাম্পগুলোতে সারিবদ্ধ লাইনে শতশত পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

ইত্তেফাক প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর, সোনারগাঁও, দাউদকান্দি, চান্দিনা, ক্যান্টনমেন্ট, মিয়াবাজার, চৌদ্দগ্রাম, মোহাম্মদ আলী, মহিপাল, বারৈয়ারহাট, মিঠাছড়া, হাদিফকিরহাট, নিজামপুর কলেজ, বড়দারোগারহাট, সীতাকুন্ড, কর্নেলহাট, কুমিরাসহ বিভিন্ন এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকের সারিবদ্ধ লাইন দেখা গেছে।

শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে নয়, রাজধানীর আশপাশের শিল্পাঞ্চল থেকে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক গত শুক্রবার রওনা হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে আটকে গেছে। এগুলোর অধিকাংশই তৈরি পণ্য।

বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি পরিস্থিতির ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'আমরা কোন ঝুঁকি নিচ্ছি না। অবরোধের কারণে পণ্যবাহী গাড়িগুলো বন্ধ রাখতে বলেছি। পুলিশের পক্ষ থেকে যে নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। এরপরও যাদের পণ্য পাঠানো একেবারে জরুরি তাদের পণ্য পুলিশ প্রহরায় পাঠানো হচ্ছে।'

ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পরিবহন মালিকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, অবরোধের কারণে তাদের গাড়ি রাস্তায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব গাড়ির ঝুকি যেমন রয়েছে, পণ্যেরও ঝুঁকি রয়েছে। গত একমাসে অন্তত: আড়াইশ পণ্যবাহী ট্রাক পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে পণ্যের মালিকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাথে সাথে গাড়ির মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এজন্য গাড়ির মালিকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। একজন পরিবহন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইত্তেফাককে বলেছেন, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে তার ১৮টি পণ্যবাহী গাড়ি চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু এর একটিও চট্টগ্রামে পৌঁছতে পারেনি। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় তার গাড়িগুলো আটকা আছে।

এদিকে অবরোধের কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারের পণ্যবাহী ট্রাকগুলোও মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছে। বিশেষ করে পচনশীল পণ্য নিয়ে যারা শুক্রবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তাদের সব পণ্যই পচে গেছে। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হয়েছেন।

অপরদিকে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে জানা গেছে ভুটান থেকে কমলাবাহী ১৫টি ট্রাক কয়েকদিন ধরে চ্যাংড়াবান্ধা বন্দরে পড়ে আছে। এসব ট্রাক ভুটান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসার কথা। প্রতিটি ট্রাকে ১০ টন করে কমলা রয়েছে। এসব কমলায় ইতিমধ্যে পচন ধরেছে বলে পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে।