Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Wednesday 25 December 2013

সম্পদবিবরণী প্রকাশ বন্ধে অশুভ তৎপরতায় নাগরিকদের ক্ষোভ


সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য লুকানো এবং সম্পদ বিবরণী প্রকাশ বন্ধে নির্বাচন কমিশনের ‘অশুভ তৎপরতার’ সংবাদে নয়জন বিশিষ্ট নাগরিক গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে এ ধরনের আত্মঘাতি ও গণতান্ত্রিক অগ্রগতি প্রতিরোধক তৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
নয়জন বিশিষ্ট নাগরিক আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামার তথ্যে মন্ত্রী-সাংসদদের অনেকেরই অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হওয়ার সংবাদে যখন গণতান্ত্রিক জবাবদিহির সম্ভাবনা সৃষ্টি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, ঠিক তখনই প্রভাবশালী মহলের দাবিতে প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য লুকানো এবং প্রকাশ বন্ধের জন্য নির্বাচন কমিশনের অশুভ তৎপরতার সংবাদে বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলেন, ‘এটি সুস্পষ্ট যে, গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী-সাংসদের এই ব্যাপক সম্পদ আহরণ তাদের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিধায় তা সম্পূর্ণ বেআইনী ও সংবিধানের ২০ (২) ধারা অনুযায়ী অসাংবিধানিক।’ একই সঙ্গে সম্পদ বিবরণী প্রকাশের ফলে যেভাবে তারা বিব্রত ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাতেই এরূপ সম্পদ আহরণের বৈধতা আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হলফনামার তথ্য গোপনীয় দলিল বলে বিশেষমহল থেকে যে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে তা উচ্চ আদালত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সঙ্গে কেবল সাংঘর্ষিকই নয়, বরং প্রার্থীদের আট ধরনের তথ্য জনগণের কাছে উন্মুক্ত করার ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনার পরিপন্থী হওয়ায় তা আদালত অবমাননারও শামিল। অন্যদিকে হলফনামার তথ্যকে আয়কর বিবরণীর সঙ্গে তুলনার প্রয়াসও যুক্তিযুক্ত নয়।
আইনের অপব্যাখ্যা ও ফাঁক-ফোকর দিয়ে যদি প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য প্রকাশ বন্ধ করা হয় তবে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা শুধু যে শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে তা নয়, বরং প্রভাবশালী মহলের কাছে নতি স্বীকার করে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায় সৃষ্টিকারীর দোষে কমিশনকে দোষী হতে হবে বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশনকে আইন-কানুন পরীক্ষার নামে অশুভ তৎপরতা অনতিবিলম্বে বন্ধ করে প্রার্থীদের সম্পর্কে আইনসম্মতভাবে জনগণের জানার অধিকার হরণ করার মতো অগণতান্ত্রিক আচরণ থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের এহেন কার্যক্রম তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় অনতিবিলম্বে তা থেকে সরে আসারও আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে সই করেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, নিজেরা করি-এর সমন্বয়ক খুশী কবীর, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাষ্ট) নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা, প্রিপ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক এ্যারোমা দত্ত এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।