Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Wednesday 25 December 2013

ছিল ২০ একর হয়েছে ২৮৬৫ একর জমি

 
মাহবুবুর রহমান
মাহবুবুর রহমান ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ করেছেন মূলত জমিতে। মাত্র পাঁচ বছরে তাঁর ব্যাংকে টাকা বেড়েছে ৫৮৬ গুণ, জমি বেড়েছে ১৪৩ গুণ এবং বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭৯ গুণ।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী) আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর পাঁচ বছর আগে কৃষিজমি ছিল মাত্র ২০ একর। আর এখন সেই জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে দুই হাজার ৮৬৫ একর। অর্থাৎ এই পাঁচ বছরে তিনি দুই হাজার ৮৪৫ একর জমির মালিক হয়েছেন।
২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে মাহবুবুর রহমানের বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা। এবার তাঁর বার্ষিক আয়ের মধ্যে কেবল মৎস্য উৎপাদন ও বিক্রি থেকেই এসেছে দেড় কোটি টাকা। চাকরি থেকে বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকা। আর তাঁর নির্ভরশীলদের আয় তিন লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

পাঁচ বছর আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাহবুবুর রহমানের জমা টাকা ছিল ৮৩ হাজার ১১২ টাকা। আর স্ত্রীর নামে বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ছিল পাঁচ লাখ টাকা। গাড়ি ছিল দুটি। এ ছাড়া স্বর্ণ ২০ তোলা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এক লাখ টাকা ও আসবাবপত্র এক লাখ টাকার।
মাত্র পাঁচ বছরে সব কিছুই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এখন তাঁর নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাই আছে চার কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮২ টাকা। স্ত্রীর নামে জমা আছে ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৮ টাকা। বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ আছে ১৬ লাখ ১৪ হাজার ৩৪২ টাকা। মাহবুবের ব্যবসায় নিজের পুঁজি ৩৫ লাখ ও স্ত্রীর ৭৬ লাখ ৭১ হাজার।
গেলবার তাঁর কৃষিজমি ছিল ২০ একর। আর অকৃষি জমি (রাজউক থেকে বরাদ্দ) ছিল পাঁচ কাঠা জমি। ১০ শতাংশ জমির ওপর বাড়ির চার ভাগের এক ভাগ ছিল তাঁর। ঋণ ছিল তিন লাখ ২০ হাজার ৩৫২ টাকা।
কিন্তু আলাদিনের চেরাগ দিয়ে পাঁচ বছরেই মাহবুব ২০ একর কৃষি জমি থেকে দুই হাজার ৮৬৫ একর জমির মালিক হয়েছেন তিনি। এবার তাঁর অকৃষি জমির পরিমাণ ৬ কাঠা ১৩ ছটাক। যৌথ মালিকায় ১০ শতাংশ জমির ওপর একটি ও এক একর জমির ওপর আরেকটি বাড়ির চার ভাগের এক ভাগের মালিক তিনি। এবার তাঁর দায় আছে দেড় কোটি টাকা।
মাহবুবের নিজের ও স্ত্রীর মিলে স্বর্ণসহ অলংকারাদি আছে দুই লাখ টাকার। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দুজনের দুই লাখ, আসবাবপত্রও একই, দুই লাখ টাকার। হলফনামায় তিনি বলেছেন, জনৈক বিপুল হাওলাদারের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে নিয়েছেন আরও এক কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে বিষয়বস্তু জানতে চাওয়া হয়। পরে বিষয়বস্তু বলার পর অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়, হলফনামায় যা দেওয়া আছে, তা তো লিখিতভাবে দেওয়া আছে। এ পর্যায়ে নিজেকে মাহবুবুর রহমানের একান্ত সচিব আরিফ বলে পরিচয় দিয়েই লাইন কেটে দেওয়া হয়।
এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন কলাপাড়া প্রতিনিধি