Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 29 December 2013

১/১১'র কুশীলবরা ফের সক্রিয়: প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে এবছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণকালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
অনলাইন ডেস্ক
১/১১'র কুশীলবরা ফের সক্রিয়: প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ছবি
যেসব 'বিশিষ্ট নাগরিক' সরকারকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ১/১১'র কুশীলবরা আবারও সক্রিয় হয়েছে।
 প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আজকের পত্রিকায় দেখেছি-কয়েকজন 'বিশিষ্ট নাগরিক' আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। আমি তাদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। তবে তাদের অনেককেই আমরা ১/১১'র পর দেখেছি এবং তারা এখন আবারও সোচ্চার হয়েছে।"
সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এবছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণকালে একথা বলেন।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমি তাদেরকে একটি কথাই বলতে চাই, তাদের এই চেতনা কেন এতো বিলম্বে জাগ্রত হলো। বিএনপি-জামায়াত চক্র যখন হরতাল দিয়ে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা বন্ধ করে দিল তখন কেন তাদের এই চেতনা জাগ্রত হয়নি। তখন তারা কেন বিরোধী দলকে শিশুদের পরীক্ষার সময় হরতাল না ডাকার পরামর্শ দেননি।"
তিনি বলেন, "বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা তথাকাথিত হরতালের নামে যখন বাসে বোমা মেরে শিশুসহ ঘুমন্ত মানুষ হত্যা করে এবং নির্বিচারে গাছ কাটে ও উপড়ে ফেলে তখন তারা কেন নীরব থাকেন?"
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ ও ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব ফলাফল হস্তান্তর করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, "আসন্ন নির্বাচন একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবার পর 'বিশিষ্ট নাগরিক'রা তা বন্ধ করতে চান। এই মুহূর্তে নির্বাচন বন্ধ হলে আমাদেরকে অসাংবিধানিক পথ বেছে নিতে হবে। আমি জানি না, তারা এ ধরনের একটি অসাংবিধানিক ব্যবস্থা চাচ্ছেন কি-না।"
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দেশে যখন গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার অস্তিত্ব থাকে না এবং অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা হয় তখন এসব বিশিষ্ট নাগরিকরা সক্রিয় হন।"
তিনি বলেন, "ওই সময় এই সব বিশিষ্ট ব্যক্তির কদর বেড়ে যায় এবং তারা পতাকা নিয়ে চলাফেরা করতে পারেন। এটা তাদের (বিশিষ্ট নাগরিক) বিবেচনা। আমি অন্যকিছু কিছু দেখছি না।"
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, "বিশিষ্ট নাগরিকরা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন ও বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম যখন তাণ্ডব চালিয়েছিল এবং পবিত্র কোরআনের হাজার হাজার কপি পুড়িয়ে দিয়েছিল তখন তারা কেন নীরব ছিলেন?"
 
শেখ হাসিনা বলেন, "বিরোধীদলীয় †নেতা যখন তার (প্রধানমন্ত্রী) সংলাপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন, তখন এসব বিশিষ্ট নাগরিকরা কিছুই বলেননি।"
তিনি বলেন, "তখন তাদের চেতনা কেন জাগ্রত হয়নি। তারা সব সময় এমন একটা পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করে, যখন তাদেরকে ডাকা হয় এবং কদর বাড়ে।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বর্তমান সরকার দেশের সব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জন করেছে। তিনি বলেন, জনগণের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। কেননা আমরা তাদের জন্য রাজনীতি করি।"
 
শেখ হাসিনা বলেন, "দেশের মানুষ বিশেষ করে ২০০৭-০৮ সালে 'বিশিষ্ট নাগরিকদের' সরকারের শাসন দেখেছে। তারা দেশ ও জনগণের জন্য কিছুই করেনি।"
জেএসসি- জেডিসি পরীক্ষা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "যাতে করে সকল ছাত্র উচ্চশিক্ষার সমান সুযোগ পায় সেলক্ষ্যে তার সরকার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা প্রবর্তন করেছে।"
এছাড়া শিক্ষকরাও ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপারে আগের চেয়ে বেশি যত্ন নিচ্ছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "শিক্ষা ছাড়া কোনা জাতি তাদের ইপ্সিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না এবং দেশকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।"
জেএসসি ও জেডিসি'র ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, "তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধার বিকাশ ঘটানো এবং তাদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "শিক্ষা ছাড়া কোনা জাতি তাদের ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না এবং দেশকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।"
 
প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধের কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও পরীক্ষা অনুষ্ঠানে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
 
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা ৪ নভেম্বর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের হরতালের কারণে তা ৭ নভেম্বর শুরু হয়। পরীক্ষা শেষ হয় ২২ নভেম্বর।
 
শিক্ষা সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
http://adf.ly/?id=353839