Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Monday 16 December 2013

রেকর্ড ভাঙ্গার রেকর্ডটি এখন বাংলাদেশের

রেকর্ড ভাঙ্গার রেকর্ডটি  এখন বাংলাদেশের


পৌষের সকালে শীতের তেমন দাপট ছিল না। তবে ভোরের আলো ফুটতেই আকাশে উকি মারে রক্ত লাল সহৃর্য্য। ততক্ষনে  রাজধানীর আগারগাঁয়ের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে হাজির আমাদের লাল-সবুজের পতাকার লাল বৃত্তাংশ তৈরির জন্য কিছু মানুষ। এরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্য। প্রায় ৮ হাজার মানুষের অংশগ্রহনের সকাল ১১টার মধ্যে তৈরি হয় আমাদের পতাকার লাল বৃত্ত অংশটি। যা বিশ্বসাবীকে স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ আর রক্তের কথা। ত্রিশ লাখ শহীদের বুকের তাজা রক্তে টানা ৯ মাসের যুদ্ধের বাংলাদেশের একএকটি করে অঞ্চল হয়েছে শত্রু মুক্ত। নয় মাসে ধাপে ধাপে শত্রুমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের সুবজ ভূমির মালিক হয়েছি আমরা বাঙ্গালীরা। একই ভাবে বেলা ১টা ১০ মিনিটের মধ্যে প্যারেড গ্রাইন্ডে সবুজ হয়ে উঠেছে লাল বৃত্তের চারপাশ। তৈরি হয় মানুষের অংশ গ্রহনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাতীয় পতাকাটি। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ২৭ হাজার ১১৭ জন মানুষ তাদের হাতে থাকা লাল-সবুজ রংয়ের প্লেকার্ডটি তারা মাথায় তুলে তৈরি করেন আমাদের জাতীয় পতাকা। ৪২ বছর আগে এই দিনে বাঙ্গালীর বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা পরাজিত করেছিল পাকিস্থানী বাহিনীকে। গতকাল লাখো মানুষের উপস্থিতিতে মাত্র ২৭ হাজার ১১৭ জন মানুষ বিশ্বের বুকে নতুন রেকর্ড করে আবারও পেছনে ঠেলে দিল পাকিস্থানকে। তারা ভেঙ্গে দিল গত অক্টোবরে গড়া পাকিস্থানের রেকর্ডটি। একধিক টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যেমে মানব পতাকা তৈরির ওই রেকর্ড ভাঙ্গার রেকর্ডটি গতকাল উপভোগ করেছিল কোটি বাঙ্গালী।

বিভিল্পু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সর্ব বৃহৎ পতাকা তৈরিতে অংশ নিতে ৪৮টি পথ দিয়ে প্রবেশ করেন এই বিশাল আকৃতির পতাকার মধ্যে। এসময় তারা গেটে রেখে যান তাদের হাতে থাকা বারকোর্ড দেওয়া এক একটি  টোকেন। যার মাধ্যমে গননা করা হয় তাদের সংখ্যা। এসময় ঘোষনা মঞ্চ থেকে জানানো হয় আয়োজনটি রেকর্ড বুকে লিপিবব্দ হওয়ার পর প্রত্যেক অংশ গ্রহনকারী পাবেন রেকর্ডের অংশীদার হিসেবে সনদপত্র। চার বর্গফুটের এক একটি প্লেকার্ড মাথায় তুলে তারা দাঁড়িয়ে থাকে কয়েক ঘন্টা। তৈরি করেন ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৮ বর্গফুটের একটি জাতীয় পতাকা। তবে সকাল ১০টা থেকে প্রায় ২৭ হাজার অংশ গ্রহনকারী তিন ঘন্টা অপেক্ষা করলেও মূল কাজটি ছিল মাত্র পাঁচ মিনিটের। গিনিচ বুক কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী রেকর্ড গড়ার জন্য মানব তৈরি পতাকার স্থায়ীত্ব হতে হবে পাঁচ মিনিট। উদ্দমী মানুষগুলো দেশকে ভালোবেসে, রেকর্ড গড়ার জন্য ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল ৬ মিনিট ১৬ সেকেন্ড। এসময় তাদের মাথার উপর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টল্টারে গিনিচ বুক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা কয়েকটি চক্কর দিয়ে পর্যবেক্ষন করেন আয়োজনটি। এরপর তাদের পক্ষ থেকে  নিযুক্ত একটি আন্তর্জাতিক অডিট ফার্মের কর্মকর্তারা মাইকে ঘোষনা করেন পর্যবেক্ষনের কিছু তথ্য। এরপরই রেজেয়ানা চৌধুরী বন্যার সুরেরধারা’র শিল্পীরা এক সঙ্গে গেয়ে উঠেন জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা, আমি তোমাই ভালোবাসি।

 -জয়দেব দাশ