Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 15 December 2013

ভোট হবে ১৪৯ আসনে

এর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ১২৭ জন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ১৮ জন। এছাড়া জাসদ ৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ২টি এবং জেপির (মঞ্জু) একজন রয়েছেন।
মসিউর রহমান খান/জয়দেব দাশভোট গ্রহণের আগেই ১৫১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন। এখন ৫ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে বাকি ১৪৯ আসনে। অর্ধেক আসনের ভোটাররা ভোট দেওয়ার সুযোগই পাচ্ছেন না। এক নির্বাচনে এত বিপুলসংখ্যক প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
 ভোট হবে ১৪৯ আসনে
রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের অর্ধেকের বেশি আসনসহ রাজবাড়ী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার কোনো আসনেই ভোট হবে না।
 বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা প্রহসন। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া এমন নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠেছে। তারা মনে করেন, এর দায় দেশের প্রধান দুই নেত্রীকে নিতে হবে।
 বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এতজনের বিজয় গণতন্ত্র ও নির্বাচনের জন্য 'আত্মবিধ্বংসী' বলে মনে করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
শনিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৫১টি আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ১২৭ জন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ১৮ জন। নৌকা প্রতীকে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ প্রার্থী তিনটি আসনে এবং ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি আসনে নির্বাচিত হয়েছে। এ ছাড়া জেপির (মঞ্জু) একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
 ইসির হিসাব অনুযায়ী, এর আগে দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিতর্কিত ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগে সর্বোচ্চ ৪৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখনকার বিরোধী দল আওয়ামী লীগসহ জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল।
 এছাড়া ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির বাতিল হওয়া নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের ২৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। অষ্টম সংসদের ওই নির্বাচিতরা আর শপথ গ্রহণের সুযোগ পাননি। বহুল আলোচিত ১/১১-এর মাধ্যমে সেনাসমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই নির্বাচন বাতিল করা হয়।
 এর আগে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সময় ১১ জন, ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সময়ে ১১ জন, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়ে ১৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে একজন প্রার্থীও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হননি।
 দশম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এরই মধ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করা হলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ইতিমধ্যে তারা পেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টিকে ৬০টি আসনে ছাড় দেওয়ার কথা থাকলেও এসব আসনের মধ্যে অনেক স্থানেই জাপা মনোনীতরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
 তবে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা সমকালকে বলেছেন, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েই জাতীয় পার্টি মহাজোট পরিত্যাগ করেছে। তাই জাপা থেকে যারা 'নির্বাচিত' হয়েছেন তাদের মহাজোটভুক্ত মনে করার কোনো কারণ নেই।
 গত ২৫ নভেম্বর ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৫ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। ২ ডিসেম্বর সোমবারের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ১ হাজার ১০৭ প্রার্থী। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ৮৪৭ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ১৩ ডিসেম্বর।
 প্রার্থীদের মধ্যে শনিবার ১৪ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা ১৬ দলের মধ্যে রয়েছে- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফ্রন্ট, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)।