গত রোববার জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সমকাল প্রতিবেদক
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি
জেল
কোড অনুযায়ী একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত
জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় ২৩ ডিসেম্বরের আগে কার্যকরের
সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক।
তবে
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী জানিয়েছেন, নতুন
জেল কোড এখনও কার্যকর হয়নি। অন্যান্য বিধি-বিধান মানবতাবিরোধী অপরাধের
মামলার রায়ে কার্যকর নয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে
কাদের মোল্লার আইনজীবী ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার
আবদুর রাজ্জাক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি
করেন। এর আগে তিনি ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা
করেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, "জেল কোড অনুযয়ী ২৩
ডিসেম্বরের আগে কোনোভাবেই রায় কার্যকরের সুযোগ নেই। পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ার পর
আমরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করব।"
তিনি বলেন, "২৩
তারিখ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে আসামির ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ রয়েছে।
আগামী ২১ বা ২২ তারিখ আমরা কাদের মোল্লার সঙ্গে আবার দেখা করব। তখন তিনি
আমাদের জানাবেন, তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করবেন কি-না।"
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, "তিনি (কাদের মোল্লা) মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।"
তিনি বলেন, "কাদের মোল্লাকে কারাগারে পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শুনানো হয়নি। এতে তার অধিকার খর্ব করা হয়েছে।"
এর
আগে গত রোববার কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ
ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই এ মৃত্যু পরোয়ানার কপি (ডেথ ওয়ারেন্ট) লাল কাপড়ে
মুড়িয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ৫
ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) আপিল বিভাগ থেকে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে দেয়া
মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এ পূর্ণাঙ্গ রায় ৭৯০ পৃষ্ঠার।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে মৃত্যুদণ্ডকেই কাদের মোল্লার জন্য 'একমাত্র যথার্থ শাস্তি' হিসেবে উল্লেখ করেন সুপ্রিম কোর্ট।
এতে
বলা হয়েছে, "কাদের মোল্লার অপরাধসমূহ এতোই পৈশাচিক যে, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া
কোনো সাজাই তার জন্য পর্যাপ্ত নয়। একমাত্র মৃত্যুদণ্ডই তার প্রাপ্য। তার
অপরাধের ফলাফল সমগ্র জাতিকে অনন্তকাল বয়ে বেড়াতে হবে। শুধু বাংলাদেশেই নয়,
বাংলাদেশের বাইরেও তার অপরাধসমূহ নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।"
গত
১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ
বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ওই রায় ঘোষণা করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটি আপিলের প্রথম রায়।
এর
আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রায়ে বলা হয়, "আসামি আবদুল
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনীত ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ
প্রমাণিত হয়েছে।" এর মধ্যে ৩টি অভিযোগে তাকে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড ও দু'টি
অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।