Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Thursday 12 December 2013

নির্বাচনে যাচ্ছে জাপার একাংশ

শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির একটি অংশ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও দলের অন্তত একশ' প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করছেন না। এরশাদ শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনে অনড় থাকলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের নেতৃত্বে লাঙল প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এসব প্রার্থী। এ তৎপরতার সত্যতা স্বীকার করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার।
গত ৩ ডিসেম্বর আকস্মিক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এরশাদ। এরপর সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাও দেন। দলের মন্ত্রীদের সর্বদলীয় সরকার থেকে পদত্যাগ এবং দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন তিনি। এরপর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা আদৌ পদত্যাগ করেছেন কি-না তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। দলের অধিকাংশ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।
এরশাদ দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেও রওশন এরশাদ প্রত্যাহার না করার পাল্টা নির্দেশ দিচ্ছেন। জাতীয় পার্টির ফেনী-৩ আসনের প্রার্থী রিন্টু আনোয়ার সমকালের কাছে এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এরশাদ টেলিফোনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেছেন আবার রওশন এরশাদ নির্বাচনে থাকতে বলেছেন। কী করব জানি না।
এরশাদের ভাই বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদেরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ, রুহুল আমীন হাওলাদার, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মুজিবুল হক চুন্নু এবং সালমা ইসলামসহ প্রায় দুইশ' প্রার্থী এখনও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।
আজ ও আগামীকাল অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন বলে জানান জাতীয় পার্টির এরশাদপন্থিরা। দলটির সূত্র জানায়, দলের পাঁচ মন্ত্রী ও উপদেষ্টাসহ শতাধিক প্রার্থী আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে রওশনের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেন রওশন। সেখানেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
দলের চেয়ারম্যান এরশাদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী কীভাবে লাঙল প্রতীক বরাদ্দ পাবেন_ এ প্রশ্নের জবাবে রওশনের ঘনিষ্ঠ ও ঢাকা মহানগরের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, লাঙল প্রতীক নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। এ মামলার বাদী রওশন এরশাদ। প্রতীক বরাদ্দ দিতে দলের মহাসচিব নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেন। রওশনের নেতৃত্বে রুহুল আমীন হাওলাদারও নির্বাচনে অংশ নিলে লাঙল পাওয়া কঠিন নয় বলে জানান তিনি।
রুহুল আমীন হাওলাদার বিষয়টি সরাসরি স্বীকার না করলেও তিনি সমকালকে বলেন, 'এরশাদের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া আমার জন্য কঠিন।' তবে একটি অংশ বিদ্রোহী হয়ে এরশাদের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে_ এর সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, 'একটি অংশ সম্ভবত ধরে রাখা সম্ভব হবে না। তারা নির্বাচনে যাচ্ছে।' এ তৎপরতায় কে কে আছেন সে বিষয়ে মুখ খোলেননি রুহুল আমীন হাওলাদার।
এরশাদ ও রওশন এরশাদ দুই অংশের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির এক যুগ্ম মহাসচিব সমকালকে জানান, রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির বড় একটি অংশ নির্বাচনে অংশ নেবে। আনিসুল ইসলাম ও জিয়াউদ্দিন বাবলুর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত বলে জানান তিনি। দলের মহাসচিব, মুজিবুল হক চুন্নু ও সালমা ইসলাম এখনও মাঝমাঝি অবস্থানে আছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তারাও নির্বাচনে যেতে পারেন বলে জানান এ নেতা।
জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ২৪৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। ২৬১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। কতজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন তা কেউ জানাতে পারেননি। দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ পারভেজ সমকালকে বলেন, 'জাতীয় পার্টি নির্বাচনে নেই। কে প্রত্যাহার করল, কে নির্বাচন করল তা আমাদের বিষয় নয়।'
-রাজীব আহাম্মদ