Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Thursday 12 December 2013

আদেশের অপেক্ষায় কারা কর্তৃপক্ষ

বৃহস্পতিবার কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট।
সমকাল প্রতিবেদক
আদেশের অপেক্ষায় কারা কর্তৃপক্ষএকাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়রের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
কারা মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা মাঈন উদ্দিন খন্দকার সমকালকে এ কথা জানান।
বৃহস্পতিবার রায় কার্যকর করা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে মাঈন উদ্দিন খন্দকার বলেন, "রায় কার্যকরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পাওয়ার পর রায় কার্যকর করা হবে। এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।"
তিনি জানান, বিকেল সোয়া ৪টায় রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া সংক্ষিপ্ত আদেশ তার হাতে এসেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে আবদুল কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।
আদালত কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ করে আদেশ দেয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, "রিভিউ গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় রায় কার্যকরে এখন আর কোনো বাধা নেই।"
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে করা আবেদন আইন অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য কি-না, সে বিষয়ে  শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা পৌনে ১২টার দিকে।
এর আগে বুধবারও কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে শুনানি হয়।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারা কর্তৃপক্ষ কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়। রাত ১২টা ১ মিনিটে এ ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টায় কাদের মোল্লার করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়। চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তার বাসায় এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। সে অনুসারে বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর রোববার কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই এ মৃত্যু পরোয়ানার কপি (ডেথ ওয়ারেন্ট) লাল কাপড়ে মুড়িয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ থেকে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।
৭৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে মৃত্যুদণ্ডকেই কাদের মোল্লার জন্য 'একমাত্র যথার্থ শাস্তি' হিসেবে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট।
এতে বলা হয়, "কাদের মোল্লার অপরাধসমূহ এতোই পৈশাচিক যে, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া কোনো সাজাই তার জন্য পর্যাপ্ত নয়। একমাত্র মৃত্যুদণ্ডই তার প্রাপ্য। তার অপরাধের ফলাফল সমগ্র জাতিকে অনন্তকাল বয়ে বেড়াতে হবে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বাংলাদেশের বাইরেও তার অপরাধসমূহ নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।"
গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটি আপিলের প্রথম রায়।
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রায়ে বলা হয়, "আসামি আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনীত ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।" এর মধ্যে ৩টি অভিযোগে তাকে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড ও দু'টি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।