Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 15 December 2013

কোম্পানীগঞ্জে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ৫

 
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বশিরহাটে একদিকে সরকারি অফিসে জ্বলছে জামায়াত-শিবির কর্মীদের দেওয়া আগুন। অন্যদিকে জামায়াত-শিবির কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের অ্যাকশন। নিচে গুলিতে নিহত একজনের লাশ। ছবি: ফোকাস বাংলা
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। পুলিশের দাবি, সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। তবে ওই সংঘর্ষ চলাকালে জামায়াত-শিবিরের সাতজন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন শিবিরের নোয়াখালী দক্ষিণ জেলা শাখার সভাপতি জিয়াউল হক। আজ শনিবার উপজেলা সদর বসুরহাট বাজারে বেলা সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সময় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বেলা সোয়া তিনটার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বসুরহাট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা সার্ভার স্টেশনের কাছে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষই গুলি ছুড়লে পুলিশের দুজন কনস্টেবলসহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয় এবং অন্তত ৪০ জন আহত হন।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুর রহমান তিনজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, লাশগুলো থানায় আছে। তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিত্সক রশিদুল হাসান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বিকেলে মতিউর রহমান (১৫) ও সাইফুল ইসলাম (২২) নামের দুই যুবককে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। এর পরেই তাঁদের সঙ্গে আসা লোকজন লাশ দুটি নিয়ে যান।
শিবিরের নোয়াখালী দক্ষিণ জেলা শাখার সভাপতি জিয়াউল হক মুঠোফোনে দাবি করেন, পুলিশের গুলিতে জামায়াত ও শিবিরের সাতজন কর্মী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের লাশ থানায় রয়েছে। তাঁদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া বাকি চারজন হলেন জামায়াত কর্মী রাসেল (৩২), শিবির কর্মী সাইফুল ইসলাম (১৯), মতিউর রহমান (১৭), মো. রায়হান (২২)। এই চারটি লাশ দলীয় কর্মীরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামান জানান, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কার্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিস, পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়, আনসার-ভিডিপি কার্যালয় ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ সময় ওই সব কার্যালয়ের বেশকিছু আসবাব ও মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে যায়।
বসুরহাট পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মোশারফ হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁরা পুলিশের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশের অনুমতি নিয়েছিলেন। কিন্তু মিছিল শুরু করার আগেই পুলিশ বিনা উসকানিতে দলীয় কর্মীদের ওপর গুলি চালায়। এতে সাতজন নিহত ও গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে স্থানী লোকজন জানান, বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে জামায়াত-সমর্থকদের পরিচালিত বসুরহাট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে স্কুলটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। একপর্যায়ে বসুরহাট বাজার ও আশপাশের এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসপি আনিসুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষের সময় জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের গুলিতে কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সফিকুল ইসলামসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
@Prothomalo