Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 15 December 2013

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের মহোৎসব চলছে: বিএনপি

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিপুলসংখ্যক সংসদ সদস্যের বিজয়ী হওয়াকে গণতন্ত্রের জন্য আত্মবিধ্বংসী বলে মনে করছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। আজ শনিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৫০ আসনে একক প্রার্থী নির্বাচনে আছেন বলে জানা গেছে। বিপুলসংখ্যক প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিজয়ের মহোত্সব চলছে। ১৪২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন (সংবাদ সম্মেলন করার সময় পর্যন্ত)। সরকার চাইলে আরও অনেকে বিজয়ী হবেন। এই নির্বাচনকে হাস্যকর এবং প্রহসনের নাটক বলে মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম খান।
এক দিকে এই নির্বাচন হচ্ছে, অন্যদিকে বিএনপি-আওয়ামী লীগ আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, নাটক অনেক সময় মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখনো সময় আছে নির্বাচন, গণতন্ত্র নিয়ে খেলা বন্ধ করুন। নির্বাচন নিয়ে নাটক বন্ধ করুন।’
আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকের সংবাদ সম্মেলন একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে। রায়ের বিষয়ে দলের মহাসচিব বা চেয়ারপারসন বলবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জানান, কাল রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি তাঁরা পাননি। সমাবেশের বদলে থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। তিনি অভিযোগ করেন, গত এক মাসে বিরোধী দলের ৩০০-এর বেশি নেতা-কর্মী নিখোঁজ হয়েছেন। র্যাব-গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরের বরাত দিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে সরকারি জোটের প্রায় সব নেতাই বিজয়ী হয়ে গেছেন। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য মহাজোট থেকে যাদেরকে বিরোধী দল বানানোর চেষ্টা হয়েছিল—সেই জাতীয় পার্টি প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন বর্জন করার পরেও তাদের কোনো কোনো নেতা বিজয়ী হয়ে গেছেন। যাঁরা ইতিপূর্বে জামানত হারিয়েছেন—তাঁরাও বিজয়ী হয়েছেন। এ যেন বিজয়ের মহোত্সব। এ দেশের জনগণ কখনো এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখেনি। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রহসন বর্জন করার ফলে প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের নামে যা হচ্ছে—তা আর যা-ই হোক, নির্বাচন নয়।’
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শুধু তার দল এবং জোটের জন্য আসন বরাদ্দ করেনি—তথাকথিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জন্যও সিট বরাদ্দ করে দিয়েছে। বিশ্বের কোথাও সরকারি দল সম্ভাব্য বিরোধী দলের জন্য আসন বরাদ্দ করে বলে আমাদের জানা নেই। এমন হাস্যকর ঘটনা গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের জন্য শুধু মর্মান্তিক নয়, আত্মবিধ্বংসী। ক্ষমতাসীন সরকারের জন্যও অনিবার্যভাবে এটা আত্মবিধ্বংসী হতে বাধ্য।’
নির্বাচন কমিশনকে ফরমায়েশি কমিশন আখ্যা দিয়ে এই বিএনপির নেতা বলেন, কমিশন এক ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনের নামে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করছে। জনগণ, বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট নাগরিক, সুশীল সমাজ কারোর মতামতকেই আমলে নিচ্ছে না সরকার ও নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক সমঝোতার আগেই তফসিল ঘোষণার কারণে সারা দেশে প্রতিরোধ ও প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে উল্লেখ করে এ জন্য বর্তমান সরকার এবং সরকারের নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেন তিনি।