Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 17 November 2013

ছিল হরতালের পরিকল্পনা, হলো আনন্দ মিছিল

তারেক রহমানের রায়ের পর বগুড়ায় যুবদলের আনন্দ মিছিল। ছবি: সোয়েল রানাবিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের (মানি লন্ডারিং) মামলার রায় ঘোষণার আগে ও পরে বগুড়ায় যাত্রীবাহী বাসে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক, বগুড়া শহরের বনানী-মাটিডালি সড়ক এবং বগুড়ার দ্বিতীয় বাইপাস সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০টি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর ও কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, রায় ঘোষণার আগেই শহরের উপকণ্ঠ মাটিডালি এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে যাত্রীবাহী একটি বিআরটিসি বাসে আগুন দেওয়া হয়। বগুড়া-মোলামগাড়ি সড়কের ঘোড়াধাপ এলাকায় কয়েকটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন বিএনপির ক্ষুব্ধ  নেতা-কর্মীরা।
আদালতের রায়ে তারেক রহমান খালাস পাওয়ার পরও শহরের বনানী-মাটিডালি সড়কের জেলা পুলিশ লাইন ও পলিটেকনিকেল ইনস্টিটিউটের সামনে টিআর ট্রাভেলসের যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় শহরের দ্বিতীয় বাইপাস সড়কের নিশ্চিন্তপুর এবং ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মহাস্থান-বাঘোপাড়া ও গোকুল এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ লোকজন।
তবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন দাবি করেন, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, তারেক রহমান নির্দোষ, অথচ সরকার তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে চেয়েছিল। এটা করা হলে আমরা দলীয়ভাবে হরতালসহ সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখাতাম। রায়ে খালাস পাওয়ায় আমরা আনন্দ মিছিল করেছি, কোনো সহিংসতার সঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই।’
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ সহিদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাটিডালি, ঘোড়াধাপ, পুলিশ লাইনের সামনে, নিশ্চিন্তপুর, গোকুল ও বাঘোপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
এদিকে আদালতের রায় তারেক রহমানের বিপক্ষে যেতে পারে—এমন ধারণায় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আগামীকাল সোমবার হরতালের কর্মসূচির ঘোষণার পূর্বসিদ্ধান্ত ছিল। হরতাল ঘোষণা করতে প্রথম দফায় সকাল ১০টায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
সেখানে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, দুপুর ১২টায় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
কিন্তু ১২টায় দ্বিতীয় দফা সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণার আগে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক রায় দেওয়া হলে তার দাঁতভাঙা জবাব কীভাবে দিতে হয়, সেটা বগুড়া বিএনপির জানা আছে, একটু অপেক্ষা করেন, সবই দেখতে পারবেন।’ এরপর সংবাদ সম্মেলনস্থলে তারেকের খালাস পাওয়ার খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠেন নেতা-কর্মীরা। তাঁরা রাস্তায় নেমে আনন্দ মিছিল করেন। বাদ্যযন্ত্রী দল সঙ্গে নিয়ে বের করা আনন্দ মিছিল থেকে আতশবাজি, পটকা ফোটানো হয়। পথচারী ও রাস্তার পাশের দোকানিদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এদিকে রায় ঘোষণার আগে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের কারও কারও হাতে ব্যাগ ও কার্টন ছিল। কেউ কেউ বলাবলি করেন, ‘তারেক রহমানের কিছু হলে আজ শহরে ককটেল-বৃষ্টি ফুটবে।’ কিন্তু রায়ে তারেক খালাস পাওয়ার পরপরই ওই যুবকদের আচরণ পাল্টে যায়। দ্রুত ব্যাগ ও কার্টন সরিয়ে মিছিলে নেমে ব্যাপক পটকা ফোটাতে থাকেন তাঁরা।