Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Wednesday 6 November 2013

‘টি-টোয়েন্টি’ নিয়ে চিন্তিত মুশফিক

 
মুশফিকুর রহিমটি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা যেন বাংলাদেশ কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না—নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে এমন ধারণারই প্রতিধ্বনি করলেন বাংলাদেশের দলপতি মুশফিকুর রহিম। সেই সঙ্গে আজকের ম্যাচে হারের জন্য তিনি দায়ী করেছেন নিউজিল্যান্ডকে অতিরিক্ত কিছু রান উপহার দেওয়াকে।

ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটে নিজেদের হারিয়ে ফেলার ব্যাপারটা বাংলাদেশের জন্য যেন নিয়মই হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়ানডেতে মোটামুটি সমীহ করার মতো শক্তিতে পরিণত হওয়া গেছে ইতিমধ্যেই। গত দু-একটি টেস্ট সিরিজে পারফরম্যান্সটাও ওই ফরম্যাট ধরে ফেলার মতোই। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এসেই যেন বারবার খেই হারিয়ে ফেলছে বাংলাদেশ। ব্যাপারটি নিয়ে যেন বেশ বিভ্রান্তই পুরো দল। মুশফিক সেটারই প্রতিধ্বনি করলেন সংবাদ সম্মেলনে, ‘টি-টোয়েন্টিতে আমরা এখনো দল হয়ে উঠতে পারিনি। আমাদের অনেক জায়গা আছে উন্নতি করার। সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি। আশা করছি, অদূর ভবিষ্যতে আমরা অনেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলব। আপনি বছরে একটা-দুটো ম্যাচ খেলে এই ফরম্যাটে ভালো কিছু আশা করতে পারেন না। আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না। এই ফরম্যাট নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’

অন্যান্য দলের চেয়ে অনেক কম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারটিও যেন বাংলাদেশের উন্নতির পথে বাধা হিসেবে মনে করেন মুশফিক, ‘আপনি কখনোই আশা করতে পারেন না যে একটা দল চার-পাঁচ মাস পরপর একটা করে ম্যাচ খেলবে আর মাঠে নেমেই জিতে যাবে। এটা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার।
আজকের ম্যাচে পরাজয়ের জন্য নিজেদের বোলিংকেই দায়ী করলেন অধিনায়ক, ‘আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে পারিনি। পাওয়ার প্লেতে অতিরিক্ত রান দিয়ে ফেলেছি। ওরা আমাদের দারুণভাবে আক্রমণ করেছে। আমরা বোলিংয়ে কমপক্ষে ২০টা রান বেশি দিয়েছি। ওদের রানটা যদি ১৮০ হলেও একটা কথা ছিল। এই ফরম্যাটে প্রথম ছয় ওভারে ৮০ রানের মতো দিয়ে ফেললে ফিরে আসাটা খুবই কঠিন হয়।’
এই সিরিজে অনেক প্রাপ্তি দেখছেন মুশফিক। তাঁর মতে, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি দলটা সত্যিকারের একটা দল হয়ে ওঠা। এই সিরিজে কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ওপর চাপ ছিল না। যখন যার ওপর দায়িত্ব বর্তেছে, সে-ই তা পালন করেছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক গর্বভরেই তা জানিয়ে দিলেন সবাইকে, ‘আল্লাহর রহমতে এখন বাংলাদেশ দল আর নির্দিষ্ট কারও ওপর নির্ভরশীল নয়। আমাদের দলে এখন পারফরমারের সংখ্যা অনেক বেশি।’
নিজেদের ব্যাটিংটা দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু মুশফিক তাতে সন্তুষ্ট নন। এমন ব্যাটিং প্রতিদিন করা সম্ভব নয় বলেই বরং জানিয়েছেন মুশফিক। তাঁর ভাবনাটা খুব পরিষ্কার। ‘ধুমধাম’ মেরে খেললেই যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হয় না, সেটাই যেন মনে করিয়ে দিতে চাইলেন তিনি। উদাহরণ টানলেন নিউজিল্যান্ডের, ‘ওদের খেলা দেখুন। ওরা কিন্তু খুব মেরে খেলেনি। বাজে বলগুলোরই ওরা সদ্ব্যবহার করেছে। আমরা পাওয়ার প্লেতে যে ব্যাটিংটা করেছি, সেটা সব সময় করা সম্ভব নয়। আমি কিংবা নাঈম ভাই, আমরা কেউই কিন্তু এভাবে মেরে খেলার ব্যাটসম্যান নই।’
‘লড়াই করে হারা’—আজকের ম্যাচে পরাজয়ের পর এমন কথাতে বরং বিরক্তই মুশফিক, ‘দেখুন, হার হারই। ১০০ রানের  মধ্যে গুটিয়ে গেলেও আমরা হারতাম, ১৫ রানে হেরেও আমরা হেরেছি।’
মুশফিক ও তাঁর দলের এমন ভাবনাটাই আসলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি!