মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিতদের সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য এবং নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের দল বদলের
সুযোগ রেখে 'রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০১৩' গতকাল সোমবার সংসদে পাস হয়েছে। মাগরিবের বিরতির
পরে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বিলটি উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন বিলটি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপিত হয়। এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তা আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। ২৭ অক্টোবর কমিটি আইনটি সংশোধনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন
উত্থাপন করে।
বিলে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা সম্পর্কিত ১২/জে ধারা বাতিলের সুপারিশ করা হয়। এ ধারায় বলা ছিল, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকে পূর্ববর্তী তিন বছরে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলে নিরবছিন্ন সদস্যপদ না থাকলে কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। নতুন নিবন্ধিত দলের প্রার্থীদের জন্য অবশ্য এ বিধান প্রযোজ্য নয়। এ ধারাটি বাতিল হওয়ায় এখন সরকারি কর্মকর্তা ব্যতিত যে কোনো ব্যক্তি কোনো দলের সদস্য না হলেও সেই দল থেকে প্রার্থী হতে পারবেন।
১২ ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে দ িত হলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হবেন। ৪৪ই ধারায় বলা হয়, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন সরকারের যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বদলির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাতে পারবে এবং কর্তৃপক্ষ যত দ্রুত সম্ভব তা কার্যকর করবে।
১৩ ধারায় প্রার্থীর জামানতের টাকা দশ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়। এ টাকা নগদ, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার অথবা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। ১৬ ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়, কোনো একটি আসনে একটি দল থেকে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিনের মধ্যে দল কর্তৃক লিখিতভাবে একজন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্যানেলের অন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
বিলে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ১৫ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। ৪৪ সিসিসি ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে দলীয় প্রধানের যে ব্যয় হবে, তা নির্বাচনী ব্যয় হিসেবে বিবেচিত হবে না। ৯০/এফ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের তহবিলে এক ব্যক্তি অনুদান হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা এবং প্রতিষ্ঠান ২৫ লাখ টাকা দিতে পারবে। বিদ্যমান আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ এবং প্রতিষ্ঠান ২৫ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দিতে পারে।
- সমকাল প্রতিবেদক