Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Tuesday 29 October 2013

হোয়াইটওয়াশ; প্রত্যাশার চাপ নয় ভালো করার প্রেরণা


-নাজমুল হক নোবেল
চুপিসারেই বাগদানের কাজটা সেরেছিলেন মুশফিকুর রহিম; কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বলে কথা! চাইলেই কি গোপন রাখা যায়! গতকাল তাকে অভিনন্দন জানাতেই লজ্জামেশানো হাসিতে ধন্যবাদ দিলেন তিনি। অধিনায়কের নতুন জীবন নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে একটা খুশির আবহ বইছে। অধিনায়ক নিজেও অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তার রাশভারি চেহারাটা ছিল না। এমনকি এক সাংবাদিককে মোবাইলে গান বেজে ওঠা নিয়ে কিছুটা কৌতুক করলেন। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে আরও একটা সুখস্মৃতি ঘুরছে বাংলাদেশ শিবিরে। তিন বছর আগে কিউইদের ৪-০-তে বাংলাওয়াশের মধুর স্মৃতি নিয়ে আজ মাঠে নামবে তারা।
ওয়ানডে সিরিজের আগে ওই স্মৃতি তাদের মনোজগতে ভালোই প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন মুশফিক, 'অবশ্যই একটা প্রভাব তো থাকবেই। এই যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা এত বড় একটি দল হওয়ার পরও তাদের বিপক্ষে মাঠে নামার সময় সবার মনে কাজ করে যে, তারা 'চোক' করে। কিউইদের বিপক্ষে আমরা তিন বছর পর খেলছি। এরপরও শুধু আমাদের মনে নয়, তাদের চিন্তায়ও থাকবে যে, শেষবার তারা আমাদের কাছে হেরেছিল। আর হারটাও সামান্য ব্যবধানে নয়, একেবারে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। সেদিক থেকে বললে অবশ্যই আমরা বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামব। বাস্তব অর্থে বলতে গেলে, গত তিন বছরে তাদের দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের দলেও পরিণত ক্রিকেটার আগের চেয়ে বেড়েছে। সার্বিকভাবে বলতে গেলে, নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। তাই আগের স্মৃতি, এমনকি সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজের কথা মাথায় রেখেও লাভ নেই। নতুন সিরিজে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।' তিন বছর আগে ৪-০ ব্যবধান হলেও এবার কেমন হবে? প্রশ্নটার উত্তর মুশফিক দিলেন বেশ কৌশলী ভঙ্গিতে, 'প্রতিটি ম্যাচই আমরা জেতার জন্য মাঠে নামি। যদি ৩-০-তে সিরিজটা জিততে পারি, তাহলে তো খুবই খুশি হবো। এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালো একটি সূচনা। কালকের ম্যাচটা যদি আমরা জিততে পারি, তখন চেষ্টা করব সিরিজটা নিশ্চিত করতে। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে, আমরা অনেক দিন পর ওয়ানডে খেলছি। তাই শুরুটা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।'
৪-০ ব্যবধানের সুখস্মৃতি ছাড়াও বাংলাদেশের অনুপ্রেরণার বিষয় আছে বলে মনে করছেন মুশফিক, 'তিন-চার বছর আগের ঘটনা হলেও আমাদের জন্য ওই স্মৃতি অবশ্যই একটি বাড়তি অনুপ্রেরণা। তবে নিজেদের মাটিতে ওয়ানডেতে অবশ্যই আমরা একটি শক্তিশালী দল। যদি তিন বিভাগেই আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু হবে।' ড্র হওয়া টেস্ট সিরিজও অনুপ্রেরণা দিচ্ছে তাদের, 'টেস্ট সিরিজে দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে আমাদের অনেক প্রাপ্তি আছে। সেদিক থেকে সবাই ভালো খেলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।' অবশ্য ওই হোয়াইটওয়াশ বাড়তি চাপ হিসেবেও দেখা দিতে পারে। একবার যেহেতু নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করা সম্ভব হয়েছে, তাহলে আবার নয় কেন? স্বভাবতই এ দেশের ক্রিকেটপাগল মানুষের আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা এ সিরিজকে ঘিরে। মুশফিক অবশ্য একে চাপ হিসেবে দেখতে নারাজ_ 'চাপ ঠিক নয়। আগের থেকে আমাদের ওয়ানডে স্কোয়াড অনেক ব্যালান্স। আমাদের দলে এখন পারফর্মারের সংখ্যা অনেক বেশি। কাজেই সেদিক থেকে বললে চাপ থাকলেও একটা বিশ্বাস আছে যে, দলের প্রয়োজনে কেউ না কেউ দাঁড়িয়ে যাবে। ওয়ানডে সিরিজে তাদের হারানো কঠিন কিছু নয়। সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে অবশ্য তা সম্ভব।' আর হোয়াইটওয়াশের প্রতিশোধ নিতে কিউইরাও যে প্রবল বিক্রমে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেটাও মাথায় আছে মুশফিকের_ 'হোয়াইটওয়াশের ব্যাপারটা তাদের মাথায়ও থাকবে। তাই তারাও তাদের শক্তির পুরোটাই ঢেলে দিতে চাইবে। ভুলে গেলে চলবে না, নিউজিল্যান্ড খুবই শক্তিশালী ও ভীষণ পেশাদার একটি দল।'