Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Wednesday 29 January 2014

বাংলা পঞ্জিকার সংশোধন ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বর্ষপঞ্জি

অজয় রায়
পৌষ মাস হলো পিঠে-পুলি খাওয়ার মাস। কিছুদিন আগে হেমন্তের হিমেল মাস অগ্রহায়ণে নতুন চালের গন্ধে চারদিকের বাতাস কেমন ম-ম করে। পৌষ মাস ধরে আমাদের বাসায় চলত পিঠে তৈরির ধুমধাম পৌষসংক্রান্তি সামনে রেখে। সবটাই মার তত্ত্বাবধানে। আমার দুই পিসিমণি স্বর্ণলতা আর ধবলশ্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হতো এই আয়োজনে শরিক হতে। আমার মনে আছে, সারা মাস ধরে আতপ-কাটারিভোগ চাল বাটা দিয়ে তৈরি হতো সরু চিক্কন চালের মতো সুচালো দানা। তাকে বলা হতো চুষি। এই সুচালো দানাগুলোকে মাসখানেক রোদে শুকানো হতো সযত্নে।

পৌষসংক্রান্তির দিন ঘন দুধ দিয়ে তৈরি হতো ওই চুষির পায়েস। অতি সুস্বাদু। অনেক সময় চিনির বদলে আখ বা খেজুরের গুড় ব্যবহার করা হতো রুচিমাফিক। এ ছাড়া নানা ধরনের পিঠে তৈরি করতেন মা-পিসিমারা। কত নাম! পাটিসাপ্টাই হতো নানা স্বাদের। কোনোটিতে ক্ষীরের পুর, কোনোটিতে নারিকেলের। আবার কোনোটিতে গুড়ের প্রলেপযুক্ত তাল শাঁস। কোনোটি মা তৈরি করতেন গাজর বা ছোলার হালুয়ার পুর দিয়ে। কোনোটিতে দিতেন ভেজিটেবলের পুর।
আর এক ধরনের পিঠে হতো, যার নাম ছিল 'পুয়া পিঠা'। চালের গুঁড়া দিয়ে গুড় মিশিয়ে গরম সরিষার তেলে ছেঁকে ভেজে তোলা হতো। চমৎকার স্বাদ। তৈরি হতো চিতুয়া পিঠা। এটি খাওয়ার উপাদান হলো আখের ঝোলাগুড়। অনেকে বানাত আগের দিনের রান্না করা বড় মাছ, বিশেষ করে বোয়াল মাছের জমাটবাঁধা তরকারি দিয়ে।
পৌষসংক্রান্তির একটি জ্যোতির্বৈদ্যিক দিক রয়েছে। সে সম্পর্কে খানিকটা আলোচনা করা প্রাসঙ্গিক হবে। পৌষসংক্রান্তির সরল অর্থ হলো পৌষ মাসের শেষ দিন। সংক্রান্তি মানে অতিক্রমণ। এর পরদিনই পহেলা মাঘ। ঋতু অনুযায়ী পৌষ হলো শীতারম্ভের মাস। বাংলা পঞ্জিকামতে, পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল (এ বছর ১৪২০ বঙ্গাব্দে পৌষ মাস ২৯ দিনের আর মাঘ মাসও ২৯ দিনের)। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই দুই মাস পড়ে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
বাংলাদেশের সংস্কারায়িত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পৌষ মাস সবসময় ৩০ দিনের। অতএব সংক্রান্তি হবে প্রতি বছর ৩০ পৌষ, ১৩ জানুয়ারি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী দিনটি ভিন্ন।
প্রায় শতবর্ষ আগে পণ্ডিত মাধব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অনুধাবন করেছিলেন, তার সময়কার প্রচলিত পঞ্জিকায় প্রদত্ত গ্রহসংস্থান আকাশে প্রকৃত অবস্থানের সঙ্গে মেলে না। তখনকার প্রসিদ্ধ সংস্কারবাদী পণ্ডিত উড়িষ্যার চন্দ্রসিংহ সামন্ত, সর্বজনপরিচিত লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক, পণ্ডিত বাপুদেব শাস্ত্রী ও কেততার, কাশীধামের সর্বজনশ্রদ্ধেয় পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য, বাংলার মহামহোপাধ্যায় মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্ন. শশধর তর্কচূড়ামণি, আচার্য যোগেশ চন্দ্র রায় বিদ্যানিধি প্রমুখ পণ্ডিতের পরামর্শক্রমে ইংরেজি ১৮৯০ (১২৯৭ বঙ্গাব্দ) সালে দৃকসিদ্ধ 'বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা' প্রথম প্রণীত হয়। দৃকসিদ্ধ বলতে আমরা বুঝব বিশেষ দৃষ্টিসম্পন্ন বা জ্ঞানসম্পন্ন, যার সঙ্গে অয়ন গতির সম্পর্ক রয়েছে। সূর্যসিদ্ধান্তভিত্তিক পঞ্জিকাকারগণ তাদের গণনায় নাক্ষত্রিক দিবস ব্যবহার করতেন ট্রপিক্যাল দিবসের পরিবর্তে।
এরপর ১৯০৪ সালে জগদগুরু শঙ্করাচার্যের সভাপতিত্বে বোম্বাই শহরে অধ্যাপক প্রবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত, আশুতোষ মিত্র এবং পণ্ডিত শশধর তর্কচূড়ামণি ও অন্যান্য প্রখ্যাত শাস্ত্রবিদ ও পণ্ডিতের উপস্থিতিতে পঞ্জিকা সংস্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৩৩২ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় ব্রাহ্মণসভার সভাপতি মহামহোপাধ্যায় গুরুচরণ তর্কদর্শনতীর্থ মহাশয়ের উদ্যোগে এবং পুরুষসিংহ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এক মহতী সভায় 'দৃকগণিতৈকা' পঞ্জিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দক্ষিণ ভারতের মাদ্রাজ শহরে কালহাড্ডি, রাজমুন্দ্রী এবং কাঞ্চিপুরম শহরে পঞ্জিকা প্রণয়নের জন্য আলোচনা সভার মাধ্যমে সর্বত্রই দৃকসিদ্ধান্ত মতানুযায়ী পঞ্জিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতদ্ব্যতীত ভারতবর্ষে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত দৃকসিদ্ধান্ত মতানুযায়ী পঞ্জিকা গণনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অবশেষে ভারত সরকার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরু ১৯৫২ সালে ভারতে প্রচলিত এবং আন্তর্জাতিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সংস্কার সম্বন্ধে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। তার উক্তিটি উদ্ধৃত করছি :'ঞযব ঢ়ৎবংবহঃ পড়হভঁংরড়হ রহ ড়ঁৎ পধষবহফধৎ রহ ওহফরধ ড়ঁমযঃ ঃড় নব ৎবসড়াবফ. ও যড়ঢ়ব ড়ঁৎ ংপরবহঃরংঃং রিষষ মরাব ধ ষবধফ রহ ঃযরং সধঃঃবৎ.' (ঊীঃৎধপঃ ভৎড়স সবংংধমব মরাবহ নু ঘবযৎঁ রহ ঃযব রহধঁমঁৎধষ সববঃরহম ড়ভ ঃযব ঈধষবহফধৎ জবভড়ৎস ঈড়সসরঃঃবব যবষফ রহ ঘব িউবষযর রহ ১৯৫৩). 'ঈধষবহফধৎ জবভড়ৎস ঈড়সসরঃঃবব.'
বস্তুত নেহরু ভারতীয় বিজ্ঞানীদের প্রতি পঞ্জিকা সংস্কার সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে ১৯৫৩ সালে 'ঈধষবহফধৎ জবভড়ৎস ঈড়সসরঃঃবব' নামে একটি কমিটি গঠন করেন। বিশ্বখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থবিদ অধ্যাপক এমএন সাহা, এফআরএস এমএনএকে ওই কমিটির সভাপতি এবং প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিদ নির্মলচন্দ্র লাহিড়ীকে সম্পাদক নিযুক্ত করেন। ড. সাহা ওই কমিটির উদ্বোধনী সভায় বলেছিলেন :ওহ ওহফরধ, ঃযব রফবধ ড়ভ ওহফরধহ ঈধষবহফধৎ ৎবভড়ৎস ড়ৎরমরহধঃবফ ভৎড়স গধযধৎধংঃৎধ. খড়শসধহুধ ইধষধ এধহমধফযধৎ ঞরষধশ, বিষষশহড়হি ধং ধহ বসরহবহঃ ঢ়ড়ষরঃরপধষ ভরমঁৎব ড়ভ ঃযব ষধংঃ মবহবৎধঃরড়হ, ধিং ধষংড় ধ মৎবধঃ ংপযড়ষধৎ ধহফ যব রহরঃরধঃবফ পধষবহফধৎ ৎবভড়ৎস রহ গধযধৎধংঃৎধ, ংঃধৎঃরহম ধ হব িৎবভড়ৎসবফ পধষবহফধৎ রহ ১৯০৪ যিরপয রং ংঃরষষ নবরহম ভড়ষষড়বিফ রহ ঃযব ধহহঁধষ ধষসধহধপং ঢ়ঁনষরংযবফ রহ চড়ড়হধ.
বঙ্গদেশে মাধব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সেই ১৮৯০ সাল থেকে 'বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা' প্রকাশ করে আসছিলেন, যেখানে তিনি তার গণনায় আধুনিককালে ব্যবহৃত সূত্রগুলো ব্যবহার করেছেন। নির্মল চন্দ্র লাহিড়ীও তার গণনাকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরাকাল থেকেই ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মচর্চার পীঠস্থান কাশীধামের পণ্ডিত প্রয়াত মদনমোহন মালব্য ও তার সহকর্মী স্বরূপানন্দও আধুনিক তথ্যের আলোকে ভারতীয় পঞ্জিকা সংস্কারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এই কমিটি ১৯৫৫ সালে ভারতের জন্য একটি জাতীয় পঞ্জিকা ও দৃকসিদ্ধান্ত গণনা অনুযায়ী পঞ্জিকা রচনার সুপারিশ করে এবং ভারতীয় সরকার তা গ্রহণ করে।
উল্লেখ করা হয়েছে, পৌষসংক্রান্তি বস্তুত সব সংক্রান্তিরই একটি জ্যোতির্বৈদ্যিক দিক আছে। ইতিপূর্বে বলেছি, সংক্রান্তি কথাটির অর্থ হলো অতিক্রম করা বা অতিক্রমণ। বিশেষ অর্থ হলো, সূর্য যখন এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে প্রবেশ করে তাকেই বলা হয় সংক্রান্তি। চলতি কথায়, মাসের শেষ দিবসকেই বলা হয় সংক্রান্তি। পৌষ মাসের শেষ দিনটিকে তাই বলা হয় 'পৌষসংক্রান্তি', আর চৈত্রের শেষ দিবস অভিহিত হয় চৈত্রসংক্রান্তি নামে। চৈত্রের শেষ দিবসকে পঞ্জিকাকাররা বলে থাকেন 'মহাবিষুব' সংক্রান্তি। সাধারণত এটি ঘটে থাকে ২১ মার্চ। আশ্বিনের শেষ দিন হলো 'জলবিষুব' সংক্রান্তি। আর এটি পড়ে ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে। তাই ২২ মার্চ আর ২৩ সেপ্টেম্বর এই দুই তারিখে দিন-রাত্রি সমান। সূর্য তখন বিষুববৃত্তে লম্বভাবে অবস্থান করে।
মহাকাশে পৃথিবীর অক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে অঙ্কিত মহাবৃত্তের নাম বিষুববৃত্ত। আর মহাকাশে পৃথিবীর চারপাশে সূর্যের আপাত বার্ষিক গতিপথকে বলা হয় 'রবি মার্গ' বা রাশিচক্র। এই দুটি মহাবৃত্ত একই সমতলে অবস্থান করে না। তারা পরস্পরকে দুটি বিন্দুতে ছেদ করে এবং উভয়ের মধ্যে ২৩০২৭' কোণ রচিত হয়। এই ছেদ বিন্দু দুটির নাম যথাক্রমে মহাবিষুব বিন্দু ম এবং জলবিষুব বিন্দু ড। পৃথিবীর মেরুঅক্ষ ক্রান্তি তলের অক্ষের সঙ্গে ২৩০২৭' হেলে থাকে বলেই বিষুববৃত্ত ও ক্রান্তিবৃত্ত পরস্পরকে ছেদ করে। এ কারণেই পৃথিবীতে ঋতুর পরিবর্তন হয়। সাধারণভাবে ২২ মার্চ তারিখে সূর্য ক্রান্তিবৃত্ত ও বিষুববৃত্তের মধ্যে ছেদ ম বিন্দুকে অতিক্রম করে। আর তাই ২২ মার্চ তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান হয়। কারণ এ সময় সূর্য বিষুববৃত্তে অবস্থান করে। এর পর থেকেই উত্তর গোলার্ধে দিন বাড়তে থাকে আর রাত ছোট হতে থাকে এবং ২১ জুন তারিখে উত্তর গোলার্ধে আমরা পাই দীর্ঘতম দিন আর হ্রস্বতম রজনী। সূর্য এ সময় কর্কট ক্রান্তিবৃত্তে অবস্থান করে। ক্রান্তিবৃত্তে সূর্যের এই প্রান্তিক অবস্থান বিন্দুকে বলা হয় উত্তর অয়নান্ত বা কর্কট ক্রান্তি। দক্ষিণ গোলার্ধে অবশ্য এর বিপরীত। এরপর থেকে দিন ছোট হতে থাকে আর রাত বড় হতে থাকে। অবশেষে ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে সূর্য পুনরায় অবস্থান নেয় বিষুববৃত্তের ড বিন্দুতে, যেখানে ক্রান্তিবৃত্ত ও বিষুববৃত্ত পরস্পরকে ছেদ করেছে। একে বলা হয় 'জলবিষুব বিন্দু'। এ দিন পুনরায় পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান হয়ে থাকে। অতঃপর উত্তর গোলার্র্ধে ক্রমশ রাত বড় হতে হতে সূর্য পেঁৗছে যায় ক্রান্তি বৃত্তের দক্ষিণ অয়নান্ত বিন্দুতে ২২ ডিসেম্বর তারিখে যখন উত্তর গোলার্ধে হয় দীর্ঘতম রজনী আর ক্ষুদ্রতম দিবস। এ সময় সূর্য মকরবৃত্তে অবস্থান করে থাকে। তাই সূর্যের এই অবস্থানকে বলা হয় মকরক্রান্তি। এখানে লক্ষণীয়, ২১ জুনের পর থেকে সূর্য রাশিচক্রে ক্রমশ দক্ষিণ দিকে সরে আসতে আসতে ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণতম বিন্দুতে (মকরক্রান্তি বিন্দু) উপনীত হয়। সূর্যের এই ছয় মাসব্যাপী দক্ষিণ অভিমুখী অভিযাত্রাকে বলা হয়ে থাকে দক্ষিণায়ন। অন্যদিকে ২২ ডিসেম্বরের পর থেকে সূর্য পুনরায় রাশিচক্রে ক্রমশ উত্তরদিকে সরতে সরতে জুন মাসে উত্তরতম বিন্দুতে উপনীত হয় (কর্কটক্রান্তি বিন্দূ)। সূর্যের এই ছয় মাসব্যাপী উত্তরাভিযানকে বলা হয় উত্তরায়ন।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুযায়ী সূর্য রাশিচক্রে চারটি কার্ডিনাল বিন্দুতে_ মহাবিষুব সংক্রান্তি, জলবিষুব সংক্রান্তি, উত্তর অয়নান্ত বিন্দু এবং দক্ষিণ অয়নান্ত বিন্দুতে উপনীত হয় যথাক্রমে ২১ মার্চ, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২১ জুন ও ২২ ডিসেম্বর তারিখে।
কিন্তু বাংলা পঞ্জিকাকারগণ যে তারিখগুলোকে এই দিবসগুলোকে চিহ্নিত করেন; তার সঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানসম্মত ওই তারিখগুলোর একদম মিল নেই। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আমার হাতের কাছে বেণীমাধব শীলের ১৪২০ সালের পঞ্জিকাটি রয়েছে। এই পঞ্জিকা অনুযায়ী চৈত্র মাস ৩০ দিন (ইংরেজি তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৪)। দিবসটিকে 'মহাবিষুব সংক্রান্তি' নামে অভিহিত করা হয়েছে। অথচ আসল মহাবিষুব সংক্রান্তি হয় ২১ মার্চ। দেখা যাচ্ছে, ২২ দিনের ব্যবধান। অন্যদিকে হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, পৌষসংক্রান্তি হলো পৌষ মাসের শেষ দিন, যেমন ১৪২০ সালের বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকানুযায়ী পৌষ মাস ২৯ দিনের। অতএব, ১৪২০ বঙ্গাব্দে পৌষসংক্রান্তি হবে ২৯ পৌষ (১৪ জানুয়ারি)। পৌষসংক্রান্তি হলো মকরসংক্রান্তি। কারণ সূর্য তখন মকরবৃত্তে অবস্থান করে। একে উত্তরায়ন সংক্রান্তিও বলা হয়। কারণ সূর্য তার উত্তরমুখী অভিযানে বা উত্তরায়নে শেষ বিন্দুতে উপনীত হয়। যদিও প্রকৃত জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী তারিখটি আসলে ২২ ডিসেম্বর। এখানেও দেখা যাচ্ছে, হিন্দু পঞ্জিকাকারগণ দক্ষিণ অয়নান্ত বিন্দুটিকে ২২ দিন পিছিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ তাদের হিসাব অনুযায়ী অয়নান্ত ঘটবে ২৯ পৌষ বা ১৪ জানুয়ারিতে। গত বছরের ১৪১৯ নবযুগ পত্রিকায় উলি্লখিত ওই তারিখগুলো পর্যালোচনা করে আমরা একই সিদ্ধান্তে উপনীত হই। গত বছরের (১৪১৯) ওই পঞ্জিকা অনুযায়ী পৌষসংক্রান্তি হবে ২৯ পৌষ (১৪ জানুয়ারি ২০১৩), যাকে বলা হয়েছে মকর বা উত্তরায়ন সংক্রান্তি। আর তাদের হিসাব অনুযায়ী চৈত্রসংক্রান্তি পড়েছে ৩১ চৈত্র (১৪ এপ্রিল ২০১৩)। এই দিনটিকে তারা অভিহিত করছেন 'মহাবিষুব সংক্রান্তি' নামে। এই বিভ্রান্তির কারণ পঞ্জিকাকারগণ তাদের গণনায় নক্ষত্র বছর ব্যবহার করে থাকেন (যেখানে অয়ন বিন্দুদ্বয়ের গতিকে হিসাবে আনা হয় না) ক্রান্তি বছরের পরিবর্তে। বর্তমান হিসাবমতে, ম বিন্দুটি কোনো স্থির নক্ষত্রের সাপেক্ষে সূর্যের গতির উল্টোদিকে সরে আসছে। ফলে ম বিন্দুটির সাপেক্ষে সূর্যের আপাত অবস্থানের মধ্যে ও পঞ্জিকার হিসাবে সূর্যের অবস্থানের মধ্যে দূরত্ব বেড়েই চলেছে। যদি ধরা হয় যে, ৫৭০ অব্দে সিদ্ধান্তিক গণনা চালুকালে মহাবিষুব সংক্রান্তি হয়তো ৩০ বা ৩১ চৈত্র হতো। অয়ন বিন্দুর এই পশ্চাদ্গামিতার ফলে এখন প্রকৃত মহাবিষুব সংক্রান্তি ঘটে থাকে ৭ বা ৮ চৈত্র (২২ মার্চ)। হিসাব করে দেখা গেছে, পঞ্জিকার এই গণনা পদ্ধতি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০০০ বছরের মধ্যে আমরা যথাযথ ঋতু থেকে এক মাস এগিয়ে যাব। অর্থাৎ যেসব অনুষ্ঠান হওয়ার কথা বসন্তকালে, তা পড়বে মধ্যশীতে। সূর্যসিদ্ধান্তভিত্তিক পণ্ডিত পঞ্জিকাবিশারদগণ কি আধুনিক বিজ্ঞানের অবদানকে অস্বীকার করেই যাবেন, আর তাদের অনুসারী সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়াতেই থাকবেন? আমাদের একজন প্রগতিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক বিদ্যাসাগরের জন্য আর কতকাল অপেক্ষা করতে হবে?
শিক্ষাবিদ

সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উকিল নোটিস

বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এখলাছ উদ্দীন ভূঁইয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্য সচিবকে এ নোটিস পাঠান।
সমকাল প্রতিবেদক
সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উকিল নোটিস
ফাইল ছবি।
প্রকাশ্যে ধূমপান করায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ তিনজনের কাছে উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছে। অপর দুই জন হলেন-মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্য সচিব।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এখলাছ উদ্দীন ভুঁইয়া এ নোটিস পাঠান।
এখলাছ উদ্দীন ভূঁইয়া সমকালকে জানান, প্রকাশ্যে ধূমপান করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নোটিসে বলা হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০৫ এর ২(চ) ধারা অনুসারে আদালতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হবে। সোমবার সিলেট বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে জেএসসি ও প্রাথমিক সমাপণী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসে সমাজকল্যাণমন্ত্রী প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। ধুমপান করা ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে সমাজকল্যাণমন্ত্রী পরদিন ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপরেও বুধবার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়।

কমিশন-বদলি বাণিজ্যের দিন শেষ: যোগাযগমন্ত্রী

বিআরটিএ'র প্রধান কার্যালয়ে পেশাজীবী গাড়িচালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন।
সমকাল প্রতিবেদক
কমিশন-বদলি বাণিজ্যের দিন শেষ: যোগাযগমন্ত্রীযোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন্ত্রণালয়ে টেন্ডার কমিশন ও টাকা ভাগাভাগি এবং বদলি বাণিজ্যের দিন শেষ। চোখের সামনে এসব অপকর্ম হতে দেওয়া যাবে না।
বুধবার সকালে বিআরটিএ'র প্রধান কার্যালয়ে পেশাজীবী গাড়িচালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, "দুর্নীতি উন্নয়নের প্রধান শক্র। দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধই বড় চ্যালেঞ্জ। তাই দুর্নীতি দমনে আরও কঠোর হতে হবে।"
মন্ত্রী বলেন, "আনফিট গাড়ির মত অদক্ষ চালকও বিপজ্জনক। এজন্য চালকদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়াতে হবে।"
তিনি বলেন, "শুধু চালকরাই মোবাইলে কথা বলেন না, পথচারীরাও অনেক সময় কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হন, যা দুর্ঘটনার কারণ। তাই পথচারীদেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।"
মন্ত্রী বলেন, "শুধু রাস্তা চার লেন বা দশ লেন করলেই হবে না, দুর্ঘটনা রোধের জন্য বেপরোয়া মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে।"
তিনি বলেন, "বর্তমানে ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। মোটরসাইকেল চালক যখন তখন নিয়ম না মেনে ফুটপাতে উঠে গিয়ে দুর্ঘটনার সৃষ্টি করছে।"
মন্ত্রী বলেন, "অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যেমন দুর্নীতি, তেমন অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, ওভারটেকিংও দুর্নীতি। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।"
এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় প্রতি ব্যাচে ১শ' জন করে মোট ৩ হাজার চালককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

রাজনীতির নামে অপশক্তি দমন করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

বুধবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভাষণ দেন।
সমকাল প্রতিবেদক
রাজনীতির নামে অপশক্তি দমন করতে হবে: রাষ্ট্রপতিরাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, বিরোধীদলকে সর্বদলীয় সরকারে আসার আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীদল সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। তারা নির্বাচনেও অংশ নেয়নি। সারাদেশে নির্বাচন পরবর্তী ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। সহিংসতা বন্ধ করে জনমনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজনীতির নামে অপশক্তি দমন করতে হবে।
বুধবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন।
এ সময় তিনি বলেন, "২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করেছিল। শেখ হাসিনার সরকার পুরোপুরিভাবে সফল হয়েছে। শেখ হাসিনা মেয়াদের শুরু থেকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে। এ সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফাঁসি ও বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে।"
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, "৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে।"
এ জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। নানা ভয় ভীতি উপেক্ষা করে নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদেরও অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রপতি।

বিএনপি নেত্রীর নির্বাচনে না আসা দুঃখজনক: রওশন

বুধবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দশম জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এ কথা বলেন।
সমকাল প্রতিবেদক
বিএনপি নেত্রীর নির্বাচনে না আসা দুঃখজনক: রওশনদশম জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, এতো দিন এ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি এবার নির্বাচনে অংশ নেননি। তার নির্বাচনে না আসা দুঃখজনক।
বুধবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।
বক্তব্যে রওশন এরশাদ সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তার পাশেই বসা ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
তিনি বলেন, "আমাদের দেশের বড় সমস্যা রাজনীতি। দেশের জন্য রাজনীতিকে বিসর্জন দিতে হবে। সবাইকে এক সাথে মিলিত হয়ে দেশের জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।"
সংসদ নির্বাচনে বিএনপির না আসা প্রসঙ্গে রওশন বলেন, "অন্যদল নির্বাচনে আসেনি বলে নির্বাচন হবে না, এটাতো হয় না। সাংবিধানিক ধারা এগিয়ে নিতে এবং গণতন্ত্রেকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই।"
তিনি বলেন, "অনেকেই বলছেন সরকারে থেকে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হয় কি ভাবে। এটা নতুন কনসেপ্ট। আমরা দেখাতে চাই আমাদের মন্ত্রী আছেন ঠিকই, কিন্তু আমারা সেভাবেই বিরোধী দলের ভূমিকা রাখতে চাই। কতটুকু সফল হবো জানি না। আমাদের আন্তরিকতার ঘাটতি হবে না।"

Thursday 23 January 2014

ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ধারাভাষ্যকার

বৃহস্পতিবার ভারতীয় একটি গণমাধ্যম পাকিস্তানের একটি ঘরোয়ো ম্যাচের এমন খবর জানিয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক
ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ধারাভাষ্যকার
ফাইল ছবি।
কিছুক্ষণ ধরেই টিভি থেকে কোনও আওয়াজ আসছে না। সবাই অবাক, না টিভি তো মিউট করা নেই, টেকনিক্যাল ফল্টও নয়। তাহলে! অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটা উইকেট পড়ল। এই সময় টিভির আওয়াজ না এলে হয়!
 
বৃহস্পতিবার ভারতীয় একটি গণমাধ্যম পাকিস্তানের একটি ঘরোয়ো ম্যাচের এমন খবর জানিয়েছে।  
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এদিকে, কমেন্ট্রি বক্সের বাইরে টেকনিক্যাল বক্সে বসে মাথায় হাত চ্যানেলের প্রোডিউসারের। জোর ধমক দিলেন টেকনিক্যাল লোকেদের। বললনে, "এ কি চাকরিটা খাবি না কি, তাড়াতাড়ি সাউন্ডের সব সমস্যা সাড়িও নাও, না হলে একসঙ্গে সবার চাকরি যাবে।"
টেকনিক্যাল লোকেদের জবাব, "না স্যর সাউন্ড আসছে না এই সমস্যাটায় আমাদের তরফ থেকে কোনও ত্রুটি নেই।" তাহলে! প্রডিউসার ফের মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। তাহলে!
সব ঠিক আছে তবু ধারাভাষ্য দেওয়ার বক্স থেকে আওয়াজ আসছে না! কেন? প্রডিউসার তক্ষুনি ছুটে গেলেন কমেন্ট্রি বক্সে। বন্ধ দরজা বেশ জোরে খুলে বুঝতে পারলেন সমস্যাটা। দেখলেন ধারাভাষ্যকার নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন। তাই টিভি চুপচাপ।
আসলে লাঞ্চটা একটু বেশিই করে নিয়েছিলেন ধারাভাষ্যকার। তাই আর কী ঠাণ্ডা বক্সে বসে চোখটা জুড়িয়ে এসেছিল। দুর্ভাগ্য সেই সময় কমেন্ট্রি বক্সে তিনিই ছিলেন একমাত্র কমেনটেটর। অন্য কেউ থাকলে না হয় ঘুমোতে দিত না তাঁকে।গণমাধ্যমে সেই ধারাভাষ্যকারের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
http://adf.ly/?id=353839

সাবেক সাত মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতির খোঁজে দুদক

সাবেক সাত মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতির খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের মধ্যে মহাজোট সরকারের তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও রয়েছেন। তারা হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান।
হকিকত জাহান হকি/জয়দেব দাশ
সাবেক সাত মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতির খোঁজে দুদকসাবেক সাত মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতির খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের মধ্যে মহাজোট সরকারের তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও রয়েছেন। তারা হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান। এর মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনে মান্নান খান হেরে গেছেন। বাকি দু'জন বর্তমানে এমপি। তবে তাদের মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। অন্যরা হলেন ঢাকার এমপি আসলামুল হক, এনা প্রপার্টিজের কর্ণধার রাজশাহীর এনামুল হক এমপি ও কক্সবাজারের এমপি আবদুর রহমান বদি। আর একজন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এমএ জব্বার। একটি দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ মন্ত্রিসভা গঠনের সময় মহাজোটের যেসব মন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বাদ দিয়েছেন তাদের মধ্যে এই ৩ জন রয়েছেন।
গতকাল বুধবার এই সাত ভিআইপির সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক পৃথকভাবে সাতজন চৌকস কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে। কর্মকর্তারা মূলত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামার সম্পদ অনুসন্ধানে কাজ
করবেন। দুদক জানায়, শিগগির তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি, গৃহনির্মাণ সংস্থা রিহ্যাব, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থায় চিঠি দিয়ে তাদের নামে-বেনামের সব সম্পদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। তারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে কি-না, সে বিষয়টি সূক্ষ্মভাবে যাচাই করা হবে।অনুসন্ধান কর্মকর্তারা ওই মন্ত্রী-সাংসদের সম্পদের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেবেন। নোটিশপ্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের ঢাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সম্পদের হিসাব বিবরণী পেশ করতে হবে। যাদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের হলফনামায় উল্লেখ করা সম্পদের তথ্য সম্পর্কে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ৬০টি রিপোর্ট অভিযোগ হিসেবে আমলে নিয়ে প্রথম পর্যায়ে ছয়জনের সম্পদের হিসাব অনুসন্ধান করা হচ্ছে। দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান সমকালকে বলেন, হলফনামায় যাদের অস্বাভাবিক সম্পদের উল্লেখ করা হয়েছে, মূলত তাদের হিসাব অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এর বাইরে তাদের নামে আরও কোনো সম্পদ আছে কি-না, তা খতিয়ে দেখা হবে। নামে-বেনামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকের সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য উপপরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের সম্পদ অনুসন্ধানে উপপরিচালক নাসির উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ঢাকা-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পটুয়াখালী-৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সাংসদ মাহবুবুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে উপপরিচালক খায়রুল হুদা, ঢাকা-১৪ আসনে নির্বাচিত সাংসদ আসলামুল হকের সম্পদ অনুসন্ধানে উপপরিচালক শেখ ফাহিয়াজ আলম, কক্সবাজার-৪ আসনে নির্বাচিত সাংসদ আবদুর রহমান বদির সম্পদ অনুসন্ধানে উপপরিচালক আহসান আলীকে, রাজশাহী-৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সাংসদ এনামুল হকের সম্পদ অনুসন্ধানে উপপরিচালক সৈয়দ তাহসিনুল হককে ও সাবেক সাংসদ এমএ জব্বারের সম্পদ অনুসন্ধানে সহকারী পরিচালক মাসুদুর রহমানকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' দেখানোর কথা বলা হয়েছে। এ রকম সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পেয়ে দুদক গা-ঝাড়া দিয়ে মাঠে নেমেছে। এতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর মনোভাবের প্রতিফলন ঘটবে মনে করা হচ্ছে।
আ ফ ম রুহুল হক :হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রী ইলা হকের ব্যাংক ব্যালান্স বেড়েছে ১৬৫ গুণ। একই সময়ে অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালান্স বেড়েছে ১০ গুণ। পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী মাঠে নামার সময় রুহুল হক ও তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ছিল ৯২ লাখ টাকা। এখন তাদের ব্যাংক ব্যালান্সের পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। এখন ৭ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। এ ক্ষেত্রে পাঁচ বছরে বেড়েছে ১৬৫ গুণ। সঞ্চয়পত্রে এবার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে নিজের নামে হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ ৬৫ হাজার ৯২২ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৫ টাকা।
আবদুল মান্নান খান :পাঁচ বছর আগেও ১০ লাখ ৩৩ হাজার টাকার সম্পত্তি ছিল তার নামে। অল্পদিনের ব্যবধানে তা হয়েছে ১১ কোটি তিন লাখ টাকা। আগে বার্ষিক আয় ছিল তার তিন লাখ ৮৫ হাজার টাকা। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই তার আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে বছরে তিন কোটি ২৮ লাখ টাকায়। পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১০৭ গুণ। এ ছাড়া তিনি ধানম িতে দুটি ফ্ল্যাটের মালিক। হলফনামায় ফ্ল্যাট দুটির মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৮১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া রয়েছে প্লটসহ অন্যান্য সম্পদ। পুঁজিবাজার বা সঞ্চয়পত্র থেকে আগে তার আয় না থাকলেও এবারে আয় ১ লাখ ১১ হাজার টাকা। আগে মৎস্য খাত ও রেমিট্যান্স থেকে কোনো আয় না থাকলেও এবার হলফনামায় তা দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন অতীতে নেই উল্লেখ করলেও এবার 'নেই'-এর স্থলে উল্লেখ আছে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এ ছাড়া তার মাছের খামার যুক্ত হয়েছে পাঁচটি।
মাহবুুবুর রহমান :সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরে তার হাতে যেন আলাদিনের চেরাগ ছিল। গত পাঁচ বছরে ২০ একর জমির মালিক থেকে তিনি হয়েছেন ২ হাজার ৮৬৫ একর জমির মালিক। গণমাধ্যমে এই সম্পদ বিবরণী প্রকাশের পর তিনি একটি ব্যাখ্যা দিয়ে বিজ্ঞাপন দেন। সেখানে তিনি বলেন, তার জমির পরিমাণ প্রকৃতপক্ষে ২৮ দশমিক ৬৫ একর। পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ছাড়া কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ না থাকা স্ত্রীর নামে এখন ১ কোটি ২৬ লাখ ৭১ হাজার টাকার সম্পদ। নিজের নামে রয়েছে ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ১১২ টাকার স্থাবর সম্পদ, যা পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৫ কোটি ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ৭২ টাকা।
আসলামুল হক :আসলামুল হকের জমির পরিমাণ বেড়েছে ৩৪ গুণের বেশি। ২০০৮ সালে হলফনামার তথ্য অনুযায়ী তিনি ও তার স্ত্রী মাকসুদা হক ৪ একর ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন। সে সময় ওই মূল্য ছিল ২০ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা। দশম সংসদ নির্বাচনে পেশ করা হলফনামায় তিনি ও তার স্ত্রীর জমির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১৪৫ দশমিক ৬৭ একর (১৪ হাজার ৫৬৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ) এবং দাম উলেল্গখ করা হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৯২ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা।
এনামুল হক :২০০৮ সালে শুধু বেতন-ভাতা থেকে তার বছরে আয় ছিল ২০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর পর এখন কৃষি, বাড়ি ও দোকানভাড়া, ব্যবসা ও পেশা থেকে বছরে তার আয় হয় ৫০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে তার পরিবারের পোষ্যদের ৭ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা বার্ষিক আয় থাকলেও এবারের হলফনামায় পোষ্যদের কোনো আয়ের উৎস নেই উল্লেখ করা হয়। তার নিজের, স্ত্রীর ও অন্যদের মোট ১৬ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার সাধারণ শেয়ার থেকে কোনো আয় নেই উল্লেখ করা হয় হলফনামায়। পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রীর নামে থাকা ২ কোটি ৮৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকায়।
আবদুর রহমান বদি :হলফনামায় উল্লেখ করা সম্পদের হিসাব অনুযায়ী আবদুর রহমান বদির আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। হলফনামায় বলা হয়, গত পাঁচ বছরে আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। তার বার্ষিক আয় সাত কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় দুই কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা। এর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় বলেছিলেন, তখন তার বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৪৮০ টাকা। ব্যয় ছিল দুই লাখ ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা।
এমএ জব্বার :২০০৮ সালের হলফনামায় বলা হয়, ওই সময় তার বার্ষিক আয় ছিল কৃষি খাতে ২০ হাজার, বাড়ি, দোকানভাড়া থেকে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭২৯ টাকা এবং শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ৪৯ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে ২৩ দশমিক ৩৬৬ একর, স্ত্রীর নামে ১১ দশমিক ২৩৫ একর ও নির্ভরশীলদের নামে ৪ দশমিক ০৪৮ একর কৃষিজমি ছিল। অকৃষিজমির মধ্যে নিজ নামে ৭৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪০২ টাকার জমিসহ একটি দালান এবং ঢাকা ও খুলনায় ৪ লাখ ৮২ হাজার ৮২৬ টাকা মূল্যের চারটি দালান উল্লেখ করা হয়েছিল।
http://adf.ly/?id=353839

খালেদার বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক: নাসিম

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
সমকাল প্রতিবেদক
খালেদার বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক: নাসিম
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মোহাম্মদ নাসিম। টেলিভিশন থেকে নেওয়া ছবি
সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর অভিযান নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘দায়িত্বহীন ও রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের আলোচনা সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নাসিম বলেন, "নির্বাচনের পর প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মানুষের ওপর হামলা করা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এ কারণে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করেছে। যৌথবাহিনীর অভিযানে শান্তি ফিরে এসেছে। এই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কোথাও কোথাও তাদের কঠোর হতে হয়েছে। জনগণ এটা সমর্থন করেছে।"
তিনি বলেন, "অথচ খালেদা জিয়া আজ তাদের ভিনদেশি লোক বলছেন। উনি কিভাবে এটা বলেন? তার বক্তব্য দায়িত্বহীন, দেশপ্রেমবর্জিত ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথাসময়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।"
কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে এবং জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুলে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল জানিয়ে নাসিম বলেন, "কাদের মোল্লার ফাঁসি যাতে না হয়, তার জন্য নানাভাবে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। একইভাবে নির্বাচন ভণ্ডুল করতেও চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ থাকায় এবং জনগণের সমর্থন থাকায় আমরা যথাযময়ে নির্বাচন করতে পেরেছি।"
বিএনপি নেত্রী দেশকে অহেতুক একটি যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন—অভিযোগ করে তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
খালেদা জিয়া পরাজিত হয়েছেন—মন্তব্য করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, "আপনার ডাকে জনগণ তো দূরের কথা আপনার কাছের লোকগুলোও আসেনি। তাদের জিজ্ঞেস করুন সে সময় তারা কোথায় ছিলেন। আপনার দলকে যারা ডুবিয়েছে তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।"
সরকার ৫ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছে—উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। সংবিধানে লেখা আছে নির্বাচন ৫ বছরের জন্য। ৫ বছরের আগে নির্বাচন বা সংলাপের প্রয়োজন দেখছি না।"
বিএনপি নেত্রী ‘সব হারিয়েছেন’—দাবি করে তিনি বলেন, "মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। ভুল থেকে শিক্ষা নিন। দায়িত্বশীল আচরণ করুন। আমাদের সহযোগিতা করুন। আমরাও আপনাদের সহযোগিতা করবো।"
http://adf.ly/?id=353839

Friday 10 January 2014

স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো ।। নির্মলেন্দু গুণ


একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
ভোর থেকে জন সমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি’?

এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,
এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না।
তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?
তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে
ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি?

জানি, সেদিনের সব স্মৃতি মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত
কালো হাত। তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ
কবির বিরুদ্ধে কবি,
মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,
বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,
উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,
মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ...।

হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,
শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে তুমি
একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে
লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প।
সেদিন এই উদ্যানের রুপ ছিল ভিন্নতর।
না পার্ক না ফুলের বাগান, - এসবের কিছুই ছিল না,
শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত
ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়।
আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল
এই ধু ধু মাঠের সবুজে।

কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে
এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,
লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,
পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক।
হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,
নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে
আর তোমাদের মতো শিশু পাতা- কুড়ানীরা দল বেঁধে।
একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্য কী ব্যাকুল
প্রতীক্ষা মানুষের: ‘কখন আসবে কবি?’ ‘কখন আসবে কবি?’

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।

তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল
হৃদয়ে লাগিল দোলা, জন সমুদ্রে জাগিল জোয়ার
সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতা খানি:

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।

শপথ নিলেন ২৮৪ এমপি

দশম জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যে ২৮৪ জন গতকাল বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। তবে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমান শপথ নেননি।
সমকাল প্রতিবেদক
দশম জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যে ২৮৪ জন গতকাল বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। তবে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমান শপথ নেননি। দেশের বাইরে থাকায় নাসিম ওসমান শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। আর এরশাদ রয়েছেন হাসপাতালে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থাকার কারণে গতকাল শপথ নেননি ঢাকা-৯ থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের নাজমুল হাসান ও চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে নির্বাচিত জাসদ নেতা মইনউদ্দীন খান বাদল।শপথ নিলেন ২৮৪ এমপি
এদিকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করেছে দশম সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ। আর জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ হচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা।সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে শপথ কক্ষে শপথ অনুষ্ঠান হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নবনির্বাচিত সাংসদদের শপথবাক্য পাঠ করান। জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব মো. আশরাফুল মকবুল শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। গতকাল শপথ গ্রহণকারী ২৮৪ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২২৬ জন, জাতীয় পার্টির ৩১, ওয়ার্কার্স পার্টির ৬, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৪, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের (বিএনএফ) ১, তরীকত ফেডারেশনের ১ জন এবং স্বতন্ত্র ১৪ এমপি রয়েছেন।
প্রথম পর্বে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নবনির্বাচিত দলীয় এমপিরা সকাল ১০টা ২০ মিনিটে শপথ গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে সকাল সোয়া ১১টার দিকে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার নবনির্বাচিত সাংসদরা শপথ নেন। দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ শপথ নিতে পারেন। তিনি ২৭ দিন ধরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আছেন। এর পর অন্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নবনির্বাচিত এমপিরা শপথ নেন।
সংবিধান অনুযায়ী, একাধিক আসনে নির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণের আগে যে কোনো একটি আসন রেখে অন্যগুলো ছেড়ে দিতে হয়। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সে আসনগুলো শূন্য ঘোষণা করে। দশম সংসদে কেবল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬ দুটি আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি গোপালগঞ্জ-৩ আসন রেখে রংপুর-৬ আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। সেখানে দ্রুত উপনির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি সচিবালয়।
৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার নির্বাচন কমিশন ২৯০ আসনের এমপিদের নামের গেজেট প্রকাশ করে। দশম সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে আটটি আসনের ফল স্থগিত আছে। বাকি ২৯২টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৩১, জাতীয় পার্টি ৩৩, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬, জাসদ ৫, জাতীয় পার্টি_জেপি ১, তরীকত ফেডারেশন ১, বিএনএফ ১ এবং স্বতন্ত্র ১৪ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। যশোর-১ ও যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই এমপি শেখ আফিল উদ্দিন ও মনিরুল ইসলামের নাম গেজেটে প্রকাশ করা হয়নি। কমিশনের তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত দু'জনের কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া গেলে তাদের নাম পরে গেজেটে প্রকাশ করা হবে। ফল স্থগিত আট আসনের বন্ধ থাকা কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আসনগুলো হলো_ দিনাজপুর-৪, কুড়িগ্রাম-৪, গাইবান্ধা-১, গাইবান্ধা-৩, গাইবান্ধা-৪, বগুড়া-৭, যশোর-৫ ও লক্ষ্মীপুর-১।
আইনি ব্যাখ্যা দিতে নারাজ স্পিকার :২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নবম জাতীয় সংসদ বহাল থাকলে ১২৩ আসনে একই সঙ্গে দু'জন এমপি থাকবেন কি-না এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, 'স্পিকার হিসেবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ নিয়ে বলার কিছু নেই। এটা আইনি ব্যাখ্যার বিষয়। একেকজন একেকভাবে ব্যাখ্যা দিতে পারেন। সেদিকে যেতে চাই না।' শপথ অনুষ্ঠান শেষে নিজ কার্যালয়ের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্পিকার শিরীন শারমিন।
বিদ্যমান রীতি অনুযায়ী নবম সংসদের এমপিরা সম্মানীসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে স্পিকার বলেন, 'বিষয়টি দেখতে হবে।' এদিকে নবম সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দশম জাতীয় সংসদে নেই_ এ বিষয়ে তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা নির্বাচন তো হয়ে গেল। এখন দশম সংসদের চিত্র তো একটু ভিন্ন হতেই পারে।
এ সময় স্পিকার বলেন, দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার পদে পুনরায় নির্বাচিত হচ্ছেন কি-না তা তার জানা নেই। নিয়ম অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশনে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের বিধান রয়েছে। তার আগে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্যপদে নির্বাচন হবে কি-না, সেটিও একটি বিষয়। যেহেতু তিনি নির্বাচিত সংসদ সদস্য নন, তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্তের একটা বিষয় আছে। কবে নাগাদ দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন বসতে পারে_ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার গঠনের পর সংসদ অধিবেশন বসবে। অন্তত ১৫ দিনের একটা নোটিশ দিতে হবে।

Free of searing pain, finally

Stop this politics

Free of searing pain, finally

Two more burn victims die
Zyma Islam
Free of searing pain, finally
A crying Halima holds back her son Liton from running after the stretcher taking his father Farid's body to the morgue from DMCH burn unit yesterday. Photo: Amran Hossain
For the last few days, the arson victim had been crying out in pain: "Kill me please. I don't want to live anymore." He was relieved of his excruciating pain in death yesterday.
Farid Miah is the latest victim of arson attack on innocent civilians by the opposition men. With him, at least 22 arson victims have died at the Dhaka Medical College Hospital alone since October last year.  
When he was brought to the DMCH with 48 percent burns on January 3, he broke down in front of doctors and nurses, pleading to them to kill him and stop his pain.
His cries had made the air inside the Intensive Care Unit heavy for the past five days, reminding everyone of the kind of sufferings an arson victim goes through.
And yesterday, as his body was being carted away to the morgue, the cries of Liton, the 10-year-old son he left behind, reminded everyone of the heart-rending pain of seeing a father die a horrifying death.

Free of searing pain, finally
Halima had feared the worst on Friday, when criminals hurled a petrol bomb at Farid's bus near Ruposhi Bangla Hotel burning him fatally. Photo: File
As if refusing to believe his father was dead, the little boy ran after the stretcher, calling out to it to stop, to bring his father back.
When his elder brother held him back, Liton threw himself on all fours on the filthy hospital floor and tried to crawl after the stretcher.
He finally gave up when he ran out of breath as the sobbing took over. Liton had to be dragged away by the ankles.
The bus Farid was travelling on was set afire by arsonists by a petrol bomb near Ruposhi Bangla Hotel in the capital on January 3.
Shahina Akhter, another passenger of the bus who too suffered severe burns, also died early yesterday.
Family members of the 42-year-old official of an insurance company burst out in fury.
"You kill people because you want a special chair, is that it?" cried out one of her sisters, referring to the politicians.
Shahina died of infection-induced shock in the 64 percent areas of her burnt body, doctors said.
Infection control at the burn unit is difficult to achieve because the hospital handles more patients than its capacity, said Partha Shankar Paul, resident surgeon of the burn unit.
Shahina's human rights activist husband SMF Zaman broke down, "If they [the government] cannot stop the arson attacks, why don't they at least try to save our lives by taking us abroad where there is better treatment?"
The family could accept the fate and move on if they knew that an effort had been made by the government to save her life by taking her to Singapore or elsewhere, said Shahida, Shahina's sister.
"The free medicines being given by the hospital will not save our lives. Better medical facilities will," she added.
Meanwhile, police yesterday recovered the body of another arson victim from a burnt truck in Sirajganj.
The truck was set on fire on the Dhaka-Bogra highway on Tuesday evening, leaving two people burned alive and injuring another.
One of the dead, Imran Hossain, 32, was pulled out immediately.
The body of Milon Hossain, 27, the second victim, was found trapped under the truck as police went to rescue the truck yesterday.
The injured, Shafad Ali, is currently fighting for his life at Bogra Shaheed Ziaur Rahman Medical College Hospital.
The 55-year-old suffered 55 percent burns, and doctors there said his condition was critical.
Published: 12:02 am Thursday, January 09, 2014
Last modified: 3:50 pm Thursday, January 09, 2014

The historic homecoming

Syed Badrul Ahsan
The historic homecoming
There was a sadness that enveloped him in the midst of that cheering crowd.
As the truck carrying him and a whole phalanx of politicians and student leaders inched its way out of the old airport in Tejgaon, Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman seemed tired after all those months in solitary confinement in Pakistan. More than that, he was clearly overwhelmed by the ecstatic manner in which his people, the newly freed Bangalees of his Bangladesh, were welcoming him home.
It could have been a scene out of an epic tale. It could have been an image shaped by the imagination. It was neither of those. It was truly happening before us. We had watched history being made in Bangladesh in the nine agonising months of Pakistani repression. And here, right before us, stood the man whose inspirational leadership had finally thrown open the doors of freedom for us.
It was a million-strong crowd that welcomed the Father of the Nation back home that winter afternoon. He spoke of the millions who had been murdered by Pakistan, of the homes and villages and towns ravaged during the war. He bade farewell to Pakistan and wished Zulfikar Ali Bhutto well. He quoted Tagore. And he wept.
 For the first time in his public career, before the world, Bangabandhu shed tears in remembrance of the terrible ravages Bangladesh had gone through in the preceding nine months. And we in the crowd and across the country remembered, at that instant, how seventy five million Bangalees had worried about his safety, how they had prayed for his life and for him to return home. For nine months, we had no way of knowing where he was or whether he was alive or dead.
It was only Pakistan's defeat in Bangladesh and the surrender of its 93,000 soldiers in December 1971 that perhaps saved him. Zulfikar Ali Bhutto, having played a diabolical role throughout the war, nevertheless recognised the folly of keeping the leader of a now free nation imprisoned in alien land.
In the early hours of January 8, 1972, Bhutto bade goodbye to Bangabandhu at Rawalpindi's Chaklala airport. As the aircraft took to the skies, Pakistan's new leader told no one in particular, “The nightingale has flown.” Hours later, on a cold dawn in London, Bangladesh's president, for that was what Bangabandhu had been since April 1971, descended at Heathrow. For the first time since the beginning of the war for Bangladesh's liberation, the world knew that Sheikh Mujibur Rahman was alive. The Bangalee leader cheerfully told a crowded news conference at Claridge's later in the day, “As you can see, gentlemen, I am alive and well.” And then he went on to offer a near lyrical account of his sentiments on being a free soul once more:
“Gentlemen of the world press, I am happy to share in the unbounded joy of freedom brought about by an epic liberation struggle waged by the people of Bangladesh. No people have had to  shed so much blood for freedom as my people have . . .”
Here at home, in the coldness of a January evening, we laughed and then we wept. Bangabandhu was coming back home. As we leapt and skipped and ran, in that order, all the way home in the twilight glow of January 10,  1972, we knew we now inhabited a land "where the mind is without fear and the head is held high, where knowledge is free . . . where tireless striving stretches its arms towards perfection . . ."
It felt good to belong, with Bangabandhu, in the sovereign republic of Bangladesh.

Govt fails to protect Hindus

Says HR boss
Star Report Hindus across the country are still living in fear as alleged BNP-Jamaat men unleashed fresh attacks in five districts, burning homes, temples, and vandalising idols on Wednesday night and yesterday.
The minorities continue to receive threats as well.
Mizanur Rahman, chairman of National Human Rights Commission, while visiting Malopara of Abhaynagar in Jessore yesterday, said the government had failed to protect the Hindus and urged it to rehabilitate the affected.
At least 19 BNP-Jamaat men were arrested yesterday, 14 in Dinajpur, three in Bagerhat and two in Mymensingh. Apart from them, 774 reportedly BNP-Jamaat men were sued in Rangpur in connection with atrocities on Hindus.
On Wednesday night, criminals set fire to two temples in two villages of Bagerhat and two more at Kathom in Nandigram of Bogra.
Panic gripped the Hindus of Ramchandrapur in Morrelganj, Bagerhat, and in Nandigram, Bogra, when criminals vandalised several idols of Hindu gods before setting two temples on fire Wednesday night.
Law enforcers, including army and Rab personnel, visited the spot in Bagerhat yesterday morning and picked up three people for interrogation.
Police arrested two pro-BNP Jubo Dal activists while they were attempting to torch a temple at Kanihari in Trishal of Mymensingh yesterday morning. Locals had foiled their attempt to torch a temple, said Firoj Talukder, officer-in-charge of Trishal Police Station.
Meanwhile, criminals torched six hay heaps belonging to Ajit Chandra Mondal at Gangadaspur of Phulbari in Dinajpur early yesterday.
Criminals allegedly torched two houses of Rajib Acharjee at Enayetpur of Hathazari in Chittagong early yesterday. Firemen doused the flames around 4:30am.
Even though fire service officials claimed that they found no evidence of foul play, Rajib's nephew was adamant the houses were set on fire by criminals.
Hundreds of Hindu families of villages in Thakurgaon have been living in fear of attacks by BNP-Jamaat goons since the eve of the elections. They have formed neighbourhood watches.
Anil Sen, 35, of Deogaon, told The Daily Star that they had stopped going to Cheradangi Hat since election day fearing Jamaat-BNP attacks on them.
They alleged that people who had moved into the locality in the 1960s were the ones threatening the people who had been living there for ages.
Meanwhile, the Hindus who had left Kornai village of Dinajpur following attacks on them have started to return to their homes.
“We are yet to start our businesses,” said Raj Kumar, who used to run a pharmacy in Kornai Bazar. His shop was looted, vandalised and set on fire.
Akash Chandra Roy of an affected family said young girls and housewives were still staying away from the village.
NHRC VISITS MALOPARA
Chairman Mizanur Rahman yesterday said, “It is the duty of the government and the state to provide every citizen of the country with security.”
The Hindus of Malopara are now too scared to venture out of the village. Jamaat-Shibir activists were still threatening them, Kaushola Sarker, an elderly woman, told The Daily Star when he visited the village with the NHRC chairman.
“We will see how many days police will protect you,” Kaushola quoted a Jamaat-Shibir man as saying to them. 
A large number of the young females of the community were staying out of the village. Resident Doyamoy Sarkar said, “I sent my daughter-in-law Parboti Sarkar to her father's house as we feel the village is not safe for us.”
The Jessore district administration yesterday formed a three-member probe body led by ANM Mainul Islam, additional deputy commissioner, to probe the incidents of attacks on the minorities. It was asked to submit its report in three working days.

Shun violence, engage in talks

EU urges all parties; China, Korea also call for peace
Diplomatic Correspondent The European Union has called on all political parties in Bangladesh to refrain from violence and engage in a dialogue to agree on a mutually acceptable way forward to hold “transparent, inclusive and credible elections”.
In a statement yesterday, High Representative Catherine Ashton, on behalf of the EU, said the High Representative had taken note of the preliminary results and of reports of a “low turnout” for the 10th parliamentary polls held in Bangladesh on January 5.
In her statement, she strongly condemned the acts of violence, which occurred in the run-up to and during the elections and particularly attacks against the most vulnerable populations, including women and children as well as religious and ethnic minorities.
She regrets the loss of life and extends her condolences to the families of the victims.
“As part of our bilateral relations, the EU has consistently engaged with Bangladesh to support the consolidation of democracy. In this context, the EU has repeatedly called on all parties to create favourable conditions for transparent, inclusive and credible elections,” she said.
She, therefore, regrets the fact that such conditions did not materialise and that “the people of Bangladesh were not given an opportunity to express fully their democratic choice”.
The EU also urges the political parties to engage in a genuine dialogue to agree on a mutually acceptable way forward to hold transparent, inclusive and credible elections, putting the interests of the people of Bangladesh first, Catherine Ashton said in her statement.
CHINA, KOREA DEPLORE VIOLENCE
China and Korea have expressed deep concern over the widespread violence centring on the January 5 parliamentary polls, and called for an inclusive political process, and the restoration of peace and stability.
According to a report of Beijing-based news agency Xinhua: “China said yesterday (Thursday) it hopes that parties in Bangladesh can realise political stability through talks and negotiation after its parliamentary election.”
Voting took place on Sunday but was plagued by widespread violence and an opposition boycott over Prime Minister Sheikh Hasina's refusal to listen to demands to step down and appoint a neutral caretaker government to oversee the election, the report said.
The report quoted a Chinese foreign ministry spokeswoman Hua Chunying, who yesterday told a press briefing: "We noted that Bangladesh's parliamentary election had been completed on Jan 5. As a friendly neighbour of Bangladesh, China is concerned about the country's national situation."
China hopes political forces in Bangladesh can give priority to national long-term and fundamental interests, and hold talks and consultation in efforts to realise political and social stability, as well as economic development, the report adds.
Meanwhile, South Korean Ambassador in Dhaka Lee Yun-young yesterday in a statement on the 10th parliamentary election of Bangladesh said: “We are deeply concerned over the violence which has happened surrounding the election held on January 5.”
“As a long-standing friend of the People's Republic of Bangladesh, we hope that through an inclusive political process where the will and aspirations of the Bangladeshi people can be duly reflected, Bangladesh will overcome the current situation and restore the peace and stability as early as possible,” he added.

Violence revisits as no step taken

M Rahman
Violence revisits as no step taken
A Hindu woman with an infant on her back in front of the devastation at Karnai village of Dinajpur yesterday. The village witnessed one of the worst incidents of violence against the minorities after the January 5 elections. Photo: Star
Around three years ago, a judicial commission that probed the 2001 post-polls violence had made some recommendations to stop the recurrence of such atrocities, but the suggestions went totally unheeded.
"Had the government implemented our recommendations, the recent attacks on the minorities could have been prevented," said Mohammad Shahabuddin, chief of the three-member judicial commission who is now serving as a commissioner at the Anti-Corruption Commission.
The judicial commission recommended setting up an investigation committee or commission in each district to bring to book the perpetrators who killed 355 people and committed 3,270 other offences between October 2001 and December 2002.
It also suggested forming a monitoring cell in the home ministry to coordinate the activities of the district investigation committees and providing legal assistance to the victims.
After this year's January 5 parliamentary polls, houses, business establishments and temples of the Hindu community were vandalised, torched and looted in Jessore, Satkhira, Dinajpur, Thakurgaon, Bogra, Chittagong and Rangpur which dislodged hundreds of Hindu people.
Since the submission of the commission's report on April 24, 2011, the only step the government had taken so far was lodging 140 cases against some top BNP and Jamaat-e-Islami leaders, including Altaf Hossain Chowdhury, Salauddin Quader Chowdhury, Joynal Abedin also known as VP Joynal, Nadim Mostafa and Matiur Rahman Nizami, said a top official of the home ministry.
However, the perpetrators of 2001 post-polls violence in remote areas remained at large, said several home ministry officials.
A top official of the ministry, wishing anonymity, said if the government had brought to book all the culprits of the 2001 post-polls violence, such brutality would not have happened.
According to the judicial commission's report submitted to then home minister Shahara Khatun in the presence of her deputy Shamsul Haque Tuku, the district investigation committees should be composed of additional district magistrate, additional superintendent of police and an executive magistrate.
These committees should be tasked with reviving the cases dropped by the BNP-led four-party alliance government that came to power through the 2001 polls and carrying out thorough investigation to identify the culprits.
As per the commission's report, during the tenure of the four-party alliance, 409 cases had been filed in connection with the post-polls violence, out of which police submitted final reports in 145 cases.
Mohammad Shahabuddin told The Daily Star that his commission had identified around 22,000 persons involved in the violence. He, however, said the findings had not been incorporated in the report.
Several home officials said though the commission had identified almost all the criminals, the government mysteriously did not proceed with the findings.
Asked why, Senior Home Secretary CQK Mustaq Ahmed told The Daily Star that the report had been submitted long before his joining the office; so he did not know the situation in this connection.
State Minister for Home Shamsul Haque Tuku declined to make any comment when asked about this matter.
After a 16-month investigation that began in December 2009, the Shahabuddin commission revealed that more than 3,625 offences, including killing, rape, arson and looting had been committed by the then ruling BNP-Jamaat alliance.

No tolerance for violence

PM warns of lawful action
Partha Pratim Bhattacharjee Prime Minister Sheikh Hasina has said those who provoke violence and announce violent programmes as well as those who are seen taking part in them will be brought to book.
She cautioned that her new government would not tolerate any further agitation that jeopardises lives and property, adding that it would go tough against any move to create anarchy.
Hasina, prime minister of the polls-time cabinet, made the remarks during the maiden meeting of the Awami League Parliamentary Party (ALPP) of the 10th Parliament at the Sangsad Bhaban yesterday.  
The AL chief asked her party lawmakers to visit their own constituencies and work with people to help maintain law and order. 
The party would form the government on Sunday by taking oath at Bangabhaban.
"Tough action will be taken against the opposition if they go for further violence...," a party lawmaker who attended the meeting quoted Hasina as saying.
BNP leaders Selima Rahman, Khandaker Mahabub and Hafiz Uddin Ahmed were arrested immediately after they announced agitation programmes of the BNP-led 18-party alliance.
Sheikh Hasina said BNP had made a mistake by not contesting the national polls, according to the meeting sources. "We had showed our patience. But we will spare no one for taking an anti-people stand," she said.
The AL president asked the party lawmakers to maintain strong ties with their own constituencies and make the party grassroots strong. "MPs are accountable to their constituencies, and so they all have to maintain good relationships with their own constituencies and evaluate party activists.”
Hasina asked the MPs of the areas where minorities are being attacked to reach out and provide shelter to the victims.
The meeting sources said Hasina was unanimously elected leader of the ALPP. AL General Secretary Syed Ashraful Islam proposed her name as the leader, which was seconded by Chief Whip Abdus Shahid. All the other lawmakers then clapped and supported Shahid.
"I have been in charge of this several times,” Hasina cheerfully said. “Please choose a new face. Why should I be chosen repeatedly?"
She urged all her party lawmakers to take up full responsibility since the country is going through a critical moment, and the party is going to run the state under these circumstances.
Before the meeting, members of the AL advisory council and two former advisors to the prime minister HT Imam and Mashiur Rahman had entered the room where the AL lawmakers were taking oath, the sources said. The AL president said those who were not elected should leave. Chief Whip Abdus Shahid also requested them to leave.

Recess for 2 days

Nonstop blockade resumes Sunday; some long route buses start plying
Star Report
The BNP-led 18-party opposition alliance last night suspended its ongoing countrywide blockade of roads, rail and waterways for today and tomorrow in consideration of what it termed as people's sufferings.
BNP chairperson's adviser Osman Faruk made the announcement through a video message.
The non-stop blockade, which started on New Year's Day, will resume on Sunday, he added.
The opposition combine will organise its earlier scheduled Doa Mahfil (prayers) today for the salvation of the departed souls of its leaders and activists, who died on January 5. The alliance will also stage protest rallies across the country tomorrow.
Inter-district buses operated on a limited scale from Wednesday night, braving arson attacks during blockades, which put the sector in dire straits,
sector insiders said.
Bus operators made such a decision as their back was against the wall. Stuck in different places, people also boarded buses at risk to their lives.
“I had planned to come to Dhaka on January 6 from my village home in Rangamati as my classes were scheduled for the following day. But I couldn't find any option to reach Dhaka,” said Gaurab Chakma, a student at a private college in Uttara.
Gaurab started for Dhaka from Rangamati by a bus of Dolphin Paribahan yesterday evening.
“If I don't drive the bus, I won't be able to feed my family. Being a bus driver, I don't have any savings either,” said driver Ershadul Alam at Gabtoli Bus Terminal yesterday afternoon.
More than 100 buses left the terminal throughout the day yesterday, said Abdus Sobhan, lessee of the terminal.
Some inter-district buses also operated in Sylhet, Moulvibazar, Chittagong, Cox's Bazar, Rajshahi, Chuadanga, Kushtia and Meherpur since Wednesday afternoon. No unwarranted incident was reported, except for the one in Jessore. 
A trucker and his helper were injured as blockaders hurled a petrol bomb at the vehicle on the Jessore-Benapole highway at Natunhat around 8:45pm on Wednesday.
Driver Mohammad Dalim suffered burns on his face and hands, while helper Sohag sustained minor injuries.
As the fire engulfed the driving cabin, the driver lost control over the wheels and the truck skidded into a roadside ditch, said injured Sohag.
The two were undergoing treatment at Jessore Medical College Hospital.

News Analysis:Dubious distinction for Bangladesh


Shakhawat Liton Bangladesh set an unenviable record yesterday by constituting a new parliament, keeping the existing one in force. It means the country has now two MPs for almost every single seat.
This bizarre record follows the other unprecedented event of uncontested election of 153 MPs, more than half of the total seats in the House for direct election, in the just concluded polls. And all the credit for this goes to the Awami League government led by Sheikh Hasina that has led the country to set the record which will in no way strengthen democracy and brighten the country's image.
None can find such a record in the countries practising parliamentary democracy. Countries like the UK, birthplace of the Westminster style of parliamentary democracy, New Zealand, Australia and Canada go to general elections through dissolving their parliaments. So, the question of constituting one parliament keeping the existing one in existence does not arise in those countries.
India is only exceptional. Over the past 60 years, it has held 15 general elections. Of them, parliament, popularly known as Lok Sabha, existed during the general election on eight occasions. Sometimes parliament was dissolved after the election process had begun.
But none of the previous parliaments was constituted keeping the existing one in force. The rest of the time parliament was dissolved much earlier than its tenure ended due to political instability within the House and general elections were held after their dissolution.
India's first parliament was constituted on April 17, 1952 following a general election held in the same year. That parliament existed when the general election to the second parliament was held in 1957. But the first parliament was dissolved on April 4, 1957, paving the way for new MPs to take the oath to constitute the second parliament next day. 
India never deviated from this as the 14th Lok Sabha was dissolved by the president on the recommendation of the union cabinet on May 18, 2009, paving the way for the constitution of the newly elected 15th Lok Sabha which still exists. And election to the 16th Lok Sabha is set to begin in mid April this year.
Many policymakers of the ruling Awami League and the government had earlier cited the Indian instances in defence of holding the general election without dissolution of the current parliament. But the abnormal record they created yesterday by having the new MPs-elect take the oath of office does not conform to the tradition set through the Indian practice.
In making the record of constituting the 10th parliament and yet keeping the ninth in force, the government has clearly ignored the constitution which in Article 123 emphatically prevents MPs elected in the just concluded election from taking the oath of office.
In the opinion of some ruling AL leaders, the constitution does not impose any restriction on them regarding the swearing in of new lawmakers, but they will not assume office until the tenure of the current ninth parliament expires on January 25. But this explanation falls flat as Article 148 clearly says a person required to take the oath of office before he enters upon office shall be deemed to have entered upon the office immediately after he takes the oath. So, the MPs who took the oath yesterday have assumed office.
The formation of the 10th parliament has been mired in legal controversy. As such, the legality of the new cabinet to be formed on Sunday will also invite constitutional controversy since the government will be a product of the new parliament.
 And no action of the government and the new parliament will be free from scrutiny on legal grounds.

Security goes after 23 years

Khaleda's Protocol

Security goes after 23 years

Rashidul Hasan and Prabir Barua Chowdhury
BNP Chairperson Khaleda Zia, who had been elected either prime minister or leader of the opposition since restoration of democracy in 1991, is going to enjoy neither of these status this time.
As Sheikh Hasina is all set to become the prime minister for two successive terms with a new cabinet taking charge on Sunday and Jatiya Party presidium member Raushan Ershad is set to play the role of leader of the opposition, Khaleda is losing all state facilities for the first time in more than two decades.
Her party has meanwhile sought Ansar members from the government to guard the chairperson's residence following the recent withdrawal of police protocol.
Khaleda, whose opposition combine has boycotted the January 5 polls in favour of the demand for a caretaker system, has lost the position of opposition leader with yesterday's oath taking of MPs-elect and selection of a new leader of the opposition, which is equivalent to the rank of a full-minister, according to well-informed sources.
The BNP chief, who had been premier twice and lawmaker four times since the fall of military dictator HM Ershad in 1990, enjoyed state facilities either as a prime minister or as an opposition leader till December 2013.
The BNP-led 18-party opposition alliance boycotted the January 5, 2014 controversial election. The opposition has been staging anti-government movement since 2011 demanding holding of the 10th parliamentary polls under a non-party caretaker government, which was rejected by Sheikh Hasina, who termed the demand unconstitutional.
Jatiya Party that bagged 33 seats in the January 5 election [20 of them elected unopposed] at a meeting yesterday at the Jatiya Sangsad Bhaban elected Raushan Ershad, wife of the former military dictator, as the leader of the opposition and chief of the JP Parliamentary Party.
Interestingly, a JP influential leader close to ruling Awami League yesterday told reporters the party would also remain in government alongside in the opposition bench.
The JP is likely to send a resolution of the meeting informing Speaker Shirin Sharmin Chaudhury to take measures to that end, its lawmaker Mujibul Haque Chunnu told The Daily Star.
Earlier, the government withdrew police protocol from Khaleda's residence on December 28, while ruling AL General Secretary Syed Ashraful Islam yesterday termed the BNP chief former leader of the opposition.
As the leader of the opposition the BNP chief maintained an office at Jatiya Sangsad Bhaban. She was also entitled to get a private secretary, an assistant private secretary, two personal assistants, three office assistants, three peons, a full-time chauffeur-driven car and all logistic supports for the office.
She was also entitled to get a cook and other supporting staff in case of her staying at her government residence. The BNP chief however resides in a rented house at city's Gulshan since 2010. The parliament canteen provided all entertainment facilities for her as the opposition leader.
According to the privilege act amended in 2010, the leader of the opposition gets a monthly allowance of Tk 53,100 and an official residence that would be furnished at a cost of Tk 5 lakh. If he/she lives elsewhere, he/she would receive Tk 25,000 per month.
Before withdrawing her security protocol, the Dhaka Metropolitan Police used to provide a security team of one head constable, one nayek and six constables. Besides, two gunmen from the Special Branch were on duty round the clock at Khaleda's residence.
The Parliament Secretariat also provided Khaleda with all utility services including water, electricity, gas, and telephone and mobile phone bills. The transportation pool provided her with two vehicles -- one official car and an additional jeep for official business.
Khaleda was first elected in five constituencies simultaneously in the fifth parliament and became the leader of the House and prime minister in 1991. She became the opposition leader in 1996 by winning the same number of seats. The BNP chairperson again became the prime minister in the eighth parliament in 2001-2006.
In the December 29, 2008 polls, Khaleda became the opposition leader as her party-led alliance won only 30 seats.

Wednesday 8 January 2014

এবার '৯৬ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না

এবার '৯৬ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না
সাক্ষাৎকার
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
সাক্ষাৎকার গ্রহণ :শেখ রোকন

সমকাল : সদ্য সমাপ্ত হলো দশম সাধারণ নির্বাচন। আপনার প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় পর্যবেক্ষকদের জোট ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে। আপনাদের মূল্যায়ন কী?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ : এ ব্যাপারে আমরা ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন তৈরি করেছি এবং প্রাথমিক বিবৃতি দিয়েছি। এ ব্যাপারে সংক্ষেপে বলতে গেলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না থাকায় এবং সার্বিক নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার কারণে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা কম ছিল। ফলে ভোট প্রদানের হার কম ছিল এবং বেশ কিছু সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। এবার যেহেতু অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হয়েছে এবং সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে যেহেতু শঙ্কা ছিল ইডবি্লউজি ব্যাপকভিত্তিক পর্যবেক্ষণের বদলে সীমিত পর্যবেক্ষণ করে। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের কার্যক্রম ভোট প্রদানের হার এবং ভোটকেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সার্বিকভাবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ না করায় আমরা এবার অনিয়ম বা জালিয়াতি ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না।
সমকাল : আপনারা কতটি প্রতিষ্ঠান এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই পরিসর কতটা বিস্তৃত ছিল?
কলিমউল্লাহ : ইডবি্লউজি বা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের ২৬টি সদস্য এনজিও ছাড়াও সদস্য নয় এমন সাতটি এনজিও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশ নেয়। সংখ্যালঘু বা আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা থেকে ওই সাতটি এনজিওকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম আমরা। আপনি জানেন, এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৪৭টি আসনে। আমরা পর্যবেক্ষণের জন্য ৪৩টি জেলার ৭৫টি সংসদীয় এলাকা বাছাই করি। এগুলোর ১,৯৫০টি ভোটকেন্দ্রে ৯,৭৫০ জন পর্যবেক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে ৮,৬৯৯ জনের জন্য অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পাই। তবে তার মধ্যেও ২২৫ জনকে নিরাপত্তাজনিত কারণে এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে আমরা পর্যবেক্ষণ কাজে ব্যবহার করতে পারিনি।
সমকাল :আমরা দেখছি, এবারের নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পর্যবেক্ষক আসেনি বললেই চলে। তারপরও আপনারা পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
কলিমউল্লাহ : দেখুন, এটা আমাদের দেশ। এখানকার নির্বাচন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া_ এসব ক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভর করব কেন? নিজেদের গরজেই আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, জানিপপ থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণের কাজ চলছে। এটা গত বছর মে মাসে শুরু হয়েছে। চলবে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে দীর্ঘমেয়াদি এই পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় মূল যেদিন, সেই ভোট গ্রহণের দিন পর্যবেক্ষণ না করার কোনো মানে হয় না।
সমকাল :আমরা দেখেছি, এবার 'আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক' বলতে দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশ থেকে চারজন মাত্র এসেছেন। এর ফলে এই নির্বাচনের আইনগত বৈধতা নিয়ে কি প্রশ্ন উঠতে পারে?
কলিমউল্লাহ : নির্বাচনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রপঞ্চ, সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনাকে এর উত্তর পেতে হলে বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাতে হবে। দেখা যায় প্রথম পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। ফাদার টিমের নেতৃত্বে সিসিএইচআরবি এই পর্যবেক্ষণ করে। ১৯৯১ সালে পঞ্চম সাধারণ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক আসে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনডিআই বা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট আসে এবং স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ে পর্যবেক্ষক গ্রুপ তৈরির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে। তাদের এখানে অবস্থানকালীন সময়ে আমাদের অনেকের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথাবার্তা হয়। ১৯৯৫ সালে আমরা গঠন করি জানিপপ। পরবর্তীকালে ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকমণ্ডলীর মনোযোগ আরও বাড়ে। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশ না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক গ্রুপগুলো উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। তখন বাংলাদেশে তিনটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপ ছিল_ সিসিএইচআরবি, ফেমা ও জানিপপ। জানিপপ তখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান। ফলে নিরাপত্তা ও ক্যাপাসিটি বিবেচনায় আমরা ঘোষণা দেই যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব না। বাকি দুটি প্রতিষ্ঠান পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়; ১৯ ফেব্রুয়ারি ফেমার পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয় যে এর গ্রহণযোগ্যতা নেই, বাতিল করতে হবে। সিসিএইচআরবিও একই ধরনের মত দেয়।
সমকাল :কিন্তু তারপরও তো ওই নির্বাচনের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হয়েছিল।
কলিমউল্লাহ :হ্যাঁ, হয়েছিল। কিন্তু প্রতিক্রিয়া তখন অন্য জায়গায় দেখা যায়। মার্চের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন রিলেশন্স কমিটির দুই প্রভাবশালী সদস্য সিনেটর রিচার্ড লুগার ও সিনেটর ক্লেবন প্যাল সেক্রেটারি অব স্টেটের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। সেখানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে তিনটি শর্ত যুক্ত করে। প্রথমত, বিএনপি ক্ষমতা ছেড়ে দেবে, তবে তাদের সেইফ এক্সিট দিতে হবে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ছেড়ে দিতে হবে এবং পরবর্তী সব নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সার্টিফায়েডে হতে হবে। আপনার মনে থাকার কথা, পরবর্তীকালে এগুলোই ঘটেছিল। যে কারণে পদত্যাগ করার পরও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি কোনো ঝামেলার মুখে পড়েনি। বরং সাড়ম্বরে 'জাতীয়তাবাদী মঞ্চ' তৈরি করেছিল। আর ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পর্যবেক্ষকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। এরপর ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম ও ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক গ্রুপগুলো ব্যাপক মাত্রায় অংশ নেয়। জাতীয় পর্যবেক্ষক গ্রুপেরও সংখ্যা বাড়ে। ২০০৬ সালে গঠিত হয় ইডবি্লউজি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আইআরআই বা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তাদের অফিস স্থাপন করে। ইইউ, কমনওয়েলথ, এনডিআই তো ছিলই। ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের পর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সাধারণ নির্বাচন কেমন হয়, সে ব্যাপারেও গোটা বিশ্বেরই আগ্রহ ছিল।
সমকাল : এবার কেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পর্যবেক্ষকরা আগ্রহ প্রকাশ করেননি?
কলিমউল্লাহ :একটা বড় বিষয় হচ্ছে নিরাপত্তাজনিত অনিশ্চয়তা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগেই একটি এসেসমেন্ট টিম পাঠিয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে তাদের প্রতীতি জন্মেছে যে, এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। একইভাবে কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক গ্রুপ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক গ্রুপও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই, আইআরআইও নিরাপত্তার ভরসা পায়নি।
সমকাল :নির্বাচনের আগে সহিংস পরিস্থিতি একটি বড় বিষয়, বোঝা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক না আসার আর কী কী কারণ থাকতে পারে?
কলিমউল্লাহ : আর একটি কারণ হচ্ছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার অংশগ্রহণমূলক না হওয়া। অধিকাংশ আসনে যখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হওয়াও এই নির্বাচনের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে।
সমকাল : আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক না আসায় নির্বাচনের বৈধতা কি প্রশ্নের মুখে পড়বে?
কলিমউল্লাহ :আমি তা মনে করি না। কারণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণই হচ্ছে মূল কথা। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি-না সেটাই মূল কথা। পর্যবেক্ষকরা আন্তর্জাতিক বা জাতীয় সেটা বিষয় নয়। আরেকটি বিষয় আছে, আমরা যখন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করি, তখন আমরা জাতীয় পর্যবেক্ষক। কিন্তু যখন বিদেশে যাই তখন তো আমরাও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব পর্যবেক্ষক এখানে আসেন, তারাও তো তাদের দেশের জাতীয় পর্যবেক্ষক। আর আমাদের জাতীয় পর্যবেক্ষকদেরও গত দুই দশকে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, অভিজ্ঞতা বেড়েছে। সংগঠন বিস্তৃত হয়েছে। জানিপপ থেকে আমরাও তো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিসর, মোজাম্বিক, জাম্বিয়া, নাইজেরিয়া, তিমুর, লেসোথো, গণচীনের হংকং, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নেপাল প্রভৃতি দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতায় আমরা এখন সমৃদ্ধ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক যেসব পর্যবেক্ষক গ্রুপের নাম সবাই জানেন, তাদের সবার সঙ্গে আমাদের যৌথ কার্যক্রম ও কর্মসূচি রয়েছে। আমাদের বলতে পারেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক গ্রুপেরই 'সিস্টার কনসার্ন'।
সমকাল : তার মানে, পর্যবেক্ষক জাতীয় না আন্তর্জাতিক নির্বাচনী বৈধতার ক্ষেত্রে সেটা ব্যাপার নয়?
কলিমউল্লাহ : না, পর্যবেক্ষণই ম্যাটার করে। পর্যবেক্ষক কোথাকার সেটা ম্যাটার করে না।
সমকাল :কেউ কেউ মনে করছেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক না আসার পেছনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রেসক্রিপশন না মানার বিষয়টিও রয়েছে। আপনি কী মনে করেন?
কলিমউল্লাহ :হ্যাঁ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এর পেছনে কাজ করেছে। তবে এবারের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ কমে যাওয়ার দায় কেবল সরকারের নয়। বিরোধীদলীয় জোটেরও দায় রয়েছে। কমবেশি হতে পারে, কিন্তু উভয় দলকেই দায়িত্ব নিতে হবে। আমি তো ঠাট্টা করে বর্তমান পরিস্থিতিকে বলি 'দুই দল প্রযোজিত চলচ্চিত্র'।
সমকাল :বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে মতভেদ স্পষ্ট হলো, সেটা কি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতার প্রশ্নে গুরুতর হয়ে দেখা দেবে?
কলিমউল্লাহ :আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে ভারত বা চীনের অবস্থান বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশ হচ্ছে তাদের ব্যাকইয়ার্ড। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে 'মনরো ডকট্রিন' রয়েছে। এর মূল কথা হচ্ছে, আমেরিকা ইজ ফর আমেরিকানস। একই ডকট্রিনে এশিয়া তো এশিয়ানদের হওয়ার কথা। ভারত ও চীন কোনোভাবে চাইবে না যে এখানে তাদের প্রভাব ছাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বাড়ূক। এখন ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট ফর ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্টাল।
সমকাল :১৯৯৬ সালের একতরফা নির্বাচনের পর যে আমেরিকান প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সংকটের সমাধান হয়েছিল, সেটা তো আপনিই বললেন।
কলিমউল্লাহ : সেদিন আর নেই। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরপরই নব্বই দশকে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রভাববলয় ছিল, সেটা আর আগের মতো নেই। অন্যদিকে ভারত ও চীন এখন আঞ্চলিক শক্তি তো বটেই, তারা পরাশক্তি হওয়ার পথে রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র চাইলেই এখন আর যে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। দূরবর্তী পরাশক্তির উপদেশ বা ভর্ৎসনার চেয়ে বাংলাদেশের জন্য এখন আঞ্চলিক শক্তির অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ।
সমকাল :তার মানে, ১৯৯৬ সালের একতরফা নির্বাচনের পর যে পুনর্নির্বাচন করতে হয়েছিল সেটা হচ্ছে না?
কলিমউল্লাহ :আমি মনে করি না, এবার ১৯৯৬ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে। যদি আরও স্পষ্ট করে বলি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনের কলা আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে খেয়ে ফেলেছে। এখন আছে খোসা। সেই খোসা নিয়ে খেলতে গিয়ে এবার বিএনপির পা হড়কে গিয়েছে।
সমকাল :দেখা যাক, ভবিষ্যতে বিষয়গুলো সম্ভবত আরও স্পষ্ট হবে। আমাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
কলিমউল্লাহ :ধন্যবাদ।

ভোটার উপস্থিতির হার ৪০ দশমিক ৫৬ ভাগ

বেশি ভোট গোপালগঞ্জ-২ কম ঢাকা-১৫ আসনে

সাইদুর রহমান
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনুষ্ঠিত আসনগুলোর ভোটের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী সারাদেশের ১৩৯টি আসনে গড়ে ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। কমিশনের তথ্য মতে, এসব আসনে মোট ভোটার ৪ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৩৭১। তাদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ কোটি ৬৫ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৪ জন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পেয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ২১ হাজার ৩০৯টি। শতকরা ভোট পেয়েছে ৭২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। রাজধানী ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ৮ আসনে শতকরা ভোটার উপস্থিতির হার ২২ দশমিক ৮১ ভাগ। নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ-২ আসনে। এখানে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭০ ভোটের মধ্যে প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৫ ভোট। প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ৯০ দশমিক ৩৬ শতাংশ। সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আর কম ভোট পড়েছে ঢাকা-১৫ আসনে। ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৬ ভোটের মধ্যে বৈধ ভোট পড়ে মাত্র ৩৪ হাজার ৩০৭টি। যা শতকরা ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এবারের নির্বাচনে ভোট বাতিল হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৫৮১ টি।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ৮টি স্থগিত আসন বাদে ২৯২টি আসনের মধ্যে তারা পেয়েছে ২৩২টি আসন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ৩৩, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৫ ও জাতীয় পার্টি (জেপি), তরীকত ফেডারেশন ও বিএনএফ ১ টি করে আসন পেয়েছে। আর ১৩টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। নবম সংসদে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩০টি আসন। জাতীয় পার্টি ২৭, জাসদ তিন, ওয়ার্কার্স পার্টি ২ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪টি আসন পেয়েছিলেন। ৫ জানুয়ারি ১৪৭ আসনে ভোট গ্রহণ হলেও নির্বাচনী সহিংসতায় ৫৪১ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। ফলে ৮ টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। এসব আসনের ২০৫টি স্থগিত ভোট কেন্দ্রে আগামী ১৬ জানুয়ারি পুনঃভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে ১২টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ইসির হিসাব অনুযায়ী দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ১২০টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ২১ হাজার ৩০৯ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা ৭২ দশমিক ৫৯ ভাগ। জাতীয় পার্টি ৬৬ আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৮ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা ৭ দশমিক ২১ ভাগ। ওয়ার্কার্স পার্টি ১৬ টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৫ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা ২ দশমিক ১৯ ভাগ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ২১ টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ৭৬৫ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা ১ দশমিক ২৫ ভাগ। তরীকত ফেডারেশন ৩টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৩ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা শূন্য দশমিক ৭৮ ভাগ। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট-বিএনএফ ২২ টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৯৯০ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা শূন্য দশমিক ৬৬ ভাগ। জাতীয় পার্টি-জেপি পেয়েছে ৭৮ হাজার ৬৬৫ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা শূন্য দশমিক ৪৮ ভাগ। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ৬টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ৭ হাজার ১২০ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শূন্য দশমিক শূন্য ৪ ভাগ। খেলাফত মজলিস ২টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ৫ হাজার ৭২৫ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শূন্য দশমিক শূন্য ৪ ভাগ। গণফ্রন্ট ১টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ২ হাজার ৭১৭ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শূন্য দশমিক শূন্য ২ ভাগ। ইসলামী ফ্রন্ট ১টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ২ হাজার ৫৮৫ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শূন্য দশমিক শূন্য ২ ভাগ। গণতন্ত্রী পার্টি ১টি আসনে অংশ নিয়ে পেয়েছে ২ হাজার ৩১ ভোট। যা উপস্থিত ভোটারের শূন্য দশমিক শূন্য ১ ভাগ। এছাড়াও ১০৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী এই নির্বাচনে ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬৬৬ ভোট পেয়েছেন। যা উপস্থিত ভোটারের শতকরা ১৪ দশমিক শূন্য ৭ ভাগ।
সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভোট
নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ-২ আসনে। এখানে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭০ ভোটের মধ্যে প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৫ ভোট। প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ৯০ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলুল করিম সেলিম পেয়েছেন ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯১ ভোট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে। ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫১ ভোটের মধ্যে বৈধ ভোট পড়ে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬১৫ ভোট। শতকরা ভোট পড়েছে ৮৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ আসনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা পান ১ লাখ ৮৭ হাজার ১৮৫ ভোট। যা শতকরা ৮৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর গোপালগঞ্জ-১ আসনে শতকরা ভোট পড়ে ৮৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এছাড়াও ভোলা-৩ আসনে ৭১ দশমিক ৫২ শতাংশ, লালমনিরহাট-১ আসনে ৭০ দশমিক ৪৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে ভোট পড়ে ৬৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ, বরিশাল-৪ আসনে ৬৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, শেরপুর-১ আসনে ৬৮ দশমিক ৩২ শতাংশ, কুমিল্লা-৫ আসনে ৬৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। সর্বনিম্ন ভোট পড়ে ঢাকা-১৫ আসনে। এই আসনে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৬ ভোটের মধ্যে প্রদত্ত ভোট মাত্র ৩৪ হাজার ৭৫৪টি। যা শতকরা ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার ৩০ হাজার ৯৫ ভোট পান। বগুড়া-৪ আসনেও কম ভোট পড়েছে। ২ লাখ ৮৩ হাজার ২৪০ ভোটের মধ্যে প্রদত্ত ভোট ৩৬ হাজার ১০৭। যা শতকরা ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এছাড়াও চট্টগ্রাম-১১ আসনে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ঢাকা-৪ আসনে ১৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ঝিনাইদহ-৩ আসনে ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ, সাতক্ষীরা-২ আসনে ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ, রংপুর-৩ আসনে ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ঢাকা-১৭ আসনে ১৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, ঢাকা-১৬ আসনে ১৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, মৌলভীবাজার-২ আসনে ২০ দশমিক ২৯ শতাংশ।

Remittance inflow reaches $6,778 million in H1

The remittance inflow to country reached at $6,778.57 million in the first half (H1) of the current 2013-14 financial year.
The amount was slightly lower than the inflow in July- December period of the last 2012-13 fiscal year due mainly to the ongoing political instability and continuous fall of US dollar against Taka.
Expatriate Bangladeshis, however, remitted $1216.49 million in December, which was significantly higher than the remittance inflow of $1061.45 million of November.
Market analysts said the remittance rose again in December as Bangladeshi living abroad sent home more money to help their family members meet various types of end-year expenditures.
Of the total remittances in December, 29 private commercial banks have collected the highest amount of $780.47 million when the four state-owned banks $405.58 million, nine foreign banks $15.41 million and four specialised banks sent $15.03 million.

সহিংসতায় জাতিসংঘ যুক্তরাষ্ট্র জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্বেগ

অর্থবহ সংলাপের আহ্বান
ইত্তেফাক রিপোর্ট
বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। পৃথক পৃথক বিবৃতি ও প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতিসংঘ ও উল্লেখিত দেশগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থবহ সংলাপে বসার আহবানও জানানো হয়েছে।নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় হতাশা ব্যক্ত করে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, সকল পক্ষকে সংযত আচরণ এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী জরুরিভাবে কাজ করতে হবে। সোমবার মহাসচিবের মুখপাত্রের দেয়া এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নির্বাচনে প্রাণহানি ও সহিংস ঘটনায় বান কি মুন মর্মাহত। রাজনৈতিক দলগুলো একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূক নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি তার আক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। বান কি মুন মত প্রকাশের জন্য শান্তিপূর্ণ ও সহায়ক পরিবেশ তৈরির আহবান জানিয়ে বলেন, সহিংসতা ও মানুষের উপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সকল পক্ষকে একটি অর্থবহ সংলাপ শুরুর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় জাতিসংঘ সহায়তা করে যাবে। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপ-মুখপাত্র মারি হার্ফ বলেন, গণতন্ত্রে সহিংসতার স্থান নেই। আমরা সকল পক্ষের সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কোন পরিকল্পনা করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মারি হার্ফ বলেন, বাছাইকরণের (সিলেকশন) বিষয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট করেছি। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পালনের এখনো সুযোগ রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বাংলাদেশেকে অনুদান বন্ধ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভবিষ্যত সম্পর্কের ভিত্তিতে তা নির্ধারিত হবে তবে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। এছাড়া বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সমন্বয় হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকাস্থ জাপানি রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা বলেছেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় জাপান গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সকল ধরনের সহিংসতা ও জনগণকে ভীতসন্ত্রস্তকারী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। তিনি জানান, সংসদ নির্বাচনের আগে বড় দলগুলো রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় জাপান গভীরভাবে হতাশ হয়েছে। দেশটি আশা করে, বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক পছন্দ বেছে নিতে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ বলেন, অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় দুই দলের দায় রয়েছে। নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে বৈধ হলেও এ নির্বাচনে কম আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ও ভোটার উপস্থিতিও ছিল কম। সকল পক্ষকে সহিংসতা পরিহার করার ও বাংলাদেশে আরেকটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহবান জানিয়েছে দেশটি।

ফেনী ও সিরাজগঞ্জে পেট্রোল বোমা হামলায় দুইজন নিহত চট্টগ্রামে টেম্পোচালকের শরীরের ৮০ ভাগ ঝলসে গেছে

ইত্তেফাক ডেস্ক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া যাত্রাসিদ্দি নামক স্থানে সোমবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা একটি কাভার্ডভ্যানে পেট্রোল বোমার হামলা চালালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এর চালক শাহ আলম (৩০) নিহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে
ভর্তি করা হয়েছে কাভার্ভ ভ্যানের হেলপার আল আমিনকে (২৫)।এদিকে, সিরাজগঞ্জে ট্রাকে হরতালকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। নলকা-হাটিকুমরুল মহাসড়কের সলঙ্গা থানার হোড়গাড়ি এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মিলন (২৫)। তিনি একজন আলু ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের পেট্রোল বোমা হামলায় মিতুল নামে এক টেম্পো চালকের শরীরের ৮০ শতাংশই ঝলসে গেছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা অব্যাহত আছে। আমাদের অফিস, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:
সিরাজগঞ্জ: গত রাতে হতাহতদের পরিচয় তাত্ক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পরে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি আলু ব্যবসায়ী এবং ট্রাকে করে আলু নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন। আহত তিনজনকে আশংকাজনক অবস্থায় সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আলী ফরিদ আহম্মেদ জানান, উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী আলু বোঝাই ট্রাকটি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হরতাল সমর্থকরা তাতে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি মহাসড়কের পাশে উল্টে যায়। সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ট্রাকের কেবিনে থাকা একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। দমকলবাহিনী এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করলেও ট্রাকের সামনের অংশ পুড়ে গেছে। 
পরশুরাম (ফেনী) : পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে গার্মেন্টস সামগ্রী নিয়ে কাভার্ডভ্যানটি ঢাকা যাচ্ছিল। সোমবার গভীর রাতে যাত্রাসিদ্দি নামক স্থানে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা কাভার্ড ভ্যানটিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। সাথে সাথে পুরো কাভার্ড ভ্যানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চালক শাহ আলম ও হেলপার আল আমিন নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য গাড়ি থেকে লাফ দেয়।
অগ্নিদগ্ধ দুজনকে পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে শাহ আলম মারা যায়। ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মহিউদ্দিন সোহেল জানান, শাহ আলমের মুখমন্ডলসহ পুরো শরীর ঝলসে গিয়েছিল। আল আমিনের মুখমন্ডল পুড়ে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। নিহত শাহ আলমের বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার জাগতপুর গ্রামে।
চট্টগ্রাম অফিস: পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১ টার দিকে টেম্পোচালক মিতুল তার টেম্পো নিয়ে নগরীর ষোলশহর থেকে বায়োজীদ বোস্তামী এলাকার দিকে যাচ্ছিল। পাঁচলাইশ থানাধীন পলিটেকনিক এলাকায় টেম্পোটি পৌঁছলে যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা হাত দেখিয়ে টেম্পোটি থামাতে বলে। টেম্পোর গতি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে দুর্বৃত্তরা টেম্পো লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে ঝলসে যায় মিতুলের শরীরের বিভিন্ন অংশ। মিতুল ভোলার দৌলতখান এলাকার মো. হান্নানের ছেলে। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই পঙ্কজ ইত্তেফাককে বলেন, অগ্নিদগ্ধ টেম্পোচালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৮০ শতাংশই পুড়ে গেছে।
অন্যদিকে, গতকাল সকালে নগরীর আশকার দিঘীর পাড় এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এক শিবির কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তবে পুলিশ তার নাম জানাতে পারেনি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছয় শিবিরকর্মীকে আটক করে। এছাড়া মিছিল করার সময় নগরীর বাকলিয়া এলাকা থেকে স্থানীয় ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আহমেদুল হককে আটক করে পুলিশ।
গাইবান্ধা : রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা সদরের সাথী সিনেমা হল এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুই দফায় পুলিশবহনকারী বাস, মালবোঝাই ট্রাকসহ কমপক্ষে ৩০টি গাড়ি ভাংচুর করেছে পিকেটাররা। এসময় পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত: ৬ জন নিরীহ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন উপজেলা সদরের গৃধারীপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে মাংস ব্যবসায়ী কছির উদ্দিন (৪৪), ফার্নিচার ব্যবসায়ী মুকুল মিয়া (৫২), নকটু মিয়ার ছেলে চামড়া ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া (২১), টাঙ্গাইল মিষ্টি ঘর'র মালিক দেলোয়ার হোসেন (৪৬), উপজেলা নুনিয়াগাড়ী গ্রামের তুহিন আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক হাফিজার রহমান (৫০) ও সেলুন ব্যবসায়ী পরীক্ষিত চন্দ্র শীল (৩৮)। এদের মধ্যে কছির উদ্দিন ও পরীক্ষিত চন্দ্র শীলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজশাহী অফিস : রাজশাহীর পবায় নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত: ২০ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে ভোটকেন্দ্রের দখল নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর আতঙ্কে বাঘা উপজেলার ৫টি গ্রামের শতাধিক পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এছাড়া হামলা-পাল্টা হামলার জেরে সোমবার রাতে বাঘা উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুজ্জামান মানিকের চাচাতো ভাইয়ের একটি প্রাইভেটকার পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে নির্বাচনের দিন চারঘাটে উপজেলার ঝিকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দেং পাটিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ১টি ককটেল হামলা, আগের রাতে কালাবিপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, পাইটখালীর ভোটার আনিসুর রহমানকে ভোটদানে বাধা প্রদান করে পিটিয়ে জখম, বামনদিঘীর ভোটার আব্দুর রহমানকে বাধা প্রদান করে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় চারঘাট মডেল থানায় বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা ৫টি মামলা করেছে।
কেশবপুর (যশোর) : যশোরের কেশবপুরে নির্বাচনোত্তর সহিংসতার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ১৩ নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাঁও): গতকাল সন্ধায় মিছিল করাকে কেন্দ্র করে পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাটে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জাবরহাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ অফিস সহ বেশকিছু দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন।