অর্থবহ সংলাপের আহ্বান
ইত্তেফাক রিপোর্ট
বাংলাদেশে
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায়
গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
পৃথক পৃথক বিবৃতি ও প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতিসংঘ ও উল্লেখিত
দেশগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে একটি অবাধ ও
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থবহ সংলাপে বসার আহবানও
জানানো হয়েছে।নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় হতাশা ব্যক্ত করে
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, সকল পক্ষকে সংযত আচরণ এবং জনগণের
প্রত্যাশা অনুযায়ী জরুরিভাবে কাজ করতে হবে। সোমবার মহাসচিবের মুখপাত্রের
দেয়া এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নির্বাচনে প্রাণহানি ও সহিংস ঘটনায় বান কি
মুন মর্মাহত। রাজনৈতিক দলগুলো একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূক নির্বাচন
অনুষ্ঠানে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি তার আক্ষেপের কথা জানিয়েছেন।
বান কি মুন মত প্রকাশের জন্য শান্তিপূর্ণ ও সহায়ক পরিবেশ তৈরির আহবান
জানিয়ে বলেন, সহিংসতা ও মানুষের উপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে
পারে না। সকল পক্ষকে একটি অর্থবহ সংলাপ শুরুর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন,
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় জাতিসংঘ সহায়তা করে যাবে। সোমবার
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে
উপ-মুখপাত্র মারি হার্ফ বলেন, গণতন্ত্রে সহিংসতার স্থান নেই। আমরা সকল
পক্ষের সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ
করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কোন পরিকল্পনা করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মারি
হার্ফ বলেন, বাছাইকরণের (সিলেকশন) বিষয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগের বিষয়টি
স্পষ্ট করেছি। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতি
বাংলাদেশের অঙ্গীকার পালনের এখনো সুযোগ রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশেকে অনুদান বন্ধ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
ভবিষ্যত সম্পর্কের ভিত্তিতে তা নির্ধারিত হবে তবে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো
তথ্য নেই। এছাড়া বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু
সমন্বয় হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। এদিকে
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকাস্থ জাপানি রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা বলেছেন, গত কয়েক
মাসে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় জাপান গভীরভাবে
উদ্বিগ্ন। সকল ধরনের সহিংসতা ও জনগণকে ভীতসন্ত্রস্তকারী কর্মকাণ্ডের তীব্র
নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। তিনি জানান, সংসদ নির্বাচনের আগে বড় দলগুলো
রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় জাপান গভীরভাবে হতাশ হয়েছে। দেশটি
আশা করে, বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক পছন্দ বেছে নিতে ভোট দেয়ার সুযোগ করে
দেয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জুলি বিশপ বলেন, অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় দুই
দলের দায় রয়েছে। নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে বৈধ হলেও এ নির্বাচনে কম আসনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ও ভোটার উপস্থিতিও ছিল কম। সকল পক্ষকে সহিংসতা
পরিহার করার ও বাংলাদেশে আরেকটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহবান জানিয়েছে
দেশটি।