ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১৯৪২ সালে ফরিদপুর জেলার হারোকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৫৭ সালে ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক,
১৯৫৯ সালে রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করেন এবং ১৯৬৩ সালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ লাভ করে স্ট্রাটক্লাইভ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং এ
মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি স্বদেশে ছিলেন রুরাল ওয়ার্কার্স প্রোগ্রাম এর প্রথম প্রধান প্রকৌশলি। তিনি দেশে ও
বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৩-৮০ পর্যন্ত উক্ত প্রোগ্রামের প্রজেক্ট ডাইরেকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি এলজিইডি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮০ সালে তিনি জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) তে প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন এবং আফ্রিকার সিয়েরা লিওন (৮০-৮৯), উগান্ডায়
(৮৯-৯০) এ পদে অত্যন্ত সুনাম ও যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর জাতিসংঘের উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ হিসেবে ৩০টি দেশ ভ্রমণ করেন। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্ণবাদী আক্রমণ থেকে প্রবাসী বাঙালিদের হেফাজতকল্পে মহারানী এলিজাবেথের সাথে দুবার ফলপ্রসূ বৈঠক করেন।
তিনি ছাত্রজীবনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ও
তাদের পরিবারবর্গকে নিরাপদ আশ্রয় এবং অর্থনৈতিক ও
মানবিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
তিনি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর বর্তমান ও সাবেক সভাপতি। তিনি ফরিদপুর বিভাগ ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কমিটির বর্তমান সভাপতি। তিনি বাংলাদেশি এসোসিয়েশন, গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড এর সাবেক সভাপতি।
ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১৯৯৯ সালে সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য ঝঊওচটচ জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি শিল্প ও বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ২০০১ লাভ করেন। তিনি ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে রাজস্বখাতে আনয়নে বিশেষ অবদান রাখেন। এ
ছাড়া তিনি ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন শিক্ষা ও
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা,
মসজিদ ও মন্দিরে ব্যক্তিগত ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন।
তিনি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি প্রবীণদের সেবার জন্য ঢাকা বিভাগের প্রথম শান্তিনিবাস ফরিদপুরে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেন।
তিনি সরকারি, আধাসরকারি ও
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রচুর সংখ্যক বেকার কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেন।
তিনি ক্রীড়ামোদী এবং বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তিনি ১৯৯৩ সালে পবিত্র হজব্রত পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিপত্মীক এবং ৩
সন্তানের জনক। তাঁর ৭ জন নাতিনাতনিও রয়েছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং প্রবাসী কল্যাণ ও
বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও
বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
২১ নভেম্বর ২০১৩ তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও
বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ১২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।