Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Monday 2 June 2014

তারকাদের “পর্ণো” আতঙ্ক



তারকাদের “পর্ণো” আতঙ্ক (ডেস্ক রিপোর্ট)
আতঙ্কে আছেন আমাদের দেশের গ্ল্যামারাস তারকা শিল্পীরা। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়শই ‘পর্নো ভিডিও’ গুজবের শিকার হচ্ছেন তারা। এক্ষেত্রে নারী তারকা শিল্পীদের নিয়ে এমন রটনা রটছে হরহামেশা। কিছুদিন পর পরই ফেসবুক-ইউটিউব হয়ে বিভিন্ন অখ্যাত অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ঝড় উঠে এসব পর্নো ভিডিও নিয়ে।
বারবার এমন সত্যতা „বেরিয়ে এলেও ইদানীং নিয়ম করে ঘটছে এমন পর্ণো ভিডিও গুজব। যে গুজবের সত্যতা নিশ্চিত করে অনেক অখ্যাত অনলাইন সংবাদ মাধ্যমও কাজ করে আসছে নিয়মিত। আর এমন মিথ্যা পর্ণো ভিডিও হামলার শিকার হয়েছেন সঙ্গীত তারকা মিলা, পড়শী, টিভি তারকা শখ, মীম, মেহজাবীন, তিশা প্রমুখ। আর এই ধারাবাহিকতায় সব শেষ যোগ হয়েছে সঙ্গীত তারকা আঁখি আলমগীরের নাম।
বেশ কয়েকিদন ধরে বিভিন্ন  অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এবং „ফেসবুকে “আঁখি আলমগীরের পর্ণো ভিডিও নিয়ে „তোলপাড়!” শীর্ষক একটি খবর „বেশ ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। সেই খবরে বলা হচ্ছে এবার প্রকাশ „পেল জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পী আখীর পর্ণো ভিডিও! এসব খবরে আরও বলা হয়, গুগল-ইউটিউব-„ফেসবুকে প্রকাশিত ১৮ মিনিট ৩৬ „সেকেন্ডের  এই পর্ণো ভিডিওটি আঁখির জ্ঞ্াতসারেই করা হয়েছে, যা „বোঝা যায় ভিডিওর শুরুতে তিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে টাটা „দেখিয়েছেন। এসব অনলাইন খবরে আঁখির কথিত পর্ণো ভিডিওটির সব খুঁটিনাটি দৃশ্যের রগরগে বর্ণনাও „দেয়া হয়েছে। আর এমন খবর পুরো মিডিয়ায় ১৫ দিন ধরে দুর্গন্ধ  ছড়াচ্ছে। খবরটি এবং ভিডিওটি এখন হু হু করে মানুষের হাতে পৗঁছে যাচ্ছে মুঠোফোনের „দৌলতে।
তবে ভিডিওচিত্রটি অনুসন্ধানে „দেখা „গেছে, এটি প্রকৃতপক্ষে  আঁখি আলমগীরের নয়। „যেমন নজির মিলেছে মিলা, মেহজাবীন, পড়শী, তিশাসহ অন্যদের কথিত পর্ণো ভিডিওর বেলায়। গবেষণা করে „দেখা যায়, আঁখির কথিত ভিডিওটি ভারতের তামিলনাড়ু অঞ্চলের। ভিডিওর পাত্রপাত্রীও „সেখানকার। ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউণ্ড মিউজিকে প্রথমে হিন্দিগান থাকলেও বর্তমানে এটির বিশ্বাসযোগ্যতা স্থাপনের  জন্য হিন্দিগানের বদলে সংযোগ করা হয়েছে বাংলা গান। ভিডিওটি ভারতীয় বিভিন্ন পর্ণো সাইটে ২০০৮ সাল „থেকেই ঘুরছে। আর এই ভিডিওটির পাত্রীর সঙ্গে আঁখির „চেহারার খানিক সাদৃশ্য  খুঁজে „পেয়ে „দেশীয়  একটি সংঘবদ্ধ চক্র তার নাম দিয়ে নতুন করে প্রকাশ করেছে অনলাইেন।
এ নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আঁখি আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা আসলে „কোন „দেশ „কোন সমাজে বসবাস করি তা বুঝতে পারছি না। একটি চক্র একটা মিথ্যা ভিডিও আমার নামে চালিয়ে দিচ্ছে। „সেটা নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম „বেশ রঙচটা নিউজ করছে। আমাকে একটিবার এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করারও প্রয়োজন „বোধ করলো না „কেউ। অথবা ভিডিওটি আদৌ সত্য না মিথ্যা „সেটাও খতিয়ে „দেখলো না। যার যা ইচ্ছা তাই করছে। অথচ এসব সাইবার ক্রাইম বা অপসাংবাদিকতা নিয়ে কারও „কোন মাথাব্যথা „নেই। „কোথাও „কোন জবাবদিহিতা „নেই। আমি জানি এসব নিয়ে আইনের আশ্রয়  নিতে „গেলেও „কোন সাপোর্ট­ পাবো না। আমাদের এমন অসহায় আত্মসমর্পণ আর কতদিন? কতদিন এভাবে মান-ইজ্জত হারাতে হবে জানি না। আমি সরকারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে করজোড় আবেদন করছি, দয়া করে এসব অপরাধীকে আপনারা চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যাবস্থা করুন। তা না হলে এসব ঘটনা মহামারী রুপ „নেব। আজ আমার মানহানিতে আপনি হয়তো মজা পাবেন, তবে কাল ঠিকই আপনার মানহানি ঘটবে একইভাবে। তাই সবার একসাথে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে „তোলা জরুরি।
এদিকে বছর „দেড়েক আগে একইভাবে প্রকাশ পায় পপ তারকা মিলার পর্ণো ভিডিও!  এমন ভিডিওর খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্টভাষী মিলা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সবার কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ভিডিওটির সত্যতা প্রমাণের জন্য। একই সঙ্গে মামলার হুমকি দেন ওই ভুয়া ভিডিও এবং সংবাদ পরিবেশনকারীদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদস্বরূপ তিনি টিভিতেও একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন। সে সময় অনেকেই বলেছেন, মিলার মতো সৎ সাহস নিয়ে এমন প্রতিবাদ করতে পারলে তারকাদের নিয়ে এসব বিব্রতকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা কমে যাবে। মজার বিষয় হলো, মিলার প্রতিবাদ এবং ভিডিওটি মিথ্যা প্রমাণের পরেও গেল দেড় বছরে হাফডজন জনপ্রিয় তারকার কথিত ‘পর্নো ভিডিও’ প্রকাশ পায়। সেসব ভিডিওর জের ধরে অনেক রঙচটা সংবাদও পরিবেশন হয়েছে বিভিন্ন অখ্যাত গণমাধ্যমে।
যার প্রায় সবক’টিই ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত কিংবা ভুক্তভোগী তারকারা এ নিয়ে সেই অর্থে মুখ খোলার চেষ্টাও করেননি গণমাধ্যমে। অনেকে মনে করেন তারকাদের এমন নীরবতার জের ধরেই এ জাতীয় ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। যার সর্বশেষ শিকার হলেন আঁখি আলমগীর। এদিকে মিডিয়া বিশ্লেষকদের মতে, তারকাদের পর্নো ভিডিও কেন্দ্রিক এমন রটনা বিশ্বে তো বটেই, বাংলাদেশেও বেশ পুরনো। যার স্পষ্ট যাত্রা হয় এক যুগ আগে শমী কায়সারের একটি মিথ্যা নগ্ন ভিডিও’র মধ্য দিয়ে। এরপর দীর্ঘ বিরতি নিয়ে প্রকাশ পায় ‘হিল্লোল-তিন্নি’র আপত্তিকর দৃশ্য। সেটিও মিথ্যা প্রমাণ হয়। তবে সূর্যের মতো সত্য আর স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় বছর দুই আগে প্রকাশিত ‘প্রভা-রাজীবে’র দীর্ঘ পর্নো ভিডিও চিত্রটি। এর সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করে ‘নির্ঝর-চৈতি’র ভিডিও চিত্র।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, মূলত এই দুটি সত্য ঘটনার ওপর ভিত্তি করেই ইদানীং ঘন ঘন প্রকাশ পাচ্ছে তারকাদের মিথ্যা পর্নো ভিডিও। অভিযুক্ত তারকাদের সোচ্চার ভূমিকা ছাড়া যেখান থেকে খুব সহসা বেরিয়ে আসা মুশকিল। এবং এর ফলে আমাদের দেশ বা সমাজে ঘটে যাওয়া ক্ষতিগুলোও কাটিয়ে নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের এই বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া একান্ত জরুরি।