কোন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে দেশীয় মডেল-অভিনেত্রীর এ রকম বিকিনি পরা ছবি
প্রকাশ পাওয়ার নজির নেই বললেই চলে। আর যদি থেকেও থাকে তা সেভাবে প্রকাশ না
পাওয়ায় এমন আলোচনা-সমালোচনা হয়নি।
চলতি বছরই দেশের নামকরা র্যাম্প মডেল পিয়া রেদওয়ান রনি পরিচালিত
‘চোরাবালি’ ছবিতে অভিনয় করে অভিনেত্রী হিসেবেও সবার নজর কাড়েন। এ ছবিতেও
বেশ খোলামেলা রূপে দেখা গেছে তাকে। ছবিটির মাধ্যমে বেড়ে যায় তার
পরিচিতিও।
এদিকে কয়েক বছর ধরেই দেশীয় র্যাম্পে দাপটের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি
পিয়া একাধিক আন্তর্জাতিক ইভেন্টেও অংশ নিয়েছেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে
প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। এসব প্রতিযোগিতায় অন্যান্য দেশের প্রতিযোগীদের
পেছনে ফেলে সাফল্যও লাভ করেছেন।
এরআগে ২০০৭ সালে মিস বাংলাদেশ হন পিয়া। এরপরই লাইমলাইটে চলে আসেন তিনি।
একাধিক ব্র্যান্ডের মডেল হিসেবেও দেখা গেছে তাকে। এরপর আন্তর্জাতিক
পরিমণ্ডলেও পরিচিতি পান।
২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি’ খেতাব
জয় করেন তিনি। চলতি বছরের শুরুতেই ‘ইন্ডিয়ান প্রিন্সেস ইন্টারন্যাশনাল’
প্রতিযোগিতায় অংশ নেন পিয়া। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে
বিজয়ের মুকুট মাথায় উঠে তার।
অন্যদিকে চলতি বছরই বাহরাইনে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্সেস’
প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। এছাড়া মিশরে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড টপ মডেল’
প্রতিযোগিতায় শীর্ষ মডেল হওয়ার সাফল্য অর্জন করেন পিয়া। আর এ
প্রতিযোগিতায় অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে তার বিকিনি পরে পোজ দেয়া ছবিই
দেশীয় মিডিয়ায় তাকে তুমুল আলোচনায় নিয়ে আসে।
ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন স্থানে পিয়ার বিকিনি পরা ছবি ও প্রতিযোগিতায়
অংশগ্রহণের বিষয়টিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই বলেছেন,
দেশীয় সংস্কৃতি, আমাদের ধর্ম কখনও এমন খোলামেলাভাবে উপস্থাপনকে সমর্থন করে
না। পিয়ার এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন আমাদের সংস্কৃতিকে অসম্মানিত করেছে,
কলুষিত করেছে।
এমন অসংখ্য নেতিবাচক মন্তব্যের বিপরীতে অবশ্য ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও দেখা
গেছে। অনেকে বলেছেন, দেশীয় একজন মডেলের আন্তর্জাতিক ইভেন্টে পদচারণা ও
সাফল্য অর্জন করা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এটাকে নিরুৎসাহিত না করে বরং
উৎসাহিত করা উচিত। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোতে তার সাহসিক অংশগ্রহণ,
সাফল্যের বিষয়ে পিয়ার বক্তব্য- আমি আসলে আন্তর্জাতিক
ইভেন্ট-প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি।
বাংলাদেশের স্যাসে পড়ে এত বড় ইভেন্টে দাঁড়িয়ে গর্ববোধ করেছি অনেক। মনে
হয়েছে দেশের জন্য কিছু করতে পেরেছি। আর অনেকে হয়তো অনেক কথা বলছেন,
সমালোচনাও করছেন ফেসবুক কিংবা অন্যত্র। কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা
আন্তর্জাতিক ইভেন্ট।
পিয়া জানান, এখানে বিকিনি পরে কাজ করতে হয়। আর আমি কিন্তু এমন নয় যে
বিচে বিকিনি পরে একা একা পোজ দিয়েছি! মঞ্চে অন্য দেশের মডেলরাও কিন্তু
আমার পাশে ছিল। আমার কাছে কাজটাই মুখ্য। কাজের মাধ্যমে নিজ দেশকে
প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি, এটা আমার জন্য বড় ব্যাপার।