অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কিত পররাষ্ট্র বিষয়ক সাব-কমিটির
চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবট বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। ছবি- পিআইডি
মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক
নির্বাচন চায়। তবে তারা কোনো অবস্থাতেই সংঘর্ষ সমর্থন করে না।
ঢাকা
সফররত যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কিত পররাষ্ট্র
বিষয়ক সাব-কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবট বুধবার সকালে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে এ অভিমত ব্যক্ত
করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান বলে জানিয়েছে সরকারি সংবাদ সংস্থা- বাসস।
বাসসের
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের
মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে চমৎকার হিসাবে অভিহিত করেন এবং আশা প্রকাশ করেন
যে আগামীদিনে বন্ধুত্বপূর্ণ এই সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
জবাবে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চায়।
কারণ নিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্র ছাড়া দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ
প্রসঙ্গে তিনি সমস্যা সমাধানে সংলাপে বসার জন্য বিরোধী দলীয় নেতা বেগম
খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু বিরোধী দলীয় নেতা তার
প্রস্তাবে সাড়া দেননি। এর ফলে হরতালের সময় ২০ জন নিরপরাধ মানুষ প্রাণ
হারিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও
শক্তিশালী- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি দলের কোনো রকম হস্তক্ষেপ
ছাড়াই প্রায় ৬ হাজার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
"এসব
নির্বাচনে বিরোধী দলের অনেক প্রার্থী জয়ী হয়েছেন এবং নির্বাচনের ফল নিয়ে
কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি"- উল্লেখ করে দেশে আগামী সাধারণ নির্বাচনও
নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ
প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নির্বাচনী
সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২শ’রও
বেশী মানুষ নিহত হয়েছিলো। শেখ হাসিনা বলেন, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন।
কাজেই এখানে কারো কোনোরকম হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের
নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হওয়ায় দেশের ভাবমূর্তি ম্লান হয়েছিল।
এ
প্রসঙ্গে তিনি ২০০৫ সালে একসাথে দেশের ৬৩টি জেলার ৫০০ স্থানে বোমা
বিস্ফোরণ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা,
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা এবং শাহ এ এম এস
কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ হত্যাকাণ্ডের
কথা উল্লেখ করেন।
"কিন্তু তার সরকার বিগত চার বছর দশ
মাসে কঠোর হস্তে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমন করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও
পুনরুদ্ধার করেছে"- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, "তার রাজনীতির লক্ষ্য
হচ্ছে- দেশকে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা। এলক্ষ্য অর্জনে তার সরকার
বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণসহ
বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলশ্র“তিতে দারিদ্র্যের হার ২৬ শতাংশের নীচে
নেমে এসেছে। অপরদিকে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ নিম্নআয় থেকে মধ্যম আয়ের স্তরে
উন্নীত হয়েছে।"
অন্যান্যের মধ্যে প্রখ্যাত আইটি
বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ
এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মুখ্য
সচিব শেখ মো: ওয়াহিদ-উজ-জামান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা
ওয়াহেদুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত অ্যাম্বাসেডর জন ডানিলোউইকজ এ
সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের
২১শে বইমেলায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত স্টল মালিকদের ক্ষতিপূরণের চেক দেন।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক
শামসুজ্জামান খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।