Tuesday, 26 August 2025

মিথিলার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন

 

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
রাফিয়াত রশিদ মিথিলাছবি : মিথিলার ফেসবুক

অভিনয়ের পাশাপাশি শিক্ষাজীবনেও আরেকটি ধাপ পার হলেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। অর্জন করলেন পিএইচডি। গতকাল সোমবার গভীর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তাঁর এই অর্জনের খবরটি ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন মিথিলা। অভিনয়ের পাশাপাশি পুরোদস্তুর চাকরি করেন তিনি। এরই মধ্যে ডক্টরেট সম্পন্ন করলেন মিথিলা।

কাছের মানুষ ও বন্ধুদের অনেকেই জানেন, শিক্ষার্থী হিসেবে মিথিলা মেধাবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেন দ্বিতীয় মাস্টার্স। সেখানে সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ৪ পেয়ে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল অর্জন করেন এই তারকা। ২০১৪-১৬ স্নাতকোত্তর শিক্ষাবর্ষে সব বিভাগের মধ্যে একমাত্র মিথিলাই এই সর্বোচ্চ সিজিপিএ পান। এর পরও থেমে থাকেননি।

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
ছবি : মিথিলার ফেসবুক

অভিনয়, সন্তানকে বড় করা, সংসার সামলানো এবং ব্র্যাকের ফুলটাইম চাকরির পাশাপাশি পিএইচডির পড়াশোনা শুরু করেন। ইউনিভার্সিটি অব জেনেভায় মিথিলার পিএইচডি ডিগ্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পাঁচ বছর লেগেছে। মিথিলার পিএইচডির বিষয় আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের খবরটি জানিয়ে এই ছবিটি পোস্ট করেছেন মিথিলা
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের খবরটি জানিয়ে এই ছবিটি পোস্ট করেছেন মিথিলা
ছবি : মিথিলার ফেসবুক

প্রথম আলোকে মিথিলা বলেন, ‘জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি, তার সবকিছু নিজের চেষ্টায়। শতভাগ নিজের চেষ্টায়। তাই নিজের কোনো অর্জন তো ভালোই লাগে। এটার একটা অন্য রকম আত্মতৃপ্তি আছে। এটা ঠিক, এই কাজে আমার সঙ্গে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল, অনেকে সহযোগিতা করেছে; কিন্তু কাজটা তো আমাকেই করতে হয়েছে। এটা আমার নিজের একটা অর্জন, সেটাই অনেক বেশি ভালো লাগা। এই ভালো লাগা অবর্ণনীয়। নিজের শ্রম, কষ্টে কোনো অর্জন অসাধারণ অনুভূতি।’

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
ছবি : মিথিলার ফেসবুক

কথা প্রসঙ্গে তাঁর জন্য এই অর্জন কেন কঠিন ছিল তা–ও জানালেন মিথিলা, ‘আমার একটা ফুলটাইম চাকরি ছিল। আমার পুরো প্রজেক্ট আফ্রিকাতে। আমাকে তাই অনেক বেশি ট্রাভেল করতে হয়েছে। বলতে পারেন, সারাক্ষণই ট্রাভেলের মধ্যে থাকতে হয়েছে। আমার বিশ্ববিদ্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে, সময় বের করে সেখানেও যেতে হয়েছে। কাজ করতে হয়েছে। শুরুর দিকে করোনা মহামারি ছিল, তাই আমার তথ্য সংগ্রহ এক বছর পিছিয়ে গেছে। এর মধ্যে বছরে একটা-দুটো প্রকল্পে অভিনয় করেছি, যেটা আমার মনের তাগিদ। তবে অভিনয়ে আমাকে কেউ বাধ্য করেনি। পরিবারের দায়িত্বও ছিল। তবে সবকিছু শেষে লেখাপড়া আমার কাছে থেরাপির মতো। এটা আমার মনের খোরাক। পড়ালেখা করতে আমার ভালো লাগে। যখন আমি পড়ালেখা করতে বসি, তখন পৃথিবীর অনেক কিছু ভুলে যাই। অনেকে আছে না, মিউজিক করতে ভালোবাসে, গিটার বাজায়, পিয়ানো বাজায়—এসব করতে গিয়ে পৃথিবীর সব ভুলে যায়; আমি পড়তে বসলে পৃথিবীর সব ভুলে যাই। তবে অবশ্যই কঠিন ছিল পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের এই পথচলা।’

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
ছবি : মিথিলার ফেসবুক

কথা প্রসঙ্গে মিথিলা আরও বললেন, ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পিএইচডি ডিগ্রির অফার গ্রহণ করি। এরপর তো করোনা মহামারি শুরু হয়। তারপর তথ্য সংগ্রহ করতে অনেক সময় লেগে যায়। আমাকে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে শহরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। তখন আবার থাকি কলকাতায়। আমাকে সময় বের করে কাজ করতে হয়েছে। আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছকে বাঁধা। গত পাঁচ বছর সেই অর্থে আমার কোনো সামাজিক জীবন ছিল না। কোনো দাওয়াতে যেতে পারিনি, বিনোদন অঙ্গনের অনেক অনুষ্ঠানেও খুব একটা যেতে পারিনি। সব মিলিয়ে আমাকে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। অনেক সময় বন্ধুদের আড্ডা থেকেও দূরে থাকতে হয়েছে। এত স্যাক্রিফাইসের পর যখন এমন অর্জন এসেছে, এটা সার্থক। পাঁচ বছরে আমার অভ্যাসটা এমন হয়েছে, এখন আমার সামাজিক পরিসরে যেতেও ভালো লাগে না।’


AD BANNAR