বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা : ‘নির্বাসিত’ লেখিকা তসলিমা
নাসরিনের নতুন বই ‘নিষিদ্ধ’-এর মোড়ক উন্মোচিত হলো ঢাকায়। বৃহস্পতিবার
বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন
করা হয়।
বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। মোড়ক উন্মোচন শেষে প্রকাশনা সংস্থাটির
স্বত্ত্বাধিকারী ওসমান গণি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘তসলিমার
মানবাধিকার লঙ্ঘন করায় তার যতো ক্ষতি হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি হচ্ছে এদেশের।
নারী
যখন কেবল নারী হয়ে জন্মানোর কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন, পথেঘাটে লাঞ্ছিত হচ্ছেন,
যখন স্বাধীনতা বা অধিকার বলতে কিছু নেই, তখন এ দেশে তসলিমার প্রয়োজন
সবচেয়ে বেশি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তসলিমাকে দেশে ফেরত আনার এবং অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, রোবায়েত ফেরদৌস, মারুফ রসুল প্রমুখ।
জ্যোর্তিময়
বড়ুয়া বলেন, ‘আমি কয়েকদিন ধরে তসলিমা নাসরিনের নাগরিকত্বের বিষয়টি ঘেটেছি।
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, তার নাগরিকত্ব বাতিল হয়নি। তাছাড়া
বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিলের কোনো ঘোষণাও দেয়নি। তসলিমা নাসরিন
অনেকবার তার পাসপোর্ট নবায়ন করার আবেদন করেও পাননি। তিনি রাষ্ট্রবিরোধী
কোনো কাজে লিপ্ত নন। তবে কেন তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না?
বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমার জোর দাবি, তসলিমা নাসরিনকে দেশে ফেরার অনুমোতি
দেয়া হোক।’
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির দৈর্ঘ্য কিংবা
ওজন পরিমাপ করার জন্য আমরা স্কেল ও বাটখারা ব্যবহার করি। কিন্তু একজন
মানুষকে মাপতে হলে তার চিন্তার গভীরতা দিয়ে মাপা উচিত।’
ব্লগার
মারুফ রসুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে যুদ্ধাপরাধী গোলাম
আজমের আত্মজীবনী বই বিক্রির আনুমোদন যদি থাকে, তবে তসলিমা নাসরিন, হুমায়ুন
আজাদ ও দাউদ হায়দারের মতো লেখকের বই কেন নিষিদ্ধ হবে?’
প্রসঙ্গত,১৯৯৪ সাল থেকে তসলিমা নাসরিনের ‘নির্বাসিত’ জীবন শুরু হয়। বাংলাদেশ ত্যাগের পর তিনি ফ্রান্স, সুইডেন ও ভারত বসবাস করেছেন।