Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Monday 6 January 2014

মিনিটে ৭.৬৬ ও ছয় ভোট

 
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার কাজলা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে বেলা একটা পর্যন্ত ৩০০ মিনিটে ভোট পড়েছে এক হাজার ৮০০টি। অর্থাৎ, প্রতি মিনিটে ছয়টি ভোট পড়েছে। একই সময়ে পাশের কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট পড়ে দুই হাজার ৩০০। অর্থাৎ, মিনিটে ৭ দশমিক ৬৬ ভোট পড়েছে। এই দুটি কেন্দ্র জাতীয় সংসদের কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের।
গতকাল রোববার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই দুটি কেন্দ্রে বেলা একটায় গিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে। কেন্দ্র দুটি ওই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হকের (চুন্নু) বাড়ির কাছে। একই সময়ে করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের কয়েকটি কেন্দ্রে মোট ভোটের প্রায় ১০ শতাংশ ভোট পড়ে।
সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত করিমগঞ্জের জাফরাবাদ উচ্চবিদ্যালয়, কিরাটন উচ্চবিদ্যালয়, সাকুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাটিয়া উচ্চবিদ্যালয়, তাড়াইলের ঘোষপাড়া উচ্চবিদ্যালয়সহ অন্তত ২৫টি কেন্দ্রে গিয়ে জানা যায়, এসব কেন্দ্রে ওই সময় পর্যন্ত ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু মুজিবুল হকের গ্রামের বাড়ি কাজলায় গিয়ে পাওয়া যায় ভিন্ন চিত্র। কাজলা গ্রামে মুজিবুল হকের বাড়ির ১০০ গজের মধ্যে কাজলা আলিম মাদ্রাসা ও কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। কাজলা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটার দুই হাজার ১১৯। বেলা একটার মধ্যে সেখানে এক হাজার ৮০০ ভোট পড়ে। কাজলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন হাজার ৫৫৯ ভোটের মধ্যে বেলা একটা ১০ মিনিট পর্যন্ত দুই হাজার ৩০০ ভোট পড়ে। অথচ জাফরাবাদ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই হাজার ৪০ ভোটের মধ্যে পড়ে ৮১টি। নিয়ামতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা একটা পর্যন্ত দুই হাজার ৫১৭ ভোটের মধ্যে ২০৯ ভোট এবং নোয়াবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন হাজার ৩০২ ভোটের মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পড়ে ৪২৭ ভোট।
জানতে চাইলে কাজলা আলিম মাদ্রাসার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস জানান, ‘সকালে ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে চলে গেছেন। এতে আমার করার কী আছে।’ কাজলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এস এম কামাল উদ্দিন বলেন, সকালে এসে দুপুরের আগেই ভোটাররা ভোট দিয়ে ফেলেছেন। তাই একটার আগেই সিংহভাগ ভোট প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুল হক (হরিণ প্রতীক) বলেন, ‘১৯৮৬-এর ভোট ডাকাতির মতো এবার ভোট ডাকাতি হয়েছে। আমার পোলিং এজেন্ট মৃত্যুভয়ে কেন্দ্রে যায়নি। শুধু ওই দুটি কেন্দ্রে নয়, করিমগঞ্জের ৭৮টি এবং তাড়াইলের ৪২টি কেন্দ্রে মুজিবুল হকের লোকজন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা-কর্মীদের নিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে।’ এ অভিযোগের বিষয়ে মুজিবুল হক বলেন, ‘আমার বাড়ির কেন্দ্রে প্রতি নির্বাচনে ভোটাররা উৎসাহ নিয়ে সকালেই ভোট দিয়ে কাজে চলে যান। এবারের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিগত ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে আমি পরাজিত হলেও এ দুটি কেন্দ্রে ৮০ শতাংশ ভোট পেয়েছি।’