Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 3 November 2013

আলোচনার পথ এখনো খোলা, হরতাল প্রত্যাহার করুন

আলোচনার পথ এখনো খোলা, হরতাল প্রত্যাহার করুন

জেলহত্যা দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৪ দলের মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলাপ্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অযৌক্তিক হরতাল প্রত্যাহার করুন। কারণ, আলোচনার পথ এখনো খোলা আছে। তিনি হরতাল প্রতিহত করতে নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

হরতাল প্রত্যাহার করুনজনসভায় কাল ৪ নভেম্বর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি হরতাল প্রত্যাহার করেন। শিশুদের মন ভাঙবেন না। শিশুদের দিকে তাকিয়ে হরতাল প্রত্যাহার করে শিশুদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেন। দেশকে ধ্বংসের পথে নেবেন না।’
উন্নয়নে বাংলাদেশ রোল মডেল
বিরোধী দলকে সর্বদলীয় সরকারে আসার আহ্বান জানিয়ে হাসিনা বলেন, উন্নয়নের জন্য বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল। সময়মতো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
হরতালে কী পেলেন?
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অক্টোবরে ৬০ ঘণ্টা হরতালের আগে বিএনপির চেয়ারপারসন আলোচনার জন্য আলটিমেটাম দিলেন। আমি আলটিমেটামের মধ্যে রেড ফোনে খালেদা জিয়াকে ফোন করলাম। উনি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন, তাই আমি দেরি করে ফোন করা শুরু করলাম। দুপুর একটা থেকে আমি চেষ্টা শুরু করি। আমার এডিসি দেড়টা থেকে ফোন করা শুরু করলেন। ওনার (খালেদা জিয়া) বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস বললেন, উনি রাত নয়টার আগে তৈরি হতে পারবেন না। যে নেত্রীর তৈরি হতে এত সময় লাগে, তিনি দেশ চালাবেন কী করে?’
প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, ‘হরতালে বিরোধীদলীয় নেতা কী পেলেন? গাড়ি পোড়ালেন, কৃষকের পেটে লাথি মারলেন, দেশের উন্নয়ন বন্ধ করলেন, ২০টি লাশ পড়ল। এতে কার লাভ হলো। কোনো হরতাল দিয়েই যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে পারবেন না।’
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত থাকবে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলাম, আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার করব। আমরা সেই কাজ শুরু করেছি। কয়েকজনের বিচারের রায় হয়েছে। আজও দুইজনের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। আমরা যখন বিচারের কাজ শুরু করলাম, তখন তিনি হরতাল দিয়ে তাদের রক্ষার জন্য কাজ শুরু করলেন।
ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিন আপনার লোক
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা কথা শুনে যখন ইয়াজউদ্দিন ইয়েস উদ্দিনের মতো কাজ করছিল। তাঁরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে না পারায় তখন উপদেষ্টারা পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর আপনি (খালেদা জিয়া) বিশ্বব্যাংক থেকে যে ফখরুদ্দীন এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বানিয়েছিলেন, নয়জনকে ডিঙিয়ে যে মইনুদ্দিনকে সেনাপ্রধান করেছিলেন, তারা ক্ষমতা দখল করে। আমাকে, আপনাকে গ্রেপ্তার করে। আপনার এক ছেলেকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে মুচলেকা নিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। আজ আবার কার স্বার্থে তাদের আনতে চাচ্ছেন?’ কেউ যেন অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসতে না পারে এবং সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতেই সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ।
এদিকে জনসভা উপলক্ষে রাজধানী ও এর আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে থাকেন। দুপুর গড়াতেই নৌকা নৌকা ধ্বনিতে প্রকম্পিত হতে থাকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।