Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Friday 8 November 2013

উত্তরপত্র মূল্যায়ন

সঞ্জয় কুমার ভৌমিক |
কোনো পরীক্ষা সঠিক ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-পরবর্তী উত্তরপত্র মূল্যায়নকাল। কিন্তু দেখা যায়, শিক্ষকদের খেয়ালখুশিতে নম্বর দেওয়ার কারণে উত্তরপত্রের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। মাঝেমধ্যে নানা অবহেলায় ঘটে অমূল্যায়ন, যা সত্যি দুঃখজনক।
সমাপনী পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর চলবে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ। কিন্তু দেখা যায়, একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তিন-চার দিন একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে সব শিক্ষক একত্রে বসে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ করেন। এই দ্রুততার ফলে পর্যাপ্ত সময় যেমন পাওয়া যায় না, তেমনি উত্তরপত্রগুলো ১০০ ভাগ নির্ভুলভাবে মূল্যায়ন সম্ভব হয় বলে মনে হয় না। প্রয়োজন উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পর্যাপ্ত সময় বেঁধে দেওয়া এবং সেই সঙ্গে জেএসসি কিংবা এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের মতো কাজটি প্রত্যেক শিক্ষক বাড়িতে বসে করলে উত্তর হবে সঠিক। আশা করি কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবে।
এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও কিছু করণীয় আছে। যেমন প্রথমত, এক বসায় নয়-দশটির বেশি খাতা মূল্যায়ন না করা। দ্বিতীয়ত, উত্তরপত্র দেখাকালে অন্য কোনো বিষয়ে মনোযোগ না দেওয়া। তৃতীয়ত, নেপ কর্তৃক সরবরাহকৃত বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নিদের্শিকায় প্রতিটি অভীক্ষার জন্য যে নির্দেশনা দেওয়া থাকে, তা অনুসরণ করা।
চতুর্থত, উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার সময় ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া। পঞ্চমত, উত্তরপত্রগুলো সযত্নে রাখা, যেখানে-সেখানে না রেখে।
১ নভেম্বর থেকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইউআরসিতে (উপজেলা রিসোর্স সেন্টার) শুরু হয়েছে যোগ্যতাভিত্তিক অভীক্ষাপদ প্রণয়ন প্রয়োগ ও মূল্যায়নবিষয়ক প্রশিক্ষণ। প্রত্যেক প্রাথমিক শিক্ষকের ব্যাচ তিন দিন করে এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। শ্রীমঙ্গল ইউআরসি ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ মো. ইকবাল হোসেন ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন। এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো সারা দেশে সমাপনী পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন, যাতে একই পদ্ধতিতে হয় এবং কোনো উত্তরপত্রের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন না ঘটে। এ জন্য ন্যাপসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ। সাধুবাদ জানাই এই প্রশংসনীয় পদক্ষেপকে। এ ছাড়া নম্বরপদ প্রস্তুতির (উত্তরপত্রের প্রথম কভারে) ক্ষেত্রে যেসব নিয়মনীতি তৈরি করা হয়েছে; তাতে কোনো উত্তরের নম্বর ভুলক্রমে বাদ যাওয়ার সুযোগ নেই, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
এখন প্রয়োজন প্রয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সদিচ্ছা, মনোভাব ও আন্তরিকতার প্রদর্শন।
সঞ্জয় কুমার ভৌমিক
সহকারী শিক্ষক, আলীশারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীমঙ্গল।