Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Tuesday 22 October 2013

ফখরুলের চিঠি আশরাফের হাতে

ফখরুলের চিঠি আশরাফের হাতে

@ Prothom-alo
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামবিএনপির চেয়ারপারসনের দেওয়া নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব এবং তা নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল মির্জা ফখরুলের চিঠিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফের কাছে পৌঁছে দেয়।

চিঠি পেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ফোন করেন সৈয়দ আশরাফ। এ সময় মির্জা ফখরুল বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং করছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনস্থলে বসেই ফোনে মির্জা ফখরুল সৈয়দ আশরাফকে বলেন, ‘আশা করছি আপনারা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করবেন। আলোচনা শুরু করবেন। আমরা এগিয়ে এসেছি, এখন আপনারাও এগিয়ে আসবেন।’
সৈয়দ আশরাফ ফোনে কী বলেছেন, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল জানান, চিঠির জন্য তিনি (আশরাফ) ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি দিনাজপুর যাচ্ছেন। চিঠিটি তিনি সঙ্গে নিয়েই যাবেন। তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি চিঠির বিষয়টি নিয়ে আলাপ করবেন।
চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গতকাল বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব এবং তা নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লার নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল দল গুলশান কার্যালয় থেকে চিঠি নিয়ে সৈয়দ আশরাফের বেইলি রোডের বাসার উদ্দেশে রওনা হয়। অন্য দুজন হলেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। তাঁরা চিঠিটি সৈয়দ আশরাফের হাতে তুলে দেন।
প্রতিনিধিদলটি আশরাফের বাসার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় খবর আসে, সৈয়দ আশরাফের বাসার গেট খোলা হচ্ছে না। এ খবরে মির্জা ফখরুলকে কিছুটা বিচলিত হতে দেখা যায়। এর একটু পর একটি ফোন আসে। মির্জা ফখরুলকে ফোনে বলতে শোনা যায়, ‘মুখে বলে চলে আসেন, এখন চিঠি দেওয়ার দরকার নেই।’
এরপর সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেই আসে আরেকটি ফোনকল। কথা বলবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ। এরপর হাসিমুখে সালাম দিয়ে কথা বলা শুরু করেন মির্জা ফখরুল।
চিঠি হস্তান্তর শেষে বরকতউল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সৈয়দ আশরাফের কাছে চিঠিটি পৌঁছে দিয়েছি। তিনি স্বাক্ষর করে তা গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হবে বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন।’
১৮ অক্টোবর নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর তিন দিনের মাথায় গতকাল ২১ অক্টোবর বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বে থাকা ২০ উপদেষ্টার মধ্য থেকে আওয়ামী লীগ পাঁচজন ও বিএনপি পাঁচজনের নাম প্রস্তাব করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব দেওয়ার পরদিন আজ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি পাঠালেন।
বিএনপির সংবাদ ব্রিফিং: গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বহরে পুলিশি হামলার নিন্দা জানান। ওই ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যের অপসারণ ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, যখন সমঝোতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া প্রস্তাব দিচ্ছেন, তখন এ ধরনের আচরণ প্রমাণ করে সরকার সমঝোতায় আন্তরিক নয়। এ জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান চায়। কিন্তু এটিকে দুর্বলতা মনে করলে সরকার ভুল করবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি ২৫ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চায়। সরকার সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সংকট নিরসনের পথ উন্মুক্ত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।