Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 20 October 2013

মনমোহনের আসন্ন চীন সফরে ভারতের প্রত্যাশা

মনমোহনের আসন্ন চীন সফরে ভারতের প্রত্যাশা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর আসন্ন চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সুরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানা গেছে৷ সেটা বাস্তবায়িত হলে সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সেটা হবে একটা মাইলফলক৷
দুদিনের রাশিয়া সফর শেষে তিনদিনের সফরে মনমোহন সিং এর চীন পৌঁছার কথা মঙ্গলবার৷ চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কোচিয়াং সঙ্গে তাঁর বৈঠকের শীর্ষ অ্যাজেন্ডা হলো ভারত-চীন সীমান্তে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা, উত্তেজনা, চাপানউতোর ও অনুপ্রবেশ রোধে একটা সন্তোষজনক রফায় আসার জন্য দুদেশের মধ্যে সীমান্ত সুরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই করা৷ নতুন সীমান্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রস্তাব এসেছিল চীনের দিক থেকেই৷ প্রস্তাবের মূল খসড়ার কয়েকটি অনুচ্ছেদ নিয়ে ভারতের আপত্তি থাকায় গত কয়েক মাসে ভারত ও চীনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরে তিন-চারবার বৈঠক হয়৷ যেমন, চীন চেয়েছিল, সীমান্তে টহলদারির যাবতীয় তথ্যাদি ভারতকে জানাতে হবে৷ শেষে খসড়ায় উভয়পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য সংশোধন আনা হয়৷
গত মে মাসে ভারত সফরে গিয়েছিলেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কোচিয়াং
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে তিন-দফা এক চুক্তির কথা হয়েছিল৷ তাতে উভয়দেশের সম্মতিও ছিল কিন্তু অনিবার্য কারণবশত তা পাথর চাপা পড়ে গিয়েছিল৷ বর্তমান চুক্তি তারই দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ সীমান্ত বিরোধের চূড়ান্ত মীমাংসা সাপেক্ষে সীমান্ত প্রতিরক্ষা মেকানিজম গড়ে তোলা৷ সম্প্রতি ভারতের লাদাখ এলাকার ডেপসাঙ উপত্যকায় নতুন ধরণের চীনের কথিত ‘অনুপ্রবেশ' এবং ভারত সীমান্তে চীনা টহলদার বাহিনীর অন্যান্য বিতর্কিত গতিবিধি নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তা লাঘবে দুদেশের উচ্চস্তরীয় সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হবে যাতে সীমান্তে শান্তি বজায় থাকে এবং দুদেশের মধ্যে আস্থাবর্ধক পদক্ষেপের অঙ্গ হিসেবে কাজ করে৷
কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে, সীমান্ত বরাবর সামরিক পরিকাঠামো মজবুত করার দিকে ভারত নজর দেয়ায় চীনও অস্বস্তিতে৷ যেমন সীমান্তের বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ, ভারি মালবাহী বিমান অবতরণ এবং সুখোই জঙ্গি বিমানের স্কোয়াড্রন গড়ে তোলা, কোর মাইন্টন ডিভিশন তৈরি করা ইত্যাদি৷ প্রসঙ্গত, পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে চীনের বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্প বিশেষ করে সামরিক প্রকল্প এবং চীন-পাকিস্তান বেসামরিক পরমাণু চুক্তি সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগের কথা তুলে ধরতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷
মনমোহন-কোচিয়াং বৈঠকের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অর্থনৈতিক৷ প্রাধান্য পাবে চীন-ভারত বাণিজ্যিক লেনদেনে ভারতের ঘাটতি বাণিজ্যের বিষয়টি৷ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতির পরিমাণ প্রায় তিন হাজার কোটি ডলার৷ চীন চাইছে ডলার বহির্ভূত মুদ্রায় ব্যবসা শুরু করার ব্যবস্থাপনা৷ তবে জানা গেছে বিতর্কিত ভিসা ইস্যু নিয়ে আলোচনা সম্ভবত হবেনা৷
দিল্লি-বেইজিং বৈঠকের ইতিবাচক আবহ তৈরিতে ১৯৫০-এর পর এই প্রথমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে৷ ইতিবাচক বার্তা দিতেই ক্ষমতা গ্রহণের পরই চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কোচিয়াং ভারত সফরে এসেছিলেন৷ বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, দুদেশের নতুন নেতৃত্ব আলোচনার পথেই সমস্যার সমাধান করতে চায়৷ তবে কথায় বলে ‘না আঁচালে বিশ্বাস নেই'৷

DW.DE