Thursday, 6 February 2020

ব্যাংকের পাওনা সরকারের কাছে ১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা

সরকারের কাছে ব্যাংকের পাওনা  ১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা

সংসদ অধিবেশন/ ছবি: সংগৃৃহীত
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: গত দশ বছরে (২০০৯-২০১৯) সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংক হতে মোট ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছে এবং ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ এই সময়কালে সরকারের নিট ঋণ মোট ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য খ. মমতা হেনা লাভলীর প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ৭২টি দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) সঙ্গে সমঝোতা স্মাক্ষর করেছে।
তিনি জানান, বিএফআইইউ যে সকল দেশের এফআইইউ এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে তাদের পাশাপাশি এগমন্ট গ্রুপের সদস্য এফআইইউ সমূহের সঙ্গে নিয়মিতভাবে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিএফআইইউ-এর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত বা বিদেশি এফআইইউ কর্তৃক স্বপ্রণোদিতভাবে প্রেরিত তথ্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য নিয়মিতভাবে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থায় প্রেরণ করা হয়ে থাকে।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাজেটে বৈদেশিক ঋণ/আর্থিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৪৪৭ মিলিয়ন ডলারের সমতুল্য ৭১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট বৈদেশিক ঋণ/আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ২ হাজার ৭১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য ২৩ হাজার ২৩ কোটি টাকা।
গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে শেয়ার বাজারে কিছু তারল্য সঙ্কট থাকলেও ব্যাংকিং খাতে কোন তারল্য সঙ্কট নেই। বর্তমান বিরাজমান তারল্য সঙ্কট কাটিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে গত জানুয়ারি তার কার্যালয়ে একটি সভা করেন। সরকার মনে করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য একটি গতিশীল ও শক্তিশালী পুঁজিবাজারের উপস্থিতি অপরিহার্য। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য যে ধরনের সাহায্য প্রয়োজন, সরকার ধারাবাহিকভাবে তা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
মন্ত্রী জানান, ওই সভায় পুঁজিবাজারকে বিকশিত করা এবং বাজারে আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কতিপয় স্বল্প-মেয়াদী কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। স্বল্প মেয়াদি বেশ কিছু বিষয় অচিরেই কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, তার উপর মতামত প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার বিষয়টি পর্যালোচনা করা; ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাসমূহ শনাক্ত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মর্মে তার আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, শুধু ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার কার্যকর করা হলে ব্যাংকগুলো উক্ত খাতে ঋণ/বিনিয়োগ ইচ্ছাকৃতভাবে হ্রাস করে অন্যান্য খাতে অধিক সুদহারে ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানে আগ্রহী হতে পারে। ফলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যতিরেকে অন্যান্য সকল খাতে ঋণ/বিনিয়োগের সুদহার শতকরা ৯ ভাগে নির্ধারণ করে আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন।

খাজা নাজিমুদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা ও আইয়ুব খানের এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি !!!

বঙ্গবন্ধুকে ডিগ্রি দেওয়ার আগে তিন ‘কুখ্যাত’ পাকিস্তানি শাসকের ডিগ্রি প্রত্যাহার দাবিতে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি: আসিফ হাওলাদার

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধুকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। বঙ্গবন্ধুকে এই ডিগ্রি দেওয়ার আগে পাকিস্তান আমলের তিন শাসক খাজা নাজিমুদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা ও আইয়ুব খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এই দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘বিতর্কিত ব্যক্তিদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-প্রদত্ত সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রত্যাহার আন্দোলন পরিষদ’–এর ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দাবির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো ইতিবাচক উদ্যোগ না দেখলে ২৩ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে আবারও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা৷
অবস্থান কর্মসূচিতে পরিষদের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাখাওয়াৎ আনসারী বলেন, ‘আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের দাবি হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়ার আগে তিন কুখ্যাত পাকিস্তানি শাসক খাজা নাজিমুদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা ও মুহাম্মদ আইয়ুব খানকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া ডিগ্রি প্রত্যাহার করতে হবে।’ দাবির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইতিবাচক কোনো উদ্যোগ না দেখা গেলে ২৩ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে আবারও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন এই শিক্ষক।
অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারপারসন নমিতা মণ্ডল, একই বিভাগের অধ্যাপক দুলাল কান্তি ভৌমিক, সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রমথ মিস্ত্রী এবং ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান অংশ নেন।
অধ্যাপক সাখাওয়াৎ আনসারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন ও অন্যতম প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ পর্যন্ত মোট ৫২ জনকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে। যাঁদের ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা রাষ্ট্র ও সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। কিন্তু পাকিস্তান আমলের নয়জনের মধ্যে তিনজনকে ডিগ্রি দেওয়া নিয়ে আমরা প্রশ্ন উত্থাপন করছি। তাঁরা হলেন পাকিস্তানের ভূতপূর্ব গভর্নর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন, ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দর মির্জা ও ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান। ভাষা আন্দোলনের ১৯৪৮ ও ১৯৫২—দুই পর্বেই খাজা নাজিমুদ্দিনের ভূমিকা ছিল বাংলা ও বাঙালির বিরুদ্ধে। ইস্কান্দর মির্জা ছিলেন অগণতান্ত্রিক ও সংবিধানবিরোধী। আইয়ুব খান ছিলেন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও ক্ষমতালিপ্সু। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুসহ অনেকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে মিথ্যা ষড়যন্ত্র মামলা করেন। এই কুখ্যাত ব্যক্তিদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া ডিগ্রি বাতিল না করে বঙ্গবন্ধুকে ডিগ্রি দেওয়ার বিষয়টি যথাযথ হবে না।

২১২ করলেই বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

২১২ করলেই বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

টাইগার বোলাররা বড় স্কোর গড়তে দেয়নি নিউজিল্যান্ডকে -ছবি: আইসিসি
খুব বেশিদূর বাড়তে পারেনি নিউজিল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেমিফাইনালে বাংলাদেশের বোলাররা তাদের আটকে দিয়েছে ২১১ রানে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ২১২ রান। ফর্ম, ম্যাচ পরিস্থিতি এবং পেছনের পরিসংখ্যান-সবকিছুই এখন এই ম্যাচে বাংলাদেশের হয়েই কথা বলছে।

প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণের খুব কাছে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। রানের হিসেবে সংখ্যাটা ২১২।

পচেফস্ট্রুমে সেমিফাইনালের এই লড়াইয়ে টস জিতে বাংলাদেশ বোলিং বেছে নেয়। মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। দলের বোলাররা দারুণ দক্ষতা দেখিয়ে অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন।

ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই বাংলাদেশ আঁটোসাঁটো বোলিং করে। পেসার শরিফুল ইসলাম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপুটে বোলিং করেন। শুরুর ৬ ওভারে দুই মেডেনসহ শরিফুলের খরচা হয় মাত্র ১১ রান। নিজের তৃতীয় স্পেলে তিন উইকেট তুলে নেন শরিফুল। কিন্তু শেষ ওভারটা একটু বেশি খরুচে হয়ে যায় তার। দুটি বাই রানসহ সেই ওভারে শরিফুলের ব্যয় হয় ১৮ রান।
 
১০ ওভারে তার বোলিংয়ের ৪৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেমিফাইনালে শরিফুলই বাংলাদেশের সেরা বোলার। দলের স্পিনাররা ভালো বোলিং করেন। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সেরা বোলার স্পিনার রকিবুল এই ম্যাচে ১০ ওভারে ৩ মেডেনসহ ৩৫ রানে শিকার করেন ১ উইকেট। অফস্পিনার শামীম ৩১ রানে পান ২টি উইকেট। হাসান মুরাদ তার কার্যকরী স্পিনে ১০ ওভারে ৩৪ রানে তুলে নেন ২টি উইকেট।

৭৪ রানে ৪ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডকে বড় বিপদ থেকে টেনে তুলে লিন্ডস্টোন ও স্যান্ডের ব্যাটিং। এই দুজনে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৬৭ রান যোগ করেন। লিন্ডস্টোনকে ৪৪ রানে বিদায় করেন শরিফুল তার তৃতীয় স্পেলের বোলিংয়ে। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা কুইন স্যান্ডের ৮৩ বলে অপরাজিত ৭৫ রানের হাফসেঞ্চুরির ইনিংস নিউজিল্যান্ডের স্কোরকে দুশোর ওপরে নিয়ে যায়।

শেষ ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ড একটু হাত চালিয়ে খেলে। এই সময় তারা হারায় ৩ উইকেট কিন্তু যোগ করে ৭২ রান।

AD BANNAR