বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমানের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সব ধরনের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
গত রোরবার ফজলুর রহমানের নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে বিএনপি। পরে তিনি ওই নোটিশের লিখিত জবাব না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। দলের পক্ষ থেকে সোমবার আরও ২৪ ঘণ্টার সময় বাড়ানো হয়।
আজ মঙ্গলবার ফজলুর রহমান লিখিত জবাব দেন। সংশ্লিষ্ট বিএনপি সূত্র বলেছে, ফজলুর রহমান যে জবাব দিয়েছেন, তা দলের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। যদিও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর অবদানকে সম্মান জানিয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তবে শৃঙ্খলা রক্ষায় দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁর সদস্যপদসহ সব পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
দলীয় সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ফজলুর রহমান এখন থেকে টক শো কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেওয়ার সময় যেন দেশের মর্যাদা ও দলের নীতিমালা ক্ষুণ্ণ না হয় এবং দেশের জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না লাগে- সেদিকে তাঁকে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান গত বছর ৫ আগস্টের পর থেকে দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্য–বিবৃতি ও টেলিভিশন টক শোতে কথা বলার মধ্য দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তাঁর বলিষ্ঠ অবস্থান অনেকেই প্রশংসা করেন। আবার তাঁর বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে সমালোচনাও করছেন কেউ কেউ।
এর মধ্যে গত রোববার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য’ দেওয়ার অভিযোগে ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএনপি। এরপর ওই দিন মধ্যরাত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ফজলুর রহমানের বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন একদল ব্যক্তি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর ওপর ‘মব জাস্টিস’ চলতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও দেশবাসীর উদ্দেশে করেন এই মুক্তিযোদ্ধা। এরপর আজ তিনি বিএনপির নোটিশের জবাব দেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিল দলটি।
