Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Thursday 30 January 2020

চীন থেকে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ লোক আসছে

ইফতেখার মাহমুদ, ঢাকা


আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ১২:২৮
প্রিন্ট সংস্করণ
চীনের করোনাভাইরাস যাতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে মাস্ক ব্যবহার করছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। প্রথম আলোচীনের করোনাভাইরাস যাতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে মাস্ক ব্যবহার করছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। প্রথম আলোপ্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ জন যাত্রী চীন থেকে বাংলাদেশে আসছেন। তাঁদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি চীনা নাগরিক। তবে তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাস আছে কি না, তা পরীক্ষা করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অতিক্রম করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষায় এ পর্যন্ত কারও শরীরে ওই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। 
এর বাইরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে করোনাভাইরাস বিষয়ে একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে যেসব লক্ষণ শরীরে দেখা দেয়, তা থাকলে সেখানে ফোন করে সহায়তা নেওয়া যায়। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন সেখানে ফোন করে সহায়তা চাইছে, যাদের মধ্যে গড়পড়তা ৮ থেকে ১২ জন চীনা নাগরিক। এদের সবাইকে পরীক্ষা
করে সংস্থাটি তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। আইইডিসিআরর এক হিসাবে বলা হয়েছে, গত আট দিনে চীন থেকে ৩ হাজার ৩৪৮ জন বাংলাদেশে এসেছেন।
এদিকে গত ১৪ দিনে চীন থেকে ফেরা ব্যক্তিদের তালিকা করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ রোগের কোনো লক্ষণ কারও মধ্যে দেখা গেলে তা স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে জানাতে বলা হয়েছে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)–কে চীনে ভ্রমণসংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায় প্রায় ১০ হাজার চীনা নাগরিক আছেন বলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সূত্রে জানা গেছে। পদ্মা সেতু থেকে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, যেখানেই বড় প্রকল্প, সেখানেই চীনা প্রযুক্তিবিদেরা বাংলাদেশে কাজ করছেন। তবে তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, প্রায় চার হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছেন বিভিন্ন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে, যাঁদের এক–তৃতীয়াংশই দেশে ছুটি কাটিয়ে এখন কর্মস্থল বাংলাদেশে ফিরছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি
দেশে প্রায় ১০ হাজার চীনা নাগরিক আছেন
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের ভেতরে যেসব চীনা নাগরিক আছেন, তাঁরা নিরাপদে আছেন। কারণ, বাংলাদেশে এই রোগ সৃষ্টি হয়নি, দেখাও যায়নি। আর যাঁরা আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করেন এবং ছুটি কাটিয়ে দেশে ফিরছেন, তাঁদের বিমানবন্দরে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই রোগ নেই এটা নিশ্চিত হয়েই আমরা তাঁদের দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছি।’
এদিকে জ্বর ও কাশি নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে গত সোমবার দুপুরে এক চীনা নাগরিক ভর্তি হয়েছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত—এমন সন্দেহে তাঁকে একটি বিশেষ কক্ষে রাখা হয়। পরে পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো জীবাণু পাওয়া যায়নি। 
আইইডিসিআরর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা প্রথম আলোকে গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘বিমানবন্দরে কারও মধ্যে আমরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ পাইনি। আমাদের হটলাইন নম্বরে ফোন করে যাঁরা সহায়তা চেয়েছেন, তাঁদের পরীক্ষা করেও আক্রান্ত কোনো মানুষ পাইনি।’ এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
চীনের বাইরে ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা গেছে। সারা বিশ্বের মানুষ বর্তমানে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছে। এরই মধ্যে চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।