Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Sunday 21 December 2014

সত্তরের প্রার্থীদের তথ্য চায় ট্রাইব্যুনাল

ইকরাম-উদ দৌলা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজের স্বার্থে ১৯৭০ সালের নির্বাচনী তথ্য চাইল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থাসম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের কাছে এক পত্রের মাধ্যমে তথ্যগুলো চেয়েছে সংস্থাটি
  সূত্র জানিয়েছে, আইসিটি তদন্ত সংস্থা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজের স্বার্থে ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের যাবতীয় তথ্য চেয়েছেগত ১২ নভেম্বর পাঠানো ওই পত্রের স্মারক নম্বর-আন্তঃট্রাঃ/তদন্ত সংস্থা/১৬৫২
ওই পত্রে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ব্যক্তির তথ্য চাওয়া হয়নিফলে ইসির পক্ষ থেকে তদন্ত সংস্থায় যোগাযোগ করা হলে সবার সব তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে
তবে তদন্ত সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিপাকে পড়েছে নির্বাচন কমিশনকেননা, ’৭০ সালের কোনো নির্বাচনের তথ্যই নেই ইসির কাছেওই বছর ৭ ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদ এবং ১৭ ডিসেম্বর প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো
  ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পুরোনো সব নথি খোঁজা হয়েছেকিন্তু ইসির কাছে কোনো তথ্য নেইএমন অবস্থায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সংসদ সচিবালয়ে ওই নির্বাচন দুটির তথ্য থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেনসিইসি এক সময় সংসদ সচিব ছিলেন

সিইসির নির্দেশে অবশেষে সংসদ সচিবালয় থেকে তথ্যগুলো খোঁজার জন্য জ্যেষ্ঠ  সহকারী সচিব পর্যায়ের দুই কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে ইসিওই কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচনী নথি খোঁজার পর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে
কমিটির গঠন ও নথি খোঁজার বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকেও একটি পত্র দিয়েছে ইসি

১৯৭০ সালের নির্বাচনের কোনো তথ্য না থাকার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ওই নির্বাচনের পরই দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়যে কারণে তথ্যগুলো ভালোভাবে সংরক্ষিত করে রাখা হয়নি
অথবা সংরক্ষণ করা হয়েছিলো কিন্তু যুদ্ধের সময় সব নষ্ট হয়েছে সে সময় মালিবাগে যে ভবনে নির্বাচন কমিশনের অফিস ছিলো, তা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো
  সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৬ সালে ঢাকায় একটি শাখাসহ প্রতিষ্ঠা লাভ করে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন৫৬-৭১ সাল পর্যন্ত চারটি কমিশন দায়িত্ব পায়দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৭২ সালে শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নাল ও উইকিপিডিয়া বলছে, ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬০টি পেয়েছিলো আওয়ামী লীগএছাড়া পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৮১টি আসন, পিএমএল (কাইয়ূম) ৯টি, পিএমএল (কনভেশন) ৭টি, জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম ৭টি, মারকাজি জমিয়তন-উলেমা-পাকিস্তান ৭টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ওয়ালী) ৬টি, জামায়াত-ই-ইসলামী ৪টি (৬শতাংশ ভোট পেয়েছিলো), পিএমএল (কাউন্সিল) ২টি, পিডিপি ১টি আসন পেয়েছিলোঅবশিষ্ট ১৬টি আসন পেয়েছিলো স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫ কোটি ৬৯ লাখ ৪১ হাজার ৫০০ ভোটারের মধ্যে ৬৫ শতাংশ ভোটার ওই নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলো৭০ সালেই পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এতে আওয়ামী লীগ সংখ্যগরিষ্ঠতা পায়
অন্যদিকে প্রাদেশিক পরিষদগুলোতে মোট আসন ছিলো ৬০০টিএ নির্বাচনে শুধু তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানই নয়, সব প্রদেশ মিলিয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগএতে আওয়ামী লীগ ২৮৮ টি আসন পেয়ে জনপ্রিয়তার র্শীর্ষে ছিলো
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্তদের বিচার করতে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালএখন পর্যন্ত দুটি ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য শেষ হয়ে রায় শেষ হয়েছে ১৩ মামলায় ১৪ জন আসামির
এদের মধ্যে একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরও করা হয়েছেরায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে তিনটি মামলাবিচারকার্য চলছে দুই মামলারতদন্তনাধীন রয়েছে নতুন চার শতাধিক মামলাআর এসব মামলায় ১৯৭০ সালের নির্বাচনকে রেফারেন্স হিসেবে নেওয়া হতে পারে