Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Thursday 29 May 2014

রাশেদ খান মেননের ৭১তম জন্ম বার্ষিকী

বাবার কর্মস্থলের সুবাদে ১৯৪৩ সালের 28 মে ফরিদপুরে জন্ম নেন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এই নেতা রাশেদ খান মেনন বাষট্টির সামরিক শাসনবিরোধী ও শিক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে নেতৃত্বের সামনে চলে আসেন চৌষট্টির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন
রাশেদ খান মেননের পারিবারিক বৃত্তান্ত:

মাগুরার জামাই রাশেদ খান মেনন একজন বামপন্থী রাজনীতিবিদ, বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচিত সভাপতি১৯৪৩ খিস্টাব্দের 28ই মে তারিখে ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেনতাঁর পিতৃভূমি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার বাহেরচর-ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামেতাঁর পিতা বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পীকার ছিলেনমাতা ও স্ত্রীর নাম যথাক্রমে সালেহা খাতুন এবং লুৎফুন্নেসা খান
ব্যক্তিজীবনে রাশেদ খান মেনন ১৯৬৯-এর মে মাসে তার ছাত্র আন্দোলনের সহকর্মী মাগুরো মেয়ে লুৎফুন্নেছা খান বিউটিকে বিয়ে করেনলুৎফুন্নেছা খান বিউটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং এর সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে অবসর নিয়েছেনকন্যা ড. সুবর্ণা খান ক্যান্সার সেলের ওপর পিএইচডি করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরতপুত্র আনিক রাশেদ খান আইনের ছাত্র
শিক্ষা:
প্রবেশিকা: কলেজিয়েট স্কুল, ঢাকা (১৯৫৮); উচ্চ মাধ্যমিক (কলা): ঢাকা কলেজ (১৯৬০); স্নাতক সম্মান (অর্থনীতি): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৩); স্নাতকোত্তর (অর্থনীতি) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৪)
রাজনীতি:
রাশেদ খান মেনন বাষট্টির আয়ুববিরোধী সামরিক শাসন ও শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আসেন১৯৬৩-৬৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) ও ৬৪-৬৭ সালে পূর্বপাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন১৯৬২ সালে নিরাপত্তা আইনে প্রথম কারাবন্দী হওয়ার পর ৬৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ও বিভিন্ন মেয়াদে নিরাপত্তা আইন, দেশরক্ষা আইন ও বিভিন্ন মামলায় কারাবরণ করেন৬৭-৬৯ জেলে থাকাকালীন অবস্থায় তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেনঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন কৃষক সমিতিতে যোগ দেন ও সন্তোষে ঐতিহাসিক কৃষক সম্মেলনের সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন১৯৭০-এর ২২ ফেব্রয়ারি পল্টন ময়দানের জনসভায় স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলাকায়েমের দাবি করায় ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেএরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আত্মগোপনে যানমুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে গিয়ে সব বামপন্থী সংগঠনকে নিয়ে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটিগঠন করে বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে প্রবাসী সরকারের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরে এবং দেশের অভ্যন্তরে কেন্দ্র স্থাপন করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন১৯৭৪-এ ভাসানী ন্যাপ থেকে বেরিয়ে এসে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি) গঠিত হলে তার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হনকিন্তু ১৯৭৮-এ ইউপিপি সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যোগ দিলে রাশেদ খান মেনন ইউপিপি ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গঠন করেন এবং ১৯৭৯ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন১৯৮২ জেনারেল এরশাদ সামরিক শাসন জারি করলে রাশেদ খান মেনন সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাহীর পতন হয়১৯৯১-এর পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাশেদ খান মেনন পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন১৯৯৮ সালে ১১ দল গঠন করে বিভিন্ন জাতীয় ও অর্থনৈতিক, শ্রমজীবী মানুষের ইস্যুতে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলেনএর মধ্যে তেল-গ্যাস-বন্দর জাতীয় সম্পদ রক্ষার জন্য জাতীয় কমিটি গঠন, গ্যাস বিদেশে রপ্তানি ও চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার বিরুদ্ধে ঐ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে দেশব্যাপী লং মার্চ সংগঠিত করে গ্যাস রপ্তানি প্রতিরোধ করেন২০০৮ সালের ডিসেম্বর নির্বাচনে তিনি ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বর্তমান সংসদের তিনি কার্যউপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিএছাড়া সংবিধান সংশোধন সম্পর্কিত বিশেষ কমিটিরও তিনি সদস্য
প্রকাশিত গ্রন্থ:
রাজনীতি : রাশেদ খান মেননের রাজনৈতিক কলাম (১৯৯৮);
রাজনীতির কথকতা (২০০০);
ব্রাত্যজন নয়, নায়কদের ইতিহাস ও অন্যান্য (২০০২);
দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়ন ও সাম্প্রদায়িকতা (২০০২)
পুরস্কার ও স্বীকৃতি:
গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়ার বিদেশিদের দেয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদকে ভূষিত হয়েছেনউত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে এই পদকে ভূষিত করেনবাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা শহরের বাংলা মোটর থেকে মগবাজার মোড় পর্যন্ত সড়কের নামকরণ করা হয়েছে "রাশেদ খান মেনন সড়ক"
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া