ফেরদৌসী হিমু
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: নূর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ভাবনা; সময়ের ব্যস্ত অভিনেত্রী। দুই বছর বয়সে বাবা হাবিবুল ইসলাম
হাবিবের পরিচালনায় জিয়া প্রিন্ট শাড়ির বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করে হয়ে গেলেন
বিজ্ঞাপনের মডেল। বড় হয়ে মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর ‘ফাস্ট ডেট’ নাটকের
মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক। এরপর ‘নট আউট’, ‘কামিং সুন’, ‘রেড ড্রাগন টু
রজনীগন্ধা’, ‘ক্ষণিকালয়’, ‘দেহ রক্ষী’, ‘মাগো তোমার জন্য’সহ অসংখ্য
নাটক-টেলিফিল্ম-ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। এ মুহূর্তে ঈদের জন্য নির্মিত
‘বোঝে না বোকাটা’ নাটকে কাজ করছেন। সম্প্রতি শেষ করলেন ‘পরগাছা’ শিরোনামের
একক নাটক। ভাবনার ভালোলাগা, ব্যস্ততা, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ইত্যাদি নিয়ে কথা
হলো তার সঙ্গে।‘পরগাছা’ নাটকে কি আপনি পরগাছা? মুচকি হেসে ভাবনার উত্তর ‘অনেকটা সেরকমই। কষ্ট করে বড় হতে চায় একটি মেয়ে। এই সংগ্রামে সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় যে যুবককে, সে ঠকায় মেয়েটিকে। একটা সময় খুব অসহায় হয়ে পড়ে সে। এসব নিয়েই নাটক ‘পরগাছা’।’
বাস্তবে কেউ এরকম ঠকালে কী করবেন ভাবনা? এর উত্তর দিতে গিয়ে খানিকটা চিন্তিত হয়ে পড়েন, বলেন, ‘তা অবশ্য ভেবে দেখেনি। যদি ঘটেই, কি আর করা। মেনে নিতে হবে। কিছুই করার নেই।’
সময় যাচ্ছে, বাড়ছে কাজের তালিকা। নামের সঙ্গে অভিনেত্রী বিশেষণটাও যুক্ত হয়ে গেছে। প্রতিদিনকার সিডিউলেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। কিন্তু পরিবর্তন ঘটেনি ভাবনার স্বভাবে। তার মতে ‘অভিনেত্রী হওয়ার আগে যেমন আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খেতাম এখনো তাই। এই তো সেদিন মাথায় স্রেফ একটা ঝুঁটি করে চলে যাই শপিং-এ। আসলে আমি তো আগের ভাবনাই রয়ে গেছি। ভবিষ্যতেও এমনই থাকতে চাই। অভিনেত্রী কারও পুরোপুরি পরিচয় হতে পারে না। অন্য সবার মত আমিও মানুষ।’
মডেলিং বা অভিনয়ের বাইরে ভাবনার আরেকটু গুণ, তিনি ভালো নাচ জানেন। আসছে ঈদে বাংলাভিশনে রয়েছে তার একক নৃত্যানুষ্ঠান। তিনি চান শুধু অভিনয় নয়, তার অন্য সব প্রতিভারও বিকাশ ঘটুক।
সিংহ রাশির মেয়ে সে; রাগটা বেশি হলেও মনে রেখে দেন। খানিকটা চাপা স্বভাবের, আর ধৈর্যশীল। নিজের সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘নিজেকে ওইভাবে হয়তো কখনো বিচার করতে পারব না, তবে আমি মনে হয় একটু বেশি সহ্য করতে পারি। সবার সঙ্গে মানিয়ে চলাটাও আমার স্বভাবেরই অংশ।’ মানিয়ে নেওয়া এই অভিনয় শিল্পীর প্রিয় মানুষটি হলেন, মা। তার মতে ‘বাবাকে ছাড়া চললেও মাকে ছাড়া আমার একেবারেই চলবে না।’
ভাবনার আদর্শ অভিনেত্রী সাদিয়া ইলাম মৌ, সে ওই ছোট্টবেলার কথা। তবে অভিনয়ের একেক ক্ষেত্রে একেকজনকে ভালোলাগে। যেমন, ভাবনার পছন্দ জয়া আহসানের অভিনয়। আবার হলিউডের অড্রে হেপবার্নকে ভালোলাগে। তাছাড়া এসব মানুষের একেকজনের জীবনের ধরণটা আলাদা, তাই ভালোলাগাও বিভিন্ন সময় ভিন্নরকম করে মানুষের কাছে ধরা দেয়। এদিক থেকে ভাবনার মত, ‘যেহেতু ভালোলাগার শেষ নেই। তাই সব ভালোই ভালো লাগে আমার।’
ছোট পর্দার পর, এবার একটু বড় পর্দার কথা জানা যাক। বড় পর্দাই আসলে তার মূল ভাবনা। বিপুল উৎসাহ নিয়েই তিনি বলতে থাকেন, ‘আমার আগ্রহ চলচ্চিত্রে। শুধুমাত্র লাল নীল হলুদ পোস্টার, তেমন সিনেমা করতে চাই না বলেই হয়তো এখনো বড় পর্দায় কিছু করা হচ্ছে না। আর তেমন সিনেমা আমি করতেও চাই না। প্রায় দিনই সিনেমা নিয়ে আলোচনা হয়। সে আলোচনায় থাকেনয় আমার পছন্দের পরিচালকসহ অনেকেই। শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠছে না। তবে আমি আশাবাদী। শেষ পর্যন্ত একটি সিনেমাও যদি করি, তবে এমন একটি সিনেমা করতে চাই, যা বহুদিন দর্শকের কাছে স্মৃতিময় হয়ে থাকবে।’