Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Wednesday 19 March 2014

দুর্নীতির ২ মামলায় খালেদার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

এর আগে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চেয়ে তার আইনজীবীদের করা আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত।
সমকাল প্রতিবেদক
দুর্নীতির ২ মামলায় খালেদার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
বুধবার দুই মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি- ফোকাস বাংলা
জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন নিম্ন আদালত।
 
বুধবারই এর আগে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের করা আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত।
 
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সমকালের জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক ওয়াকিল আহমেদ হিরণ জানান, অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বুধবার দুপুর ১টার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর তিনি ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে যান।
 
শুনানি শুরুর আগেই খালেদা জিয়ার পক্ষে সময় আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করেন। এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করলে এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন বিচারক বাসুদেব রায়।
 
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সমকাল প্রতিবেদক আনোয়ারুল কবীর বাবুল জানান, বিচারক বাসুদেব এজলাস কক্ষ ত্যাগের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেন।
 
তিনি জানান, বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তুমুল হট্টগোলের মাঝে বিচারক বাসুদেব রায় তৃতীয় বারের মতো এজলাস ত্যাগ করে তার খাস কামরায় চলে যান।পরে ৩টা ৪০ মিনিটে পেশকারের মাধ্যমে আদালতে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আগামী ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।এসময় আদালতে উপস্থিত খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, আসামিকে অভিযোগ পড়ে শোনানো ছাড়া কীভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হলো।
 
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিচারকের এজলাসের দুপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। খালেদা জিয়া তখন আদালত প্রাঙ্গণে ছিলেন।
 
খালেদা জিয়ার মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা। মোতায়েন ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচলে শর্তারোপ করা হয়।
 
এদিকে সকাল থেকেই ওই এলাকায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। ভিড় করেন বিএনপি ও তার ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও।
 
দুদকের বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল মঙ্গলবার সমকালকে জানান, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে  ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। দীর্ঘ বিলম্বিত এ মামলা দুটিতে প্রতিবারই হাইকোর্টে সময় চাওয়া হচ্ছে।
 
তিনি জানান, এ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৪১ বার ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১১ বার খালেদা জিয়ার পক্ষে সময় আবেদন করা হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালত খালেদা জিয়াকে হাজির হতে শেষ সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।
 
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, কাজী সলিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। তবে শেষের দু'জন প্রথম থেকেই পলাতক। তারেকের পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দেন।
 
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন— বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী ও তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। তবে হারিছ চৌধুরী এ মামলায় শুরু থেকেই পলাতক। অন্যরা জামিনে আছেন।
 
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
 
২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাটি দায়ের করা হয়। এ মামলায় গত বছর ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। মামলাটিতে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। দুটি মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক হারুনুর রশীদ।