Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Friday 7 March 2014

এক নারীতে সন্তুষ্ট থাকা ক্ষতিকর!

বহুগামী হওয়ার অনেক বিপদ৷ বিশেষ করে মানুষ নামের জীবটির ক্ষেত্রে৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন, এক নারীতে সন্তুষ্ট পুরুষ মাছি বহুগামীদের তুলনায় পিছিয়ে থাকে৷ তাহলে মানুষের বেলা অন্য নিয়ম কেন?

Bildergalerie Tiere des Jahres 2014 Goldschildfliege
বহুগামিতা বা যথেচ্ছ যৌনাচারে এইডস রোগের ঝুঁকি বাড়ে, সমাজে অনাচার ছড়িয়ে পড়ে – এমন শত যুক্তি দেখিয়ে এক নারী বা এক পুরুষে সন্তুষ্ট থাকার পক্ষে কথা বলার মানুষ অনেক বেশি৷ দার্শনিক এবং সমাজবিদদের অধিকাংশই বহুগামিতার বিরোধী৷ কিন্তু এ সব তো মানবসমাজের কথা৷ অন্য প্রাণীদের বেলায়?
অন্য প্রাণী, বিশেষ করে পোষা প্রাণীদের জীবন মানুষই নিয়ন্ত্রণ করে৷ ভালো জাতের গরু থেকে আরো ভালো জাতের গরুর ‘আবাদ' বাড়াতে তাই মানুষই ঘটায় যথা সময়ে গরুর সঙ্গে গরুর মিলন, এবং সেই মিলনের ফলে জন্ম নেয় মানুষের জন্য দরকারি ভালো জাতের বাছুর৷
জার্মানি এবং এমন আরো অনেক দেশে কুকুরের জীবনও নিয়ন্ত্রিত৷ একদিকে মানুষের মাঝে বহুগামিতা এবং তার প্রভাবে সমাজে, পরিবারে অস্থিরতা, পরিবার-প্রথা প্রায় ভেঙে পড়ায় জীবনের এক পর্যায়ে ঘরে ঘরে নেমে আসে হতাশার অন্ধকার; অন্যদিকে কুকুর সমাজে দেখা যায় সুশৃঙ্খল জীবন৷ কুকুর উন্নত খাবার খায়, কুকুর অনেক দেশের দরিদ্র মানুষদের চেয়েও উন্নত জীবনযাপন করে এবং কুকুর যখন-তখন যে কোনো সঙ্গীর সঙ্গে মিলিত হতে পারে না৷ কুকুরের জীবন মানবপরিকল্পিত, সন্তান উৎপাদন হয় মানুষের সিদ্ধান্তে, মালিক ঠিক করেন কোন কুমারী কুকুরের মিলন হবে কোন কুমারের সঙ্গে!
কিন্তু এমন একগামিতা কি শুধুই ভালো? সুইজারল্যান্ডের লোজান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জীববিজ্ঞানী ফলের মাছিদের নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন এর ক্ষতিকর দিকও আছে৷ ব্রায়ান হলিস এবং টাদেউস কাভেস্কি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ড্রোসোফিলা মেলানোগাস্টার প্রজাতির ফলের মাছিদের নিয়ে৷ তিনটি ‘কুমার' এবং ‘কুমারী' মাছিকে একত্রে রেখে শুরু হয় তাঁদের গবেষণা৷ একই সময়ে বহগামী তিনজোড়াকেও রাখা হয়েছিল আলাদা একটা জায়গায়, একসঙ্গে৷ ফলের এই মাছিগুলো দু'সপ্তাহের মতো বাঁচে৷ ছোট্ট জীবন৷ তার মধ্যেও গবেষণার সুবিধার্থে একগামী এবং বহুগামীদের মিলনের জন্য দেয়া হয়েছিল মাত্র দু'দিন৷ দু'দিন পর দ্বিতীয় প্রজন্মের আগমন৷ দুই শ্রেণির দ্বিতীয় প্রজন্মকে নিয়ে আবার শুরু হয় পরীক্ষা৷ এভাবে এক এক করে একশটি প্রজন্ম নিজেদের চোখের সামনে জন্ম দেন লোজান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই গবেষক৷
ব্রায়ান হলিস এবং টাদেউস কাভেস্কি গবেষণা করে দেখেন যে, একগামী পুরুষ মাছিরা সন্তান উৎপাদনে বহুগামীদের মতো সক্ষম নয়৷ বহুগামীরা একগামীদের চেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দেয়৷ শুধু তাই নয়, গবেষণায় দেখা গেছে, একগামীরা যৌনসঙ্গমেও বহুগামীদের চেয়ে শতকরা ৭৫ ভাগ সময় বেশি নেয়৷ দুই বিজ্ঞানীর ফলের মাছি বিষয়ক গবেষণার ফল এবং তার ব্যাখ্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটির একটি জার্নালে৷