Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Saturday 2 November 2013

বাংলাদেশে জঙ্গি অর্থায়নে আরবের ১৮ ব্যাংক, উদ্বিগ্ন ভারত

বাংলাদেশে জঙ্গি অর্থায়নে আরবের ১৮ ব্যাংক, উদ্বিগ্ন ভারত

ঢাকা: বাংলাদেশ জুড়ে মৌলবাদ ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিতে বিপুল বিনিয়োগ করছে আরব বিশ্বের ১৮টি  ইসলামি ব্যাংক। বাংলাদেশর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, তাদের সক্রিয়তাও ততো বাড়ছে বলে উদ্বেগ জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার ।
 
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিবেদন হাতে আসার পরে নয়াদিল্লির উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে। গোটা ঘটনাটির পিছনে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নিজেদের আশঙ্কার কথা শেখ হাসিনা সরকারকেও ঘরোয়া ভাবে জানিয়েছে ভারত।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের জামায়াতপন্থী মৌলবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে বিভিন্ন খাতে ঢালাও ঋণ দিচ্ছে ইসলামি  ব্যাংকগুলো।
ভারতীয় গোয়েন্দারা অনুমান করছেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসের পরিকাঠামো তৈরি এবং অস্ত্র কেনার কাজেই এই অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। সীমান্ত অঞ্চলে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে এই পুঁজি লাগানো হচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে মৌলবাদীদের আর্থিক মদদ দেওয়া ব্যাংকগুলোর অধিকাংশই সৌদি আরবের। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কুয়েত এবং কাতারের কিছু ব্যাংকের কার্যকলাপও খুবই সন্দেহজনক।
প্রতিবেদনে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ (আইবিবিএল) ও সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংককে (এসআইবিএল)।
সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের অনেক প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমের কিছু দেশ প্রচুর ডলার বিনিয়োগ করছে ওই দুটি ব্যাংকে যা ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিস্মিত করেছে ।
সৌদি আরবের আল রাজি ব্যাংকও বাংলাদেশে অর্থ বিনিয়োগে সক্রিয়। আইবিবিএল-এর ৩৭ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় রয়েছে আল রাজি ব্যাংক।
বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র প্রধান শায়ক আব্দুর রহমান এবং তার সহযোগী সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই-ও এক সময়ে পুঁজির জন্য এই ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল ছিল।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকই প্রথম কয়েকটি ইসলামি ব্যাংকের সন্দেহজনক কাজকর্ম লক্ষ করে। সন্দেহভাজন গ্রাহকদের লেনদেন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে তারা বেশ কিছু ব্যাংককে নির্দেশ দেয়। আইন অমান্য করে জঙ্গি সংগঠনকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য এই আইবিবিএল-কে তিনবার জরিমানা করা হয়েছে।
 
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ইসলামি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ইসলামি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘লাজনাত আল-বির আল-ইসলাম, যারা আল কায়দার অন্যতম অর্থদাতা হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশে বর্তমান হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টি নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সাউথ ব্লক। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার সঙ্গেও সম্প্রতি দিল্লিতে এ বিষয়ে কথা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংহের। তবে আমেরিকার সঙ্গে বিশ্লেষণে একমত হতে পারেনি দিল্লি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত জোটের মৌলবাদী রাজনীতি, হেফাজতে ইসলামের উত্থান ও প্রকাশ্য-গোপনে ভারত-বিরোধী প্রচার যথেষ্টই অস্বস্তিতে রেখেছে ভারত সরকারকে।
সাধারন নির্বাচন পর্যন্ত এই অরাজক পরিস্থিতি চলবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত সরকারি চায়, বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। কারণ, সরকার বদলায় কিন্তু পররাষ্ট্র নীতির অভিমুখ একই থাকে। কিন্তু ভারতের আশঙ্কা, মৌলবাদী রাজনীতির উত্থানে নির্বাচনের আগে ও পরে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভারতীয় ভূখণ্ডে চলে আসতে পারেন।
তা ছাড়া চলতি অরাজক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে হুজি এবং জেএমবি-র মতো জঙ্গি সংগঠনের উত্থানও নয়াদিল্লির উদ্বেগের বিষয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, বাংলাদেশে মৌলবাদী রাজনীতি এবং অস্থিরতা বাড়লে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। আইএসআই যে পরিস্থিতির সুবিধা নিতে পারে।