‘এ ক্যামন বিচার, ক্যামন রাজনীতি’
রোগী নিয়ে আসা একটি মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ
রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ফরিদপুর শহরের আরোগ্য সদন প্রাইভেট
হাসপাতালের পশ্চিম পাশের গলিতে এই ঘটনা ঘটে।
মাইক্রোবাসটির মালিক ও চালক গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার পারুরিয়া গ্রামের এমদাদুল শেখ (২০)।
এমদাদুল প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আমি
মরণাপন্ন বৃদ্ধ এক রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। হাসপাতালের পাশের গলিতে
মাইক্রোবাস থামিয়ে রোগীকে পৌঁছে দিতে হাসপাতালে ঢুকি। মাত্র ১৫ মিনিটের
ব্যবধান। পৌনে সাতটার দিকে গলিতে এসে দেখি আমার গাড়িটি দাউ দাউ করে
জ্বলছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত
চার-পাঁচজন ছেলে এসে পেট্রল ঢেলে মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেন। এলাকাবাসী
প্রথমে বালু দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
এসে আগুন নেভান। ততক্ষণে গাড়ির সিটসহ ভেতরের মূল্যবান জিনিস পুড়ে গেছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আর্তনাদ করছেন এমদাদুল। মাথা চাপড়ে
বলছিলেন, ‘এ ক্যামন বিচার, এ ক্যামন রাজনীতি। আমি তো হরতালের মধ্যে গাড়ি
বের করি নাই। তাহলে কেন আমার গাড়িতে আগুন দেওয়া হলো।’
একটু শান্ত হয়ে এমদাদুল জানান, তাঁরা পাঁচ ভাই ও দুই বোন। তিনি অষ্টম
শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। আগে রিকশা-ভ্যান চালাতেন। ছয় মাস আগে ঋণ
করে সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে মাইক্রোবাসটি কিনেছেন। বাবা কৃষিকাজ করেন।
তাঁকে একটু সাহায্য করার এবং সংসারের আর্থিক সংকট দূর করতেই মাইক্রোবাসটি
কেনা। কিন্তু দুই রাজনৈতিক দলের দর-কষাকষির বলি হতে হল এই দরিদ্র পরিবারের
সাধের সম্বলটি।
কান্না আর আর্তনাদের সঙ্গে এমদাদুল বার বার বলছিলেন, ‘আমি এহন ক্যামায়
কী করব।’ কিন্তু তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ভাষা এ সময় উপস্থিত কারও
ছিল না।