Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Friday 8 November 2013

সচিবসভায় প্রশাসন সচল রাখার নির্দেশ সচিবদের নির্বাচনমুখী নির্দেশনা


আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা করবেন সচিবেরা। সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো ধরনের সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক না কেন, সে জন্যও প্রস্তুত রয়েছেন প্রশাসনের শীর্ষ ওই কর্মকর্তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত সচিবসভার বৈঠকে এসব কথা বলা হয়।
সভায় নির্বাচনের বিষয়ে সচিবদের বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। নির্বাচনকালীন সরকারের সময়ে যাতে প্রশাসন সচল থাকে, সে জন্যও সচিবদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সচিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলোচনায় তাঁরা বলেন, সরকার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। প্রশাসন কখনো নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে না। কেউ না কেউ সরকার পরিচালনা করবে। তাই এই সময়ে যেন প্রশাসনে কোনো ধরনের শিথিলতা বা স্থবিরতা দেখা না দেয়, সে জন্য সচিবদের সজাগ থাকতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন সরকারের সময়ে আইনশৃঙ্খলা যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য আগে থেকেই প্রশাসনকে অবস্থা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলা হয় ওই বৈঠকে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে সচিবদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘কী ধরনের সরকারব্যবস্থা’ সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়, নির্বাচনকালীন যে মন্ত্রিসভা থাকবে, তাঁদের নির্দেশমতোই তাঁরা কাজ করবেন। সরকারের ধারাবাহিকতায় যাতে শূন্যতা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে যাতে কোনো ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।’—এ বিষয়টি সচিবদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সভায় সচিবদের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন এবং তখন মন্ত্রিসভার আকার কেমন হবে, তা জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার আকার যা-ই হোক না কেন, সেটা বড় কথা নয়, ছোট হলেও অসুবিধা নেই। তখন একজন মন্ত্রী একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। আর নির্বাচনকালীন সরকার সর্বদলীয়, একদলীয়, নাকি বহুদলীয়, সেটা রাজনীতিবিদদের বিষয়। নির্বাহী বিভাগের কাজ হবে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পুরো সভার বেশির ভাগ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল নির্বাচন ও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে।
সভায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাদিক জানান, এবার প্রায় ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র হবে। আর এখন পর্যন্ত প্রায় নয় কোটি ২০ লাখ ভোটার আছেন। হয়তো এটা কিছু বাড়তে পারে। এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াই নির্বাচনী কাজে ছয় থেকে সাত লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করা নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।
সভায় মন্ত্রিসভার বাস্তবায়ন সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বেশির ভাগ সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। খুব বেশি কাজ ঝুলে নেই। যে কয়েকটি আইন বেশি প্রয়োজন, সেগুলোও সংসদের চলতি অধিবেশনে হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সভায় কিছু গণমাধ্যমে সচিবদের নিয়ে কুৎসা রটনা, ফাইল গোছানোর তথ্য, শেষ সময়ে বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন প্রতিবেদনের সমালোচনা করা হয়। তাঁরা বলেন, এসব মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।
সভায় শেষ সময়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে সভায় ৫৪ জন সচিব উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে অন্তত ২০ জন সচিব বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের সময়ে গতকাল ১৫তম সচিবসভা অনুষ্ঠিত হলো। এর মধ্যে ছয়টি সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।