Boxed Style

আইফোন জিতে ক্লিক করুন

Friday 8 November 2013

পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী

আগামী রোববারের মধ্যেই বর্তমান মহাজোট সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। ইতিমধ্যে চার থেকে পাঁচজন মন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত বুধবার রাতে প্রথম পদত্যাগপত্র জমা দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম। দুই-এক দিনের মধ্যে দেবেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী গতকাল প্রথম আলোকে জানান, বর্তমান মন্ত্রিসভার ৫২ সদস্যের অধিকাংশই ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রীলঙ্কা সফরের আগে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। তবে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে নিশ্চিতভাবে থাকবেন—এমন তিন-চারজন মন্ত্রী পদত্যাগ নাও করতে পারেন।
জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। অন্যরাও জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘সরকারপ্রধান চেয়েছেন সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে। আমারটা আমি জমা দিয়ে রেখেছি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন।’
পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরও পদে বহাল আছেন জানিয়ে এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদত্যাগপত্রগুলো রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপনের আগ পর্যন্ত সবাই পদে বহাল থাকবে।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেই তাঁর পদ শূন্য বলে বিবেচিত হবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন না বলে তাঁর উপদেষ্টাদের পদ থাকছে। জানতে চাইলে একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলে যেকোনো সময় উপদেষ্টাকে বাদ দিতে পারেন। কিন্তু তাঁদের এখনো পদত্যাগ করতে বলেননি প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর ছয়জন উপদেষ্টা রয়েছেন।
একজন মন্ত্রী গতকাল প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা সাদা কাগজে হাতে লেখা পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন। তবে ওই পত্রে কবে থেকে পদত্যাগ করছেন—তা উল্লেখ করছেন না। এ জন্যই জমা দিলেই পদ শূন্য হবে না। প্রধানমন্ত্রী যেদিন পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করবেন, সেদিনই তা কার্যকর হবে।
জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে মন্ত্রীদের পদত্যাগের যে কথা শোনা যাচ্ছে, এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন। এর জন্য সাংবিধানিক কোনো বিধান নেই। তাঁরা পদত্যাগ না করলেও সাংবিধানিকভাবে কোনো সমস্যা নেই।
আকবর আলি খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে অন্যরা পদত্যাগ না করলেও পদ শূন্য হয়ে যাবে। আর প্রধানমন্ত্রী বহাল থেকে কারও পদত্যাগ ও নতুন কাউকে অন্তর্ভুক্ত করাকে মন্ত্রিসভার পুনর্গঠন বলা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিলেও যাঁদের নির্বাচনকালীন ছোট মন্ত্রিসভায় রাখা হবে না, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের পদত্যাগপত্রগুলোই কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবেন।
জানতে চাইলে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আজই প্রধানমন্ত্রীকে পেলে দিয়ে দেব। নতুবা রোববার পদত্যাগপত্র দেব।’
একটি সূত্র জানায়, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে দিয়ে অন্য একজন মন্ত্রীর পদত্যাগপত্রের অনুলিপি সংগ্রহ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখনই বলবেন তখনই জমা দিয়ে দেব।’ মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তো মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে কী বলা হয়েছে আমি জানি।’